পোস্টগুলি

2012 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

হুইসপারস...

১ = হে প্রিয়তম ছায়া এই পত্রমেদুরতায়, শাখার আঁচলে ঢাকো তুমি প্লাবন ফেরত পাখি ২ = রেণু ওড়ার দিন আসছে, ফুল ৩ = মূর্ত হও আতপস্নানে অশ্রুরাগ রঙধনু শূন্যতার অহংকার বড়- শোন জলজ বাতাস, আজ আকাশ আঁক ৪ = তারানীল খুশির মিছিল চলে ভোর; তোমাদের শুভনাম জানতাম জুড়ে রবে প্রস্থান পথে। ৫ = বন্ধুরাত কৃষ্ণপক্ষ জুড়ে বেড়িয়ে গেল আমার ঘর আমি তার মুখ দেখেছি সুদর্শন কৃষ্ণনীল কাজল ভরা চোখ নিয়ে এই খাঁ খাঁ আঙ্গিনায় জ্বেলে গেছে সে সকরুণ অন্ধ গোলাপ ৬ = উড়ছে অশনি চোখের পলক থেকে শায়কের ফুল আঘাতের কাছাকাছি আমি ৭ = পিছু ফিরে দেখ রাস্তা ঘুমিয়ে গেছে জানি, কোনদিন কারো তুমি ঘুম ভাঙ্গনি ৮ = আর দেখ মেঘচেতনা থেকে উন্মোচিত হল অশ্রু ও আঁচল প্রিয় সন্ধান ৯ = বান বিমুখ নদী বিয়োগের নাম ১০ = ফুলদানী .......... এসো, ধারণ করি। যদিও ভঙ্গুর তবু কেউ আমাকে ছোঁবে না সুন্দর ভয়ে। তবে নিষ্পাপ শিশু হলে ভিন্নকথা তার নাম দিয়ে দেব অভিমান। ১১ = সন্ধ্যানদীর পার, তুমি জান নাই কত দীর্ঘ সে বসে থাকা- একটি প্লাবন তৃষ্ণা তোমার ভাঙ্গন ১২ = সিঁদুর রেখার পথ ধরে, জ্যোৎস্না জড়িয়ে ধরি তোরে ১৩ = মন যাপন হোল না, হায় এইদিকে সখীর হৃদয় কুসুম কোমল ১৪ = অলিন্দ থেকে বে...

কাব্যরাগ-অশ্রুরাগ

তীব্র দংশনে বারেবার মরে যেতে এসো হে মধুসুন্দরসঞ্চয়, ক্লিওপেট্রা! এ আমার রক্তময় উৎসর্গ, এ আমাদের সিদ্ধপিঠ; বালুচরি ঝিলমিলে মুক্তামহলে যাও আগরের বন ধরে ধরে । এই দেখ মায়ান ক্যালেন্ডার নিয়ে কত শোরগোল, মামুলি উছিলাতেই শ্মশানবৈরাগ্য পেয়ে বসে, হায় হৃদয়বৃত্তি আমার! আজন্ম অনুবিদ্ধ হয়ে আছে হীরে আর বিষ, চোখে ও মগজে। চক্ষুতে চিরনীহার, কর্ণে মোৎজার্ট- আরও আরও দীর্ঘ সন্নিধির হাহাকার... সমগ্র অয়নমণ্ডল ঘুরে ঘুরে মরে যেতে এসো এইখানে তুমি সন্দীপক- একটুকু রাত্রিপ্রভা। শব্দবোধিবৃক্ষের ছায়া কখনও আপন নয়। না-বলা কথারা সুবর্ণ ক্রন্দন- জল এক নৈঃশব্দ্যের ভাষা। তবু এইসব কুহুকথা সেই এক অরূপ সন্তুরবাদিনীর আঙ্গুলপরাগে ঝরে পড়ে, সেই এক চিত-চোর বিঁধিয়ে দেয় খামাজের খঞ্জর, নেশার ইয়ার দেয় চন্দ্রকোহল। আর বিজলি খেলে দপ করে নিভে যায় আমাদের চেনা পথ, বাজলাগা গাছ দেখি বকুলের। দীর্ঘ ধীর কান্নার আওয়াজে বোঝা যায় এসে গেছে কবিতার বাড়ি। মরণ অবধি কাঁদে কবিতার মেয়ে

