পোস্টগুলি

2024 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

তার লেখা

স্বপ্নের চেয়ে জেগে ওঠা বড় রহস্যময়  কড়িশাদা ভোরে দেখি জীবন ফুটে ওঠে  আপনমুগ্ধ রাতকে ছেড়ে আসি, আলোক।  অন্ধকার বসন তোমার ছেড়ে যাও স্নানে  যে সুর ভেসে আসে, আর তারার কোরাসে লাগে কেন জানি কীরকম জ্যোৎস্নাব্যবহার!   পলাশ রেণুর মত ছড়িয়ে পড়ে ভাষা  নিশ্বাসে নীল ফুল ফোটে আর লেখাতে চায়  প্রহর, আর দিন, আর রাত। যেন মায়ের গন্ধ হাসিতে ফোটাতে চায় ছোট্ট শিশু,  অথবা রংধনু ভালোবেসে আঁকা প্রচ্ছদে রিতিমার কবিতার বই। টিপ ঝলমলে  এ সকালে আদিম মদিরাঘ্রাণ, রিতিমা ...  কবিতার বই খুলি, লেখা আছে দেখি স্পষ্ট  'ব্যথাকে জানো, রক্তিম -  তার রঙ ধূসর,   কারো চোখে আমার সমাধি দেখো' 

রাজা কাঁদে

তিতিরের নাচ যেন শেষ পারানি যেন এ মৈত্রী থাকে মরণের পরও  আলোপ আলোর আভা ভেসে ওঠে  গাঢ় হাসির প্রপাত থেকে স্নেহ ডেকে আনি  তৃণাদ বাছুর চোখে জল অম্লান দ্বীপাকার এই ভূমি হরিত পাবন  বিনতার চোখে যেন ধান অগণন  গ্রিনরুম থেকে আসে হাসি আর গান  হাসি-গান মৈত্রীর জীবন নাটকে  কালিক ব্যাথারা মরে মৃত্যু ত্রপায়  সহিষ্ণু মানুষের মিলন মেলায়  অযথাই রাজা কাঁদে শূন্য ফটকে 

প্রদাহ

নিদম জ্বলন সে যে বোঝে না যে কেউ  আধ-আধ কথা তার শিশু ভাবো তারে  কেউ ভাবে এই গাঁথা আহা প্রোন্নত  জয়ত্রী ঘ্রাণ এসে বুকে ঝরে পড়ে   বন বানীরের কাঁটা গুল্ম লতায়  এ পূজন প্রার্থীকে বানায় পূজক,   স্বপ্ন শব্দচাষ ঢাকাই মসলিন --   আমি ও আমরা হই তার ক্রীড়নক  পথিকৃৎ কারা এই নীল জোছনার  এইখানে মৃগনাভি ঘনঘোর বন  মালী তো দেয় না ঘ্রাণ ঐ লেবুঘাসে  আমি কার কে তোমার তারার বুনন   সুখ দেহি মায়া তুমি কার কাছে যাবে  বর্তুল সংসারে তুমি ঘুরেফিরে দেখ  কালসাপ বিষে আছে সংসার বিরাগী  প্রেরণার কাছে আছে কবিতাপ্রদাহ 

Rendition - 10

আর ফুল কেনা হয় না আমার, কত চাওয়া প্রতিদিন জমিয়েছি বুকে! কিছুটা হাস্যকর কিছু তার পাথর হয়ে ভারী হয়ে আছে। তবু আজ আমার চোখের দিকে কেঁদে গেল যেই রাস্তায় ফুল বিক্রেতা মেয়ে-- ভাবি, একবার তার চাওয়ার কাছে দীক্ষা নিতে যাই। *  I wish I could feel the love in my heart every day, but I don't buy flowers anymore! Something amusing, or something that feels like a boulder in my chest. But the girl who sells flowers on the street grieved after seeing my eyes ... I think I want to go to her to receive initiation from her needs.  

Rendition - 1

পুষ্প বিমর্ষ কিনা বোঝা দায়। সে যখন বিমর্ষ হয় তখন তার মরে যাবার সময়। ওটা মন খারাপ কিছু নয়, শেষ যাত্রার চিহ্ন। মনে রেখো, কোনো কোনো কবিরও আছে পুষ্পধর্ম। * It is unclear whether the flower is unhappy. When melancholy strikes, flowers perish. Instead of a terrible feeling, it signals the end. There are poets.

Rendition - 2

তবে আর কার কাছে যাবো? এবার বলেছি আমি তৃণ হই, মাটির গহনে তুমি মিশে যাও শেকড়ের মতো। তোমাকে গোপন কর, আর যদি সম্মুখে দাঁড়াও আবারো বলব - অই কাঞ্চনজংঘার সূর্যোদয়, তুমি কী দীপ্তি ছড়িয়েছো টিপে! মানুষের প্রিয় ঋতু জানতে চাইবে - কেমন আদরডাকে ঐ ঠোঁটে বাঁশি বাজিয়েছো কৃষ্ণকিশোর! এরকম সব প্রশ্নের কাছে পড়ে আছো জলে লেখা নাম এক উদাসীন মালা। তোমারও কি কেউ নেই? তবে আর কার কাছে যাবো! * Therefore, where should I go after that? As I have already said, I'll turn into grass, and you will enter like a root in the soil. Hide yourself, and if you stand in front of me, I will tell you again: oh, sunrise of Kanchanjangha, what light you spread from the tip of your forehead! People's favourite season will want to know - how you played the flute on your lips, Krishnakishore! All these queries with your name written in water make you look like you're wearing a careless garland. I thought you had someone. Then where should I go?

Rendition - 3

চোখে জাগে সূর্যমুখী ঠোঁটে ফোটে নরম বকুল, এরকম মেয়েবেলা বাজনায় ভরা ছিলো তার। আজ এতদিন পরে তার ঘরে অস্পষ্ট মন্দিরা শুনি, দেখি তার মুখ এক বিষণ্ন আয়না আর তাতে আমারি আদিম চোখ। * Her eyes reflected sunflowers, her lips were gentle, and her girlhood was full of music. Today, after so long, I hear the obscure cymbals in her room and see her face as a dismal mirror reflecting my primaeval eyes.