আদিপাঠ

চিতার নখরে শাবক ছোঁয়ার ক্রন্দন বিঁধিয়ে দিয়েছ- 'সুন্দর' মোহঅন্ধকার, এক রূপডালির মোহর, ঝুমুরের দলে চলে গেছে। প্রতিবার হারানো বাড়ির মোড়- মোহের দু'চোখ মণিময় একটি পুষ্পবাণ মূর্ছার নীল নীল কোল একটি নীলকমল জড়োয়ার কুমকুম দিন, আয়না খচিত মুখে অনন্ত দর্শন জানি। এ আকাশ ভেসে গেছে সিঁদুর সিঁদুর তোমার বিভূতি তুমি, আর কেউ নয় পদ্মরাগ কিছু মেঘবর্ণা জল হে নীলাঞ্জন  তবু রূপ লাগি, চোখে নিও ছায়া হয়ো- সুন্দর তুমি সবথেকে পুরাতন রাজমণিকার, কাল কাল প্রতিজ্ঞ তুমি- এখনও তো দাও নাই দাও নাই কিছু !

সায়ংকৃত্য

হারানো নগরীর ছবি দেখে হেসে ওঠো বৃদ্ধ মৎস শিকারী। ভুলে যাও পাতা ফাঁদ, আততায়ীর হেঁচকা টান। এবং শেষপর্যন্ত নিজেকে। জানি তোমারও চোখ ভিজে ওঠে পুরনো ফিলিপস রেডিও, যেইখানে শোনা যেত সাইক্লোন সংকেত, অনুরোধের আসর। হারানো বাসস্থান দূর বড়দূর-- আর তো তোমার কাছে নেই। হতে পারে পেট্রা অথবা পানাম নগর। ভরদুপুরে ঘর অন্ধকার করে শুয়ে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছ অজ্ঞেয় সন্ধানী; দিকভ্রান্তপ্রহর- ত্রসরেণু ত্রসরেণু... এত নীল নীলকণ্ঠ, এত এত বিষ! তবু জীবন জেগে থাকে স্পর্ধার জীবন, লুপ্ত মনার্কির সুবর্ণ প্রবেশদ্বারে গোধূলি আলোর মত জীবন। জেনো, মৎস শিকারী অথবা সুলতান, বৃদ্ধদের কোন শ্রেণীবিভাগ নেই। জীবন জুড়ে বেড়ে উঠেছ তুমি। হেসে দাও। কারণ চিন্তা আর যাপনের অকারণ ফূর্তি বিহীন দিগন্তখোলা ভাবনার এই সায়াহ্ন ধীর, বৃদ্ধ সেতারবাদকের সুরের মত টানটান।

প্রত্নজ্ঞান

ধারাময়ী, বর্ষার অবয়ব মানায় তোমাকে, মহাকাল তা জানে। সেই থেকে যে অরণ্য আর তার ক্যানপির মায়াবিথার, তার প্রতীতি দিয়ে যাও। আমাদের মার্গ অভিন্ন, আর তা চলে গেছে ভুয়ো সব যাজ্ঞিকের স্পর্শ ছাড়াই জলঝুমুরের চার্বাক পথে। শিশির ভুল করেছিল পুষ্পলজ্জা এনে। হ্যাঁ, শিশির এক অনুষঙ্গ- লীনতা, রাত্রির ওডিকোলন। হাসির শিমুল দিয়ে রক্ত মুছে ফেলা যায় অথবা ঠিক এরকম জেনে জেনে নেয়া যায় যে, সমস্ত শিশুডাক এবং চোখ হারানো কোকিলদের সহ আমাদের সমস্ত কথা মিলে যে ঘুমপিয়ানোর রাতিগান, মূলত তা-ই আমাদের আরাধনা শেখায়।

দূরলেখা

নয়না আমি কি একটা সাঁওতালী চোখের লাল গোধূলি পেরিয়ে যাচ্ছি?  আজ রাতে ঘুমবো না। ঘুমাবে না পাহাড়িবিনোদ। এই দেখ্, যত শহুরে হুইস্কির ফায ঝেড়ে ফেলছি। আয় রাত্রি দীঘল ছায়া, আয় মহুয়া-- মহুয়া। চোখ রেখে এসেছি নয়নার কাছে, রেখে এসেছি ঝর্নার দিন। একবার তাকে এক কীর্তনীয়ার কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম, যে পথে ভাসান, সেই নদীপথ নিয়ে গান আছে, আছে ধূমল স্বরলিপি। চক্ষুর কাছে আছে রাত্রি পুরাণ, নিদ্রাঘোর লাগে যেন কীর্তনীয়া- গাও...। চেতনা থেকে উড়ে গেছে রোদের বাবুই। এখন হিম কুঠুরিতে কিছু গুটিসুটি রাত। আমি রেশম রাতের কাছে মুখ লুকিয়েছি। রেখায় রেখায় মোমের চিবুক তার। তাকে বলি, মিনতীর মত বাজো কালো রাত্রিবাতাস। সবাই ঘুমিয়ে গেছে নয়না, আর আমি একটা পড়ে থাকা বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে দেখলাম মেঘ, ময়ূর, শাদাগাভী, সুচিত্রা আকাশ-পাতাল। তবু কেউ জাগেনি এখনও। পুরনো খাতা খুলে দেখেছি শেষ পার, পুরনো খাতা খুলে দেখেছি নয়না, শব্দরা নিদ্রাকর। ধূসরআঁক প্রান্তরেখা থেকে সরিয়ে এনেছি চোখ। নিজেকে দেখেছি আমি রাত্রিমুখী, প্রতিফলিত। আমি তোকে বলেছিলাম, আবার যদি দেখা হয়... ধূপ জড়ানো থাক,  সন্ধ্যা গন্ধ থাক, কিছু তো থাক চিনে নেওয়ার ঘ্রাণ। একদিন ...

ডাকমন্তর

রেখাগণিতের পথ ধরে এখন মিলিয়ে নেয়া দুই প্রান্তভূমি। চারুবাসের সংসার। একদিন হাওয়া ছুটেছিল তার বজরার পালে সপ্তদ্বীপ, অবিশ্রাম চক্রভ্রমণ; তার পাল থেকে এখন থিতিয়ে আসে অশ্বঘুঙুর আর আনে বনঘন শ্যামলীর অনন্ত শয়ন। প্রীতিকন্যার নাম জমে অশ্রু, অশ্রু তার প্রস্ফুটিত পান্না। তার রত্ন সিন্দুক থেকে একে একে বেরিয়ে আসে কাজললতা, বেলোয়ারি চুড়ি, চিক্কণ আড়বাঁশি। মশলা বণিকের কাছে আজ অন্যকিছু ঘ্রাণ, দারুচিনি ঘুম।

বাকি কথা

আমাদের আরো কিছু দেখতে বাকি যেমন, রোদের হরফ থেকে কার হাতে উড়ে বসে গয়নার চিল। শীতের মলিকিউল খেয়ে কীভাবে ভূমিষ্ট হয় পুষ্পশিশু। আরো আরো জানতে বাকি পাখিপুরাণ, বৃক্ষদের হরস্কোপ। পিতামহের আঙ্গুল থেকে আদর্শলিপির সেই চারুকথাদের অক্ষরও বলে যেন আরো আরো পথ- পল্লী আর পল্লবীর। কবিতার মিনিয়েচার হাতে তুলে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখতে বাকি পুনরায় শোক অথবা জয়ের হাজারদুয়ারী। আহ বিমোহ, ফিরে আয়! ........................... নভেম্বর ৮, ২০১২