Rendition - 4

কেন আমায় অরণ্য চেনালে রাত্রি করে আসে... চেনা পথের স্বস্তি কেটে গেলে মোহের মতো অরণ্য দেখালে ধ্রুবতারা নিঃস্ব করে হাসে রাত্রি করে আসে শুধু রাত্রি করে আসে ------- Why did you acquaint me with the forest? Dusk approaches… The once-familiar path becomes impassable The woodland you've shown me is like an illusion Pole Star chuckles and makes me down and out Night comes silently… Night falls

Rendition - 5

Rendition - 5 * আমার মুগ্ধতা নিয়ে যাও জ্যোতির্ময়, নিয়ে যাও হৃদয়ের লোকসঙ্গীত শ্রাবণের মতো চারু মাস নিয়ে যাও। আমি কোথায় থাকি দেখে যাও সরল বাছুর কোলে করে ... * Take my charm, luminous star And the folk melody of my heart Take comely month of Shravan. Look where I live Carrying a tender calf...

শক্তি সমীপে

মেঘলা অশ্বত্থের এই সন্ধ্যায় একটু আগে বৃষ্টি এলো মাধুরীময় কবির জলস্তব্ধ চোখ আর তাঁর বৃষ্টি না মানা চুলের রমণীরা গায়  কারু খিলানের ঘরে সুরচিরনিশা যে কবি বলেছেন, শব্দ হাতে পেলেই আমি খরচা করে ফেলি, তিনি এখন বসে আছেন এইখানে, এই বিষণ্ণ রেল স্টেশনে। গাছেরা তাঁর কাছে আজ নীরবতা শিখছে। বর্ণের কেরোসিনরেখা  থেকে শব্দের চুপ ছায়াপাত আর মাতাল খুশিতে আঁকা অ্যান্ড্রোমিডা তুমি প্রীত হতে শেখনি, লিখেছ- অঙ্গুরী তোর হিরণ্যজল... মেঘলা প্রোজ্জ্বল

Rendition - 9

অন্ধকারে যত নিভে যাই সূতো ছিড়ে গড়ায় পলাশ পাহাড়েই বাড়ি ছিল জানি অন্ধ বালিকা নাম- 'আলো' অন্ধকারে লেগেছিলো ভালো পাহাড়ে মালার মতো আলো * As long as I'm in the dark Palash falls down tearing its yarn I knew her house was in the mountains Blind girl 'Alo' Liked her in the dark  Akin to a beacon in the mountains

Rendition - 8

Rendition - 8  সবাইকে সব খুলে দিতে নেই। অনাথ একতারার কাছে রেখো মাঝে মাঝে গোটানো আঙুল। একটি খরগোশের পিঠের স্পর্শ তুলে রেখো হিমক্লান্ত আকাঙ্খার মুখজুড়ে। নিসর্গের স্নানে যে ঝর্না- পাথরের পলাতকা জল ধরে রাখে, তাকে ভালোবেসো। একটি নির্জন বাঁশিতে দেখ মাধবের প্রেম অবারিত ময়ূর পাখায় বিচ্ছুরিত। সেই সুর আর গানে স্বর্গ শিকারি কেউ জ্বালিয়ে দিতে চায় অন্ধকারের মুখ। সবাইকে সবকিছু দিতে নেই। কারো জন্য গোপনে একটি গান রেখো। *** Not everything needs to be opened. Sometimes, keep your fingers together to an orphan ektara. Lift the touch of a rabbit's back to the face of frostbitten desire. Adore the fountain that captures the escaping water within the stones of nature's spa. See Madhav's love spreading like a peacock's wings as it flies on a lonely flute. In that tune, the hunter of heaven wants to burn the face of darkness. You don't have to give everything to everyone. Give someone the gift of a hidden melody.

Rendition - 7

Rendition - 7 * লংড্রাইভ, পিছিয়ে যাচ্ছে পথ এগিয়ে আসছে অচিন এই পরিযান বাঁক নিচ্ছে ক্রমশ সমুদ্রে অথবা কিছু উশখুশে আর ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে দহনের মধ্যাহ্ন খুব এগিয়ে আসছে বীচ, একদল হিপ্পি মেয়ে। *** It's a long drive; the route goes behind The unknown emerges This trip involves a maritime journey or anything fun And this blazing noon is falling behind The beach is coming forward A gathering of hippy girls.

Rendition - 6

Rendition - 6  আজ অনেক দিন পর হাতে বেলফুল নিয়ে বিকেল আমার কাছে এলো। শিশুর মত জড়িয়ে ধরে বললো- এমন হরিৎ ছুটির দিন, সবাইকে ডাকো, চল মাঠে চল। অথবা পিয়াইনের তীর থেকে তার তীব্র স্রোতে ছুঁড়ে মারো সকল রোদন। জলে ডুবে গেলে সূর্য শিশুর কারুকাজ আমরা আবার ফিরে যাবো যার যার নিজস্ব ক্ষয়ে। তার আগে আয় বন্ধু, খেলা করি, দোয়েল পাখায় উড়িয়ে দেই সেইসব প্রক্সির দিন... বন্ধু আমায় নিবি না? ***  After what seemed like an eternity, the afternoon finally arrived today, clutching a blossom from a Wood Apple tree.  It hugged me like a child and said,  "Green holiday, call everyone, let's go to the pitch."  Or throw all the weeping from the bank of the Piayen into its strong stream.  When the Sunchild's crafts go down in the water, we will return to our own decay.  Hey, buddy, how about we play and soar over those proxy days like  Magpie-robin ... won't you take me, my friend? 

হাওয়ার প্লেয়ার

কান্ত মানুষ লাগে গানে  লাগে তার গলার শীরীন  এই ধোঁয়ার জড়িমা সন্ধ্যায়  রুপোর নোরার হাত নাচে  এই অবগাঢ় অন্ধকার  উদাসিতা পরোয়াবিহীন  চিকে ঝিলিক দেয়া আলো  হেলে যাওয়া সিঁথির টোপর  ফিনফিনে হেমন্ত সন্ধ্যায়  আমৃত্যু অপেক্ষারা নীরব  গন্ধর্ব সুর তোলে হাওয়ার প্লেয়ার  তার গানে জালিয়ারা কাজ ভোলে  শব্দরা ছুটি নেয়... গান কথা বলে 

খুনি

  একটাও নীল হরিণ নাই  একটাও আকাশী গন্ধরাজ?  তেমন একটাও রক্তাভ নদী নাই  এই শত কোটি বছরের  খুনী পৃথিবীতে ! 