অনুকবিতা

১ = হরিৎ বাসনা উড়িয়েছে শরৎবালা আমি তার নয়নবিন্দু ছুঁয়ে প্রাণ নিয়েছি প্রাণ এ আমার নিখিলজীবন; তার ঠোঁটের শিরীন নিয়ে চলে যাব উদ্ভাসী নবান্নের দিকে ২ = অরণ্য থেকে মশগুল নৈঃশব্দ্য এনে ফেলে রেখেছিলাম অন্দরে মিডনাইট ব্ল্যাক প্রচ্ছদে একটা বিমূর্ত পেইন্টিং বেডরুমের দেয়ালে, তার দিকে চেয়ে চেয়ে শোনা অজস্র সোনালী ঘোড়ার চিঁহি আবার তাড়াচ্ছে এই দেখ শব্দের যুদ্ধবাগান। ৩ = সন্ধ্যের ওপাড়ে বসে আছ ঘুম জড়ানো পাখি করতল থেকে ছড়িয়ে দিচ্ছি সোনামুগ ঝিরিজল এই দেখ; পাখনায় ভোর ঢালো, শঙ্খবুকে ভরে তোল সা-নি-ধা’র শ্বাস। হাত বাড়িয়ে আছি আর চোখ মেলে বাঁচি পাখি আর কত নির্জনা জানালায় ! ৪ = নিশার মত জুড়ে আছে গহনের গান। হে মৌনময়, পুষ্পখেলা ভুল ছিল তবু অতুল গন্ধ ছিল চারপাশে, দহনের দানে ছিল নতমুখী বেলা। ৫ = এখন জানি অপেক্ষার কারণ... এক লতার কারুকাজ বিকেল আজ তারই মত নম্র; জ্বলে ওঠা রোদ নিভিয়ে আসে নতমুখ লালইট বাড়ির কিনার। এখন জানি কোন্ আগের সকালে শিউলিরা ফোটে নাই কেন  ... ৬ = অসুখ করেছে বলেছে নীল ফুল রাত্রি রেখেছে ধরে মুখে গাঢ় রাত তারে দেখব বলে ভোর করেছি চোখ তার অসুখ করেছ...

চুপকথারা...

{১} ওরকম বেলা ছিল প্রথার বিরোধ ওরকম চুপচাপ বসা, যেন কোন কথা নেই আর। বালিঘড়ি শিরশির বালি, পলাতকা আলো পড়ে পায়ের ঘুঙুর তার কারুছবি আলোর মোহর। হাওয়াকেও বলা ছিল উড়ানের ছন্দ পড়ার; সন্ধ্যার কথা নিয়ে বসে ছিল-- যেন কোন কথা নেই আর {২} বিরুদ্ধ চিন্তা শুধু জল ভাবে, সেতু নয়- নৌকোর অপেক্ষা তবু ভাল; জাল ছুঁড়ে মার তবু জলে থাকি শিকারগন্ধী মাছ {৩} কত শীত এসে কেঁদে গেল তবু ঘুম এলো না, সুপর্ণা {৪} কুয়াশা-আয়না বড় বেমানান মনে হলে- চোখ থেকে হৃদয় অবধি সড়কে সে আর যায় না। পুষ্পপ্রবণ মন ফাগুনে আগুন ছোঁয় শীত পোহাতে আসে না। {৫} সবুজ টেনিস বল হয়ে আছি শারাপোভা ছুঁড়ে দাও আলোরেখা অন্ধ মাতাল এইস- কে ফেরায়, দেখি। {৬} মায়া সাইরেন, কতভোর বাজে! এখনই যাব সুরাসক্তি ভুলে; আলোকরা আকাশ মরিয়া ডাকে- আয় আয় বাগানবাড়ির আড়ি পাতা রোদছেলে, দেখ শ্রাবণের গ্রীবা থেকে এসে গেছে উড়োচিঠি-- এসেছেরে মুখরিতা রোদ {৭} ওষ্ঠ থেকে নেমে এসো নীল তন্দ্রা লতা আমাতে প্রোথিত হও একতারা মনের মানুষ বাস কর বেঁচে থাক বিষয়-মগজে দামাল সাঁতারের ঝোঁক {৮} তারা ...... রাতের নেকা্বে কার চোখ অজস্র ঝিলমিলে জাগে ! {৯} আহা জলের ঘরটি অই মুক্তির রুপালী আঁধার বেলা অবেলার খু...