আঁধারের ভ্রুকুটিতে ভয় নাই

এই ঘুগনিদানা বিকেল আজ বন্ধু হল বেশ  তৃণপাটি বিছিয়ে বসতে দিল আর দিল গান  আজ আহেরিয়ায় মেতেছে ডান্ডিয়া, ঝুম নাচ।    লোটন খোঁপার ছন্দে রাত নেমেছে দেখ, আঁধার  নয়, ঘুম নয়, এই বাজনার তালে  ফুলকাটা কাঁচুলি সব লুট করে নিতে চায় প্রাচীন পৃথিবী।  বালিকার কাছে আদর এসেছে যেন মায়ের চুমুর পর। এই স্নেহ লুণ্ঠনে রূপ নেয়ার আগে  আমি ফিরে আসি। ভাবি, এ শুধু সুন্দর-ই নয়  এ সপ্ততন্ত্রী বীণার টান, কবিরের সংগীত--   এর  প্রাখর্য  রক্তাভাআলো। এর সরলতা  ফিঙে পাখির ওড়া- এই গওহর, মনুষ্য মন।  যারা আজ যূপকাঠ জ্বালিয়ে দিয়ে বলছে- এসো    হিংলাজ যাত্রায় গাইছে...  কতদূর আর কতদূর 

বেতফল

কবিতা মানেই সেতু। চিত্র নীরব, কবিতা তার বলা কবিতা মানে বনিতার চোখের জল জলছবির সারল্য বেতফল বলেছিল জীবনানন্দ যেখানে শব্দের প্রয়োগ অর্থপূর্ণ যেখানে প্রান্তরের পার থেকে হাওয়া আসে আঁধার আলোর মত হয় এই আরাধনাশীল জীবন থেকে চোখ পাতি চিত্রাহরিণে কারু খচিত আকাশে দেখি গার্গীর শাড়ি পরশুরামের নেয়া ক্ষত্রিয় রক্ত আর তাঁর আবির্ভাবের কথা মনে করে আস্তিন গুটিয়ে চলি কার্ট্রিজে ভরে নেই বুলেট তবু এই রাত্তিরে ভাবি ছায়া তার অস্তিত্বের জন্য আলোর কাছে ঋণী কর্ম ছুটিতে যায় গান ভেসে আসে কবিতা নলবনে হাওয়ায় ভেসে আসে

বৃষ্টি ও পাপ

দেখ স্বর্গ এ দুনিয়ায়  ছুটে শুধু আসতে চায়  বলে স্থান দিওগো আমায়   মুক্তাকে বের করে আনো  অদ্ভুতকে প্রকাশ্যে জানো  সব যেন অর্থ  খুঁজে পায়  ক্ষমা যে তোমার হাতে  এই ঐশী ক্ষমার রাতে  লাবণ্যরেখা ঘেরো মন  দেখো মানুষ জ্যান্ত পোড়ে  এই পৃথিবীর চক্করে  দয়াবারি ইচ্ছে এখন  তুমি নত হও, শোনো   জলধারা নতমুখী মানো  পড় মাহমুদ দারবিশ  ফুল কাঁটার ওপরই হাসে  জল পিপাসাকে ভালোবাসে  এই স্নেহে কবিতা লিখিস   দেখ একটি নিভৃত পিন অহং সে প্রতিদিন  রক্ত ঝরে রক্ত ঝরে পরে  আমি চাই বৃষ্টি ও পাপ  একসাথে থাকুক আলাপ  একসাথে যেন বাস করে        

মিউজিক

গালিব বলে, ফুলেরা কানে শিশিরের তুলো গুঁজে রেখেছে তাই সে বুলবুলের গান শোনে না, অ্যাবস্ট্রাক্ট মোটিফ প্রিন্টের মত   গান আসলে নীরবতা থেকে বের হয়ে আসা শব্দ  শব্দরা  থেমে যায় যেখানে, সুর সেখানে কথা বলে  এই সময়ে, এই প্রায়ান্ধ দিনে  দক্ষিণেশ্বর পেড়িয়ে এই বেলুর মঠের নির্জনতায় মনে হয়  তোমাকে আমি গানের কাছে রেখেছি  জাদুর অন্যরূপে তুলেছি তোমাকে  বিরানতা ঘিরে ধরেছে   ঘূর্ণিস্রোতে মেতে উঠেছে ফুটে ওঠার ডাক, বলছে  -  সুরের সাথে থাকো

কারিগর

জানালার ছায়া শোনে রাংতার কথা  অনস্তিত্বে যে শান্তি আছে তা এই শরীরে কোথায়, তবে এ শরীরে কবিতা আছে। গানের হনন কথার  প্রয়োজন নেই কারণ সংসারীরা  আর গান শোনে না। আমি দু-জগত হত  আমার দোহার তোলে-  এই করিমের মরণ বাকি হইলো না অধর ধরা এভাবেই সব ধানের দোলের গান  শোনো ছায়াকর,  তোমার শরীর ঘেঁষে  যে  উপপথ চলে গেছে ঝুলনযাত্রায়-   যে কোঠাবাড়ির তুরানি মেয়েরা নেচেছিল,  ঝড়জলে নেমেছিল আয়নার কারিগর তাকে বলি, যাত্রা শেষ, এবার দেখাও  জ্যোতিঃপথ, পরিক্রমণ করি তোমাকে 

কবিতা

কবিতার নীল শামিয়ানা দিয়ে ঢেকে দেয়া যায়  গ্রীবার কালো দাগ কবিতা খোঁজে তার দিল হকদার  এইযে দিন চলে গেলো  তুমি রাত্রি দিও, কোনও কালো রেখোনা আড়াল  অন্ধকার-গান তুমি শোনো ...  ফ্যালকন উড়ে যায় সমুদ্র আকাশ  তারা বলে,  পৃথিবীতে অচেনা সৈকত বলে কিছু নেই  ব্রতচারী কবি লেখে আদিম মানবহীন নগরীর কথা  তার কালি আর দূর্বার রঙ এক  সাজবদল হলেও সে রঙ গভীর  যৌনতা  অথবা তার চেয়ে বাসি ইচ্ছারা  কবিতার মতো রেখা দেখে হেসে উঠে বলে,- মূর্ত 

বৃক্ষ হও ভাষাহীন কথা বল রাত্রির মতো

ট্রেনের হুইস্যালে দুনিয়ার ছন্দ শোনা যায়  মার্মা হাওরে ঘোরে বাতাসের শিস একটানা  এই স্লেট-অন্ধকার ছড়িয়েছে নিরকার দূর  মানুষ মুহূর্তে সুন্দর হতে পারে রাত্রি পারে কি  রেইনবো লরেকিটের মতো ডাকে অন্ধকার  দেখা কর, একটি দেখায় রাত্রি পর্দা খুলে ফেল  দেখাও স্পর্ধার ক্ষতমুখ, যে এখনো দাঁড়িয়ে  এ অহং থেকে মুক্তি দাও ব্যথা দাও ছন্দ দাও   যেদিকে দৃষ্টি দাও আমিই অতীত, পৃষ্ঠা খোলো  এ জীবনের পাঁচ লাইন লিম্যারেক শেষে  পড়ে দেখো আড়ালে লুকোবে স্নেহ, দেখবে না তাকে  যদিও জাগ্রতের ব্যথা বেশি তবু এই দিনরাত  জেগে দেখি তৃতীয় সংসার এক বলে ওঠে  বলে, বৃক্ষ হও ভাষাহীন কথা বল রাত্রির মতো 

যে ডোবে সে-ই হয় পার

অহং ছেড়েছি শোনো বেকারার কবিতার কথা সুখী এক ঢেউ দাও এ দীর্ঘ নদীপথ যাত্রায় হালকা নীলাভ রঙ তাকে আকাশী ডাকে আকাশ  ঋভু তুমি  জানো এ রঙের আদিঅন্ত জানো ব্যথা জানো  স্বর্ণ-খনির ঘা আর তা থেকে মানুষের ভ্রুনঘাতী ইতিহাস,  এ মনুষ্য জীবন কদাকার আমরা সবাই জালজীবী জাল থেকেই আহার এ ছায়াপথ মৃত্যু তাড়িত তার বাঁক খুব দ্রুত  আমাদের বিসর্পিত প্রেম এই পথে থেমে যায় এই পশমিনা জীবন-চাদর এই তীব্র শীত ঘড়ির দোলনকাল মনে রেখে রেখে চলা তবু মারুতির প্রিয় বন আর নদীর সাঁতার, যে ডোবে সে-ই হয় পার আর আমি চোখের পাতায় ঢাকি এ প্রাণন, কেননা চোখের ট্র্যাজিক ভাষা অপাঠ্য

শঙ্খ

এই পলাশের লাল জেনো বসন্ত পার্বণী এই হলুদাভ দিন জ্বলজ্বলে দুপুরের রোদ  গুজিয়া হাতে বাসন্তী মেয়েদের ফেরা  ক্লোন করা মুখ ক্ষীণ কটি নির্জনে আসে  পপলিনে মিহি হাওয়া তার সাথে নির্জনা সে  আকাশপ্রদীপ জ্বলে উপশম আছে কিনা বলো  চরণচিহ্ন সমস্ত গিয়েছে দূর উত্তর এই জ্বলজ্বলে রোদে ফিরে এসো  শীতনিদ্রা কিছু ভালো নয় মনের বাহক  ধুলো হই তৃণ হয়ে জন্মাবো বলে অথবা  হাওয়া হই নিঃশ্বাসে। তুমি কষ্ট তুলো না  শুধু নারী হও, আরতির লয়ে নাচুক আদর  যতদিন যায় এ নেশা দিক পাল্টায় তবু  লক্ষ্যে সে স্থির, আরতি বেলায়  তোমার  সুচারু স্তনজোড়া কাঁপতে থাকে  আমি ভাবি, কখন? আবার কখন পাবো  সময়ের দেখা, দুটি আইভরি বলে ঠোঁটে ইচ্ছেমত কামড়ে খাওয়া বাডস অফ হার ব্রেস্ট        

চিহ্ন

মানুষ মানুষকে টানে এ টানই তো শেষ কথা রোগ পোষে মন, মন চাওয়া শেষঘুম ছাড়া ফ্রেশ স্পাইশড পমফ্রেট আর সিন্যামেন, ব্যান্সন থেকে টান আসে শেষ শ্বাষহারা আজ রাত তড়িতের অরূপ রূপের ওংকার নাচে কথক সংগম- সে বর্ষার নদী বুকভরা বনে বনে ঘুরে জেনেছি, আসলে সে ভিন রঙ চেনা সারগামে বনের ঝিরির সে ধারা সে বনে রাত্রি, বাইশ ফ্যান্টাসি অফুরান এই ভূমিরূপে আমিতো দেখেছি স্নেহবন আর কিছু নয় দেখি নেশা আর তুমি ভুল সিন্যামেন মদে মেশে কুয়াশায় তার মন হাত ছুঁলো না যে ঐ আঁচলের রূপকথা পলকে হারাবো মানুষী যখন মন দেবে সাথে কেউ নেই আর তো একটি নীল তারা মানুষ যেখানে গাড়বে চিহ্ন- ছাপ রবে।

লিসবন

যুদ্ধতাবুর পাশে, আসে এমনি একেকটি কথা  যে আগুনে ইস্পাত যেই তাপে সৃজনের ব্যথা    বনে পেগান মেলায় যাই কূট বিরোধ থামাই   এক বিন্দু মদিরার চোখ দেখে বলি ব্যথা নাই  ব্যথা নাই মনে যেন লিসবন উপাসনাগার  সে শহরে  গলফগ্রীন সে হরিত লেগেছে আমার  কে তোমায় ভিন নামে চেনে, দিতে চায় দেনা  একাকী যেমন ভ্রূণশিশু যার মা'র মন চেনা  গীতিকবিতার গান যেই আসে মায়ের গলায়  কে আবার তার মাঝে  জ্যোৎস্নার কান্না মেশায়  পুরোনোতে মাতি আমি  দর্দকে চাই এক নজর শাশ্বত কুমারীর  কবিতার নিবিড় ছন্দ এ  শহর  ভ্রমর আক্রান্ত কথা পথের পাশের বিজ্ঞাপন  লেখা আছে পৃথিবীর পুরোনো শহর লিসবন    