কবি, আমাদের কবিতারা

"বৃষ্টির দেবতা আমি এ জীবনে যত বৃষ্টিপাত করেছি সে সব কথা মনে পড়ে, ফলে বেঁচে আছি। বৃষ্টিপতনের কথা কোনোদিন গোপন থাকে না।" -বিনয় মজুমদার জল তুলতে এলে আর কবি বিষাদ পুকুর, কলসির আলপনায় সে যে আরো কাছাকাছি- নাচের পিদিম তুমি জল তুলেছ আর চুপ করেছ সব কাজ, কবিকে নিয়েছ? নাকি অচেনা ভাদর ! কাঁখে এরকম হাসির দুপুর তুমি জল তুলতে এলে আর কবি বিষাদ পুকুর। ঐ লুপ্ত বাসস্থান, ঘুঘু আর সুর মিলে মিলে এই নীলচে কালো মশারীতে সিলিংফ্যান হাওয়ার ঢেউয়ে দেখি নিদ্রাহীন ঠাকুরনগর, নেশাতুর কবিতা স্টেশন- আমাদের কবিতারা এরকম ঘর বিমুখ করেছে সব, এনেছে নিবিড় যাপন-- আমাদের কবিতারা শুধু মস্তিষ্কে আর ধুকপুক হৃদপিন্ডে বাসা বাঁধে; আমাদের হাত কাঁপে, ক্ষয় শুধু ক্ষয় নয় আত্মনিপীড়নে আর আত্মহত্যায় যে সুবর্ণ অক্ষরের বিনিময় সেইখানে কে বাজায় শহুরে নূপুর! জল তুলতে এলে আর কবি বিষাদ পুকুর!!

সময় অথবা স্রোত

ওরকম বয়ে চলার কথা, উদভ্রান্ত পতনের কথা একদিন বলেছিল নির্ঝর মুক্তির ডানাকথা শুধু ঘরহারা কিছু নয়- তারও কিছু লক্ষ্য আছে সমুদ্র আকাশ মুক্তিপূজারী কেন ছোটে আর গড়ে গড়ে তোলে তার ব্যাখ্যা বোঝ। সুভদ্রার জানালা ছিলাম, আমি ময়নমতির  বাঁক যেইদিকে চলে গেছে সেইদিকেই ছিলাম। আমি সেই পূজকের জবা কানে গুজে ভুল করে নদী স্নানে নেমে পড়ি খড়িমাটি দাগ কাটি পথে অনবধানে বায়ুগর্ভে চোরা শিস বাজিয়ে তলপেট মুচড়ে দিই রূপলতার বুঝি সব রূপকিশোরীর পায়ে পায়ে ছিল আলতার ভুল- আজ বুঝি রুধির; আলতায় লেখা ছিল নূপুরগীতবিতান শ্রাবণের গান শেষ হয়ে গেলে বিজরী ময়ূর চলে গিয়েছিলে মেঘচিঠিঘর কাল রাতে চিঠি এলো তার, সেইখানে লেখা ...ভাঙ্গন আর লেখার টেবিলে টুপ করে ঝরে পড়লে তুমি গান মাতাল চাঁদ, সন্ধ্যা তখন,- বন ময়ূরীর সাথে আর কিছু মেঘের যোগে নীল রাংতা কুচি হয়ে উড়ে গেল সব চির প্রস্থান... কী যে লিখব ভেবেছিলাম, এখন আর মনে নেই আমার সৌরসন্ধান পড়ে রইল ইচ্ছেকুসুমের গহন কোরক চাঁদকে বোঝাই, আর কোন অক্ষর নেই, আর কোন শব্দই নেই, চাঁদমণি! মিছেই তোমার দুর্বিনীত ঝাপ, গান যা লিখেছিলাম তা সুরের বজরায় চলে গেছে গোমতীর ঘোলা...

যা,

এবার তোর প্রস্থান বড় কষ্টের স্বৈরিণী শ্রাবণ পড়ন্ত ঝড়ের আওয়াজে ছুটে এসেছিলি। তোর মুখে একদিন শরতের উদাস তো অন্যরাত স্মৃতিসহায়িকা। বৃষ্টি; বৃষ্টিময়তা নয় কোনোদিন। তবু যা কিছু জল-চুম্বন-প্রদাহ রেখে নুন বাতাসে বিদায় জানাবি, তা বড় কষ্টের হবে, নারে! আমি বুঝি তোর আর কবিতার বিযুক্তি অনুরাগ। এই মনে বিমনা মলহার, কাজলের আঁক থেকে বেঁকে যাওয়া শ্যাম নদী পেড়িয়ে চলে যাবি, সত্যি চলে যাবি?