মানুষ

চুলের পাগল পথে হেঁটে এসে দাঁড়িয়েছি রাত  স্বাতী তারার  মতো স্থির দেখছো তুমি এ ভ্রমণ  দীর্ঘ কাজল টানের অর্থ কী যদি সে ঠোঁটে না বসে  নিরন্নের কাছে তবু আছে কবিতার কসমস  সে আয়ুবন্ধন থেকে মুক্তি দিয়ে বেঁধেছে মনডোর ওই এক বিন্নিধানের ক্ষেত তার রঙ তুই এই প্রান্তর নিরন্নের কাছে অর্থহীন কাঁদে   জুড়িগাড়ির দুই শাদা ঘোড়ায় ছুটে চলে ঈশ্বর  হরিণ শিশুদের উপত্যকা লুপ্ত হয়ে যায়  গুপ্ত ট্রেঞ্চ থেকে উঠে আসে শিকারীর রাইফেল  বটবৃক্ষে  বসন্ত বৌরি  এক বসে আছে স্থির  সবুজ পর্ণী মা তাকে পাতার আড়াল করে, মায়া ...  এই সংসার মায়াকানন এক, এখানে নিদ্রা আছে  আছে পিকাসোর 'দ্যা ওল্ড গিটারিস্ট', আছে স্ক্যান্ডাল         

অতসী

তোমার কাছে একটি আশীর্বাদ চাইতে ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সে প্রার্থনার ভাষা আমার জানা ছিলো না এই দ্রুত হাঁটা তোমার জন্যে কিন্তু এই আপাত সুখের নয়টি অক্ষরকেই যদি জীবনের প্রেসাশ ওয়ান-লাইনার মনে কর তবে আর নিজদের বুঝে ওঠা কোথায়! এই যে প্রেম কী অভিনয় আমাদের... ভালোবাসার কথা বলা ছাড়া বিশ্বাস এক ভরসার নাম যার উঠোনে চিন্তার কোনও স্থান নেই দেখনা মাতৃ হৃদয় শিশুর হাসিতে উজ্জ্বল শিশুর কান্নায় সে কারণ খুঁজতে ব্যস্ত ক্ষমতাধর হলে কী হোতো জানা নেই কিন্তু ঘৃণা ব্যাপারটা নিজেকে সান্ত্বনা দেয় কষ্ট বা খুশির ঘটনার আগেই ওসবের চিহ্ন আমাদের মাথায় ফুটে ওঠে আর যারা বনাশ্রয়ী তারা জানে সব সাম্য প্রতিষ্ঠার মন্ত্র তোমার কাছে একটি আশীর্বাদ চাইতে ইচ্ছে ছিল, ভবিষ্যৎ কবিতার জন্য আমার জংগলের অন্ধ কোনে ফুটে থাকা অতসীর মতো অলিখিত শব্দদের খুঁজে পেতে ইচ্ছে করে

নিষেধ

প্রাণোপম, তোমার আভার উপমা কৃষ্ণপক্ষ জুড়ে বারবার উঁকি দেয়, হারায় আবার। চন্দন ফুল আর গন্ধশালি ধান নিয়ে তোমার এ আরতি, শঙ্খিনী নারীর দোলপূর্ণিমা এই কৃষ্ণপক্ষ জুড়ে। আমি বিশ্বামিত্র নই, তুমি কি মেনকা? তুমি কি ধ্রুপদী উর্দু গজল, তার স্নেহতান কথা? নাকি তুমি বিষয়বিরাগী কেউ, অষ্টপ্রহর শুধু দৃশ্যের কথা বল। ময়ূর নৌকায় এই পৃথিবীর তিন ভাগ ঘোরো, প্রলুব্ধ  করো বাল্মীকিকে যেন উনি সীতার মৃত্যু না লেখেন।যেন কেউ যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ না করে, দশমীর বিদায়ী ঢাক শোনে না যেন কেউ।  

গজল চলছে মিহি'র ঘুমের ঘরে

জানালা থেকে মিহি'র বাড়ি দেখা যায়। দেখা মানে, ওলে ক্লিঞ্জার ধোয়া চোখেমুখে  মিহিকে দেখা অথবা মোনব্লান আফটার শেভ এর সাইট্রাস স্মেলে আমার ক্লিন শেভ। এই ভোরে  নৈর্ঋত  লক্ষ করে ছুটে চলেছে দেখি এক অগ্নিচিল। কোনও পাখি অতো উঁচুতে ওড়ে না, যদি সে নিজের পাখায় ওড়ে। কিন্তু এ অগ্নিচিল উড়ছে দেখি, কারণ সে জানে কোনও উচ্চতার মুখেমুখে মাপ জানতে নেই। তাকে জানতে হলে তার শিখরে উড়ে বস, তারপরই দেখবে সে তেমন কিছু উঁচু নয়।  হার্ট নিডস বিট।  ঐ পাহাড়ের বাড়িতে মিহিকে দেখে আমি ওকথাই ভাবলাম। আর আমি মিহি-তে মগ্ন হলাম, যেমন সে ঘুমে নেমে আসে ধীরে, তারপর হঠাতই ঢলে পড়ে। তারপরও সে আধোচোখে তাকিয়ে দেখতে থাকে ভবিষ্যৎ। তার চোখ যেনো ইটালির গ্রান প্যারাডিসো পর্বতের তুষার ঢালে আলো মাতাল। ভ্রু তার সূর্যাস্তের দিকে ক্রমশ উড়ে চলা  স্কারলেট ম্যাকাও , আর তার হাসি একটি সক্ষম তরুণীর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আগামী ভবিষ্যতের চিহ্ন। তার চোখ থেকে নিক্ষিপ্ত হয় আমার করা সারিসারি টিউলিপের বাগানে অজস্র তীরের ফলা। আর একটি একটি করে টিউলিপ রক্তাভ হয়ে ওঠে। পাহাড়ের ঘরে মার্বেল সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসি, আমি জানি সেগুণের ডালে  এ ...

এতো সুর এতো গান

এই নার্গিস জংগলে হিম শীতকালে ঘুরতে এসেছি আমি বুদ্ধ কি ঈশ্বর তনয়, নাহয় এতটা প্রবুদ্ধ সুন্দর! স্বর্গের পঞ্চবৃক্ষ এ পুষ্প জংগল থেকে দূরবন, তুমি দোয়েলের ঘর উড়িয়ে কী সুখ বলো বুদ্ধের অন্তর? এইতো দিনের মতো আলো জ্বালিয়ে বলি আমি তোমাকেই চাই কামনায় প্রাণায়াম খুঁজিনাতো আমি সুর সানাইয়ে বাজাই চাঁদমারি চোখে দেখো এর ছায়া ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে এই বাউলিয়া বাঁকে তীর্থজল ছেটাও তুমি গান কর মন সন্ন্যাস ছড়াও তুমি হাওয়া মেঘ নদী ঘাস কাশফুল জানে নীল নীল সন্ধ্যা ভুলে যাওয়ার পর যার চোখেতে প্রাণন সে রূপ নিয়ে দূর চলে আমি ডাকি শুনে যাও প্রসন্ন দোলা বেঁচে থাকাদের ভিড়ে, সনখ কথায় বলি মনে রেখো এ হারার খেলা রাতে শিবজাগ্রত মুখে যেই করি ক্ষীণতোয়া নদীকে প্রণাম মায়ের কানের দুল ভেসে আসে তলানিতে আঁধার প্রমাণ মা হারা সেই দুল তুলে আমি মর্মব্যথা তোমাকে দিলাম প্রেমগান গাও তুমি সুধাগলা শরীরে তোমার ভোর-স্নান নিখিলের সুরে যেন আজ মায়া ঝরে যায় তান আসমানী আকাশের নীলিমায় বালিহাঁস উড়ে যায়- সে সুরের আমি All reactio

জীবন

হঠাৎ তাদের মিছিল এলো  সেই মিছিলে তড়িৎ জ্বলা মিছিল থেকে কোরাস তালে  প্রত্যেকেরই কথা বলা  কথা বলা নিজের সাথে  সবার সাথে কথা বলা  বলতে বলতে একটা কথার  সূর্য প্রখর আলো জ্বলা একদিন এই মিছিল থেকে  দিন থেমে যায় হরিণ বনে  বনের যত গাছের পাতায়  ঝিলিক দেখো আলোর স্নানে  হরিণ বনে আর কিছু নেই  সবুজ শখার হাতটি ছাড়া আর কিছু নেই তার কি তবে মিথ্যা মিথ্যা মাথা নাড়া মাথা নেড়ে হাওয়ায় ছায়ায়  সে যে আমার শান্তিদাতা  মিছিল থেকে বনে এলে  এমন জাগে নীরবতা  কেমন যেন পদ্য শুরু  মিছিল থেকে তরুণ আলো  এখন কেন বনে সে যে  দৃষ্টিতে শ্যাম তরু নিলো   আগুন সবুজ মিশিয়ে চলি  দিন গেলে দিন যখন খুঁজি  প্রতিবাদের সুরটি কেবল  তারুণ্যেতেই মেলে, বুঝি       

এই নীল মণিহার

আমি তেমন রাগ করিনি কোথায় আছো  এই বিকেলে কোট বাড়িতে একাই আছি  খোলা হাওয়ার সুর কেটে যায় এমনতর  গান গেয়েছো সে সুর বাজে পাল তুলেছি  পাল তুলেছি তিতাস হাওয়া মেঘ করেছে  এই আঁধারে ভোরটি নামার একটু আগে  অনুভবে তুমিই ছিলে ফজর আতর  ঘুমের মতো, ঐ নামটা আমার লাগে  অনুরাগের একটা কথা নিজে জ্বলা  এই বাঁশিসুর কম শোনা যায় অন্ধকারে এই আঁধারের রঙ দেখো না কত কালো  ছেড়ে যাওয়া দিন গুলোতে মেশায় তারে  প্রেম যদি না আঘাতপ্রবণ লাভ কী তাতে  একটা জীবন দিন গুজরান এমনতর    ঘুমের মতো, ঐ নামটা আমার লাগে  জাগলে পরে আমায় তুমি জড়িয়ে ধর  এ পাগলামির শীর্ষে তাকে ভালোবাসো   এ পৃথিবীর চক্রান্তে তোমায় পাওয়া  গিটার নীলে নীল মণিহার সুর তুলেছি   গান গাইছি যেই গানটি তোমার গাওয়া 

কুর্চি আর আমার জীবন

দিনের মায়ার ছন্দে আসলো আবার সন্ধে মন নাচে আনন্দে কুর্চি ফুলের গন্ধে কুর্চি ফুলের 'শোনো' ডাক সন্ধ্যা হাওয়ায় হারিয়ে যাক গলার স্বরে মন্ত্র থাক বৃষ্টি তাকে বাঁচিয়ে রাখ সত্যি কথার পদ্যে কারো মনের মধ্যে এই ছড়া আবদ্ধে খিড়কি খুলি শুদ্ধে কুর্চি মেয়ে শ্বেত মাতাল খুব সকালে মিস্টি গাল না বুঝে তার চোখের চাল শক্তি কবি খুব মাতাল জীবন এক গ্রন্থাগার এত গ্রন্থ চারিধার সাঁঝে পড়ি বারবার ছোট্ট জীবন এ আমার ছোট্ট জীবন এই খোঁজে একটানা দুই চোখ বুজে বদলে গেলে খুব নিজে কুর্চির ঐ গান বাজে

আই কুইট

যে আগুন নিভে গেছে তার আলোর মতো কথা বল্   আয় করি সহোদোরের মতো হাসাহাসি  এখন অন্ধকার  মেঘের গম্ভীর ডাক শোন্ অর্জুন তার মসৃণ এবং ধূসর বাকলের মাঝে যে নিরাময় রাখে তার কথা বল্  এমন সব কথা বল্ যা পৃথিবীর দেয়ালে লেখা রবে  আমি সেই পুরোহিত যার মন্ত্র কেড়ে নেয়া হয়েছে  সকালের গন্ধের কাছে আমার অনেক ঋণ   চুপ পাতার অন্তরে যে বাতাস খেলা করে  নীল রাস্নার বাগানে যে হাওয়া ফুলের নরম রেণু নিয়ে উড়ে যায়  সে হাওয়ার নাম মৃত্যু  মৃত্যু জীবনের চেয়ে সহজ  সন্ধ্যা নদীর মতো চোখ তার  বলি --  তুমি আমাকে নিতে পারবে না- আই কুইট  তোমরা বরং মৃত শিশিরশরীর খোঁজো ঘাসের ডগায়  এই গ্রাসল্যান্ড আমার এ সৌভাগ্য অবিশ্বাস্য  তৃণভূমি হেসে বলে --  সবুজ হয়ে যা, মিলি চল  

সিথেরীয়া

বিটপীর রঙের ক্রোটন আর্টগ্যালারীতে দেখি হঠাৎ রঙ নিয়ে খেলা বড় সহজ নয় ইতিহাস ব্রোঞ্জের মূর্তির একদৃষ্টে চেয়ে থাকা একটি সবুজ পিট ভাইপার এসবই দেখি আমি গ্যালারীতে দেখি জ্ঞানতরুর ছায়া কেমন মগ্ন হয়ে আছে রেখায় টানে এ যেন কবিতাপুরীতে স্থিরচিত্র সব সিথেরীয়া, সমুদ্রের নীচে প্রাণের খেলার মতো সুন্দর তুমি আজ আমাকে ডেকেছো এ রঙের কবিতায় শিখে নিতে আলতার কাজ আমাকে দিয়েছো সূর্যবীজ দেখে নিতে এ কলার শুদ্ধ ব্যাকরণ আমি এক মন্ত্র নিবিড় পুরোহিত রাত একটায় মন্দিরের ঘুম দেখে চলে যাই রাত কবর দেখি কবরের মাটির গন্ধের মতো স্মরণীয় তোমার এ চারুসাজের ধূপ লাস্যময় তোমার চিত্রে দৃষ্টিপীযূষ পান করি যেন আমি দীর্ঘায়ু হই

দিওয়ানে পরোয়ানে

ঠাকুরনগর থেকে রাতকবি বিনয়ের কথা দুয়ারী-কথন বড় বেদনার কুসুমের ব্যথা এই রাতে বাসন্তী শাড়ি তুই মেলে যতো দিবি রাতজ্বলা দীপধারী অষ্টমী শারদকে পাবি এই অশ্রুতে যদি থাকে গাঢ় কোনো টান গানের শেষ পারানির সুর তুই গেয়েছিস এ প্রাণের আজ একটি পাখির শিষ শোন তুই, ও অন্তর মৃত মানুষের হাততোলা এই রাত- বৃষ্টি অঝর এদিকে রাত্রি কাটে, আসে এক কুয়াশার দিন আহত অন্ধ ভোরে নিদ্রামগ্ন চোখতারা হীন তোকে না দেখে তো আলো জহর নিয়ে ফিরে যায় অম্বুরি ঘ্রাণের প্রেম মিশেছেরে আহত আশায় মনুষ্য জীবনের একা আসা যাওয়ারে দিওয়ানে মনিহারি সন্ধ্যার আলো যদি নাচে পরোয়ানে তুই মানে আমি আর আমি মানে দোদুল জীবন আমি মানে তুই আর তুই মানে স্থবির মরণ

বাঁশি বাজে তার সুর ভোলে না আমারে

সে নিজেও জীবন যেন শুধু ক্রন্দন গ্রামধর্মে প্রেম, নিভু নিভু লন্ঠন মৃত্যু হবে - মনে রবে এই বোঝা তার ময়ূরের রাতনীলে এই সংসার এ বয়সে যে গান মনে আসে ভোরে মৃত্যু নেই সেই সুরে মুক্তা বৃষ্টি ঝরে এই জল সংসার রাঢ়বঙ্গে আছে মথুরার রাজমণি গোকুলের কাছে দ্বিত্বয় জীবন তার প্রেম, রাজনীতি প্রজ্ঞান লিখিত আছে স্পষ্ট নিরুক্তি সোনা দেহে লাগেনা যে সে মধ্যমণি নন্দেরও নন্দন বাজে শ্যাম শ্যাম ধ্বনি শিশুকালে মায়া সে করেছিলো পান সে মায়া ঝরছে আজো মাতৃ সমান বিরজার জলে চলে ভাব জুয়াচোর স্বর্গ নাই মর্ত্য নাই, নাই নাই ভোর কাঁদেরে জীবন এই রাত বিস্তারে বাঁশি বাজে তার সুর ভোলে না আমারে

স্নেহ

গহন গহন বন  সেই বনে বানপ্রস্থ অধিবাস মনে পড়ে মনে পড়ে ঠাকুরদালান  মনে পড়ে মুক্তির গান  তরুমর্মরে সুর ওঠে, কোন হাওয়া গান মনে করে থির নয়না তুমি  সে আঁখিতে দেশোয়ালি সাজ মনে পড়ে রুসুমাত মনে পড়ে পঞ্চালে প্রাচীন যমুনা বাস করে নদীও কি সুপ্রাচীন  নাকি নদী নিত্য নতুন  সে তো এক দানগান  ছন্দ দীক্ষাগুরু আজো তো ফেরে নাই ঘরে  আজো রক্তবীজের ঝাড়  তুমি-আমি একাকার পঞ্চালে স্নেহ বাস করে 

দূর

এসব পঙক্তি লিখি শিশুর খাতায় সনেট তাড়িয়ে চলি ঘাসনৌকায় সে যাপন তীরভাঙ্গা নদী সে তো মা মাগো তুই জেনে নিস কে গান মাতায় শিয়রেতে মন্দির আর নামগান লয় নিয়ে ভেসে আসে তবু অশ্রুধারা ঠোঁটে আসে সেই নাম শুধু ঠোঁটে আসে মনতরু হাওয়া আনে জীবনের ফেরা স্মৃতিহীন আজ মেখে বহু রাতরঙ অভিমান করে আর নেয় যে সুদূর কন্যাকাল আলোরাতে মিটিমিটি জ্বলে আপ্তদূতীরা গায় মালগুডি সুর সব ঘর খেলাঘর, নয় এতো জানা জোনাকির গুঞ্জন, আলো নেভে জ্বলে কমলযোনির ফুল ফুটে আছে নির্ভুল সেই ফুল ফুটে আছে দূর বিন্ধ্যাচলে

রাই

তুমি কি মোছ না রাই, চোখ এ নিদ্রা থেকে জাগালে কেন? কুলা থেকে শুভ্রশাদা চাল রঙ ঝরে চক্ষু তারায় জাগে গোধূলি রঙের মতো ঘরে ফেরা বনের রঙের মতো হরিৎ বিস্ময় সুরা সুপেয় নয় কিন্তু এ আচরণে প্রেমপ্রদর্শক চোখ তার প্রবাল-পান্না বুক তার ওপ্যাল-টোপ্যাস পায়ে তার মেনোকার নাচনূপুর তার প্রাঞ্জলতা, হেলেনিক ভাঁজ, তার চোখমণি উপচে পড়া রক্তে মেরুন গ্লাস তুমি কি মোছ না চোখ, রাই ? শরীরে রূপান্তরে তুমি রুপালি ছাই ঘাসে ঘাসে হরিৎ রয়েছি আমি ঐ সন্ধ্যতনু, আমি যেন ঐ হাতে আয়না হয়ে রই

প্রস্থান

অনন্তে আমারে নিও আমার প্লাবন চোখের কোটরে এ জীবন রেখেছি এই শেরপা যাত্রায় তোমাকে দেখিয়েছি উদয়প্রয়াস গিয়েছি বিষ্ণুপুর বালুচর গ্রাম চরকায় সুতো ছিঁড়ে গেলে হয় না যে বালুচরি শাড়ি অনন্তে আমারে নিও আমার প্লাবন এই ঝিনুক আভার ভোর দীপের মত ফুল দিয়ে এই মাতৃপূজা শেষে ছেড়ে যাই মায়া গ্রামবাড়ি জাফরিকাটা জানালা থেকে হাত নাড়ে মা বলে, সোনা-চাঁদি তারা আবার আসিস পেয়ে অনন্ত ইশারা Like Comment Share

জন্ম

জানি গলা শুনলেই মনুষ্যবসতি চেনা যায়   কৃত্তিকা নক্ষত্রের মতো আমি স্থির মানুষ দেখি  ব্যাঘ্রাস্য মুখ, সাথে দীপ্ত মিছিলের মুখ, নিরীহ  সংসারী মুখ দেখি আমি। এ সমস্ত চরণচারী রক্তমার্গ ধরে হেঁটে যায়, কোনো যুদ্ধবাদ্য নাই  নাই কোনো কৃতাভিষেক, তারা পাঠ করে বিচিত্রা  ভাস্বতী তারার কাছে প্রশ্ন করি, জন্মই আমার  আজন্ম পাপ! যদুপতি বলেন, এই কান্তারে  কোনো তুকতাক চলে না, শবর-শবরী তোমরা  তাক কর তীর, আর বোলো না আমি আছি কী নেই  তাক কর, এবার নিক্ষেপ কর, বিদ্ধ কর ঘুঘু  ত্রপা ত্যাগ কর রক্ষিত্রী নারী, মায়া ছিন্ন কর  পুরুষ, যুদ্ধ কর ভোগ কর তৃপ্ত হও। নচেৎ বলবে কীভাবে? জন্ম যুদ্ধের, জন্ম ত্যাগের প্রেম   

জল ও আগুনের মাঝে

জল ও আগুনের মাঝে কে প্রিয়?  সত্য তখন আসে হাত রাখে আমার কপালে বলে, কাজল ভিখারি দূরে থাকো মাঝপদ্মার মতো দূর জোড়াদীঘির সিমেন্টের ঘাট যেখানে ছুটির ঘুমদুপুরে আমি একা বসে থাকি, আর কথা বলি প্রাচীন অশ্বত্থের সাথে সেদিনের কথা বলি  যেদিন শ্রাবণ তার ধারা দিয়ে মুছে দিয়েছিলো কান্নার দাগ  যেদিন নৃসিংহের রূপ ধরে এসেছিলো  আত্মতুল্য তীর্থংকর তাঁর উচ্চারণ জবুথবু ঘুমকে তাড়িয়ে দিয়েছিলো  উচ্চারিত হয়েছিলো-- সিঁদুর - পুণ্য সর্প - ভয়াল বুদ্ধ তুমি, চিরন্তন বৃষ্টিস্নাত বোধিবৃক্ষ দেখেছি ত্রিবেণীর ঢেউ জমিদার বাড়ির মর্মর সিঁড়ি বেয়ে সামনে কচি ঘাসের লন, সাঁতারপুকুর আমি দেখেছি  ব্লু ডি শ্যানেলের ধুন্দুমার গন্ধে মাতাল পার্টি  কোনার্ক সূর্য মন্দিরে, রোশনচৌকি থেকে ধ্বনি আসে  প্রমিত কথার মতো স্পষ্ট --- জল ও আগুনের মাঝে তুমি প্রিয়

আমরা এক

সংহিত সেই বাণী ঘেরা মন  রাতে আকাশে তাকায় ঘুম চায়  ঘুম আকাশের দিকে ছুটে যায়  ঘুম একটি তারা অবুঝ আলো   এই খেলার শেষে জীবনগান   তন্দ্রার মতো এই কানে বাজে  তারপর সূর্য ওঠে শ্রম জাগে   তবে শ্রমের মূল্য মেলে না আর  সংসার তারই মূল্য হারায়  থাকে দিনলিপি থাকে অভিশাপ  থাকে সন্তান আগামীর টান  থাকে দস্তুর আয় ব্যয় শূন্যতা  চশমার ঘোলা কাচে অভিজ্ঞরা  বলছে আমাকে, লেখো কিছু লেখো  আমি বলেছি সুকান্ত নই আমি  সংহিত সেই বাণী আমাকে দাও  প্রতি মে দিবসের গানে গানে হেনরীর হাতুড়ির আওয়াজ   হেনরীর কচি ফুল মেয়েটি আমাদের সন্তান, তাকে ডাকো  বল মেয়ে, আমরা এক---    মানুষ