দুটি লিরিক

= ১ = রাত্রি তোমার নন্দিত ফুল হয়ে ফুটে আছে খুব ফুটে আছে এসময়ে রূপটি ভীষণ অরূপ রুপাজলে এসেছে ঘর বৃষ্টির মৌ তালে আজ বিভোর লিরিকের রাত তুমি বুনছো রাত সুর দিয়েছো তুমি শার্সিতে জল আলতো আলতো ছুঁয়ে মন-কথা জল আঙ্গিনার ঘাস জুঁইয়ে সুবাসের কোন খোলা জানালার কানে হরফ দিয়েছো কবিতা দিয়েছো এনে কবিতারা গান ফোঁটা ফোঁটা জল মুখে কবিতারা সুর বরষার মুখ দেখে আলো নিভিয়েছো আলো জ্বলে আলো জ্বলে জোনাকির মত মুহূর্ত নেভে জ্বলে আবছা নীলে আঁধার মিশেছে রাতে কান পেতে রাখ রাত্রির পাখি ডাকে ভেবেছিলে খুব একলা বর্ষা দেখা এই রাত্তিরে তুমি একা- সব একা... ........................... = ২ = ছায়ার সাথে কার খেলারে শিশু ছায়া কার ছায়ার সাথে মায়ার খেলা শূন্যে প্রতিবার এমন অনেক খেলাই আছে মনে খেলার নদী ছিন্ন মনে খেলা করে নদী নিরবধি বন্ধু তুমি আলো হবে শিশুর মত হব দীপ্র এসে আমায় ছুঁয়ো দেখতে তোমায় পাব আমার সাথে আমার ছায়ার খেলা তখন নদী তুমি আছো জেনেই খুশি লক্ষ শ্রাবণ কাঁদি

পিল

এই রাত একা- অনুপ আঁধার, তুমি চোখ বোজ নিশীথা ঘুমোও, তুমি তো মধুর রূপ কৃষ্ণরেখা দিন ক্ষণ মেলাতে বল লোকনাথ পঞ্জিকা খুলে- যাত্রা কবে শুভ হবে, বা কখন নদীরা বিরূপ। জানো নাই, শুভ-অশুভ বোধ খুচরো কয়েনের মত ছুঁড়ে দিয়েছি নাইট শো-এ রুপালী টকিজ; একটা বাঁকা হাসিতে দর্শক, ভনিতা নেই কোন- তাই আছি। কোথাও যাবার ছিল কিনা, কেউ আর দেখে কিনা ফিরে আসা পথ, হঠাতই মনে হোল!! হঠাতই মনে হোল স্বপ্ন দেখাব, তাই সুজনি চাদরে ঢেকেছি, দোদুল লালাবাই... ফুলদোলনা এই রাত একা- সুরেলাআঁধার। তুমি চোখ বোজ, প্রিয়কামনারা থাক্ হরিয়াল উদাসীনা ডানা, চোখ বোজ চোখের বিদ্যুৎ, শোন, এই রাত একা- স্বপ্ন ভাসাব বলে পিয়াইনের রুপা জলে আমি নীল নৌকো হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি- দেখে যেন ঘুম ঢলে নাজনী’র মুখ

আবার কিছু খেয়াল... (৫৯টি)

{১} কিছু আত্মহত্যা প্রবণ পাখি উইন্টার ফরেস্ট থেকে উড়ে গিয়েছিলো সূর্য লক্ষ্য করে, জীবন-আনন্দের দিকে... {২} তারার মেয়ে সন্ধ্যা নামে সন্ধ্যাতারা রাত যেখানে {৩} আর্টিমিস, বিদ্ধ হতে হতে জেনেছি জীবন অন্যখানে; হে সুবর্ণা শিকারি রাতের অরণ্যে যাব আশ্রিত পাখি অভয় দাও আদি পৃথিবীর শুদ্ধতার বুকে ঘুমিয়ে পড়ি {৪} একটি রুদ্ধ কথার মত ঝড় চলে যাচ্ছে সমুদ্রে দিকচিহ্নহীন {৫} খুব জটিল তো নও সমস্ত বন্ধনী তুলে তুলে দেখেছি সরল অংকের ফল- এক {৬} আষাঢ় সূর্যের মত বেমানান তোমার এই বিষণ্নতা {৭} বেলি সাজি, কারুকাজে নিপুন... তুলছো সৌরভ আঙ্গুলের চুপধারা ভাঁজে ডাক ভোলে মুনিয়া মাতাল ......... শাদা শাড়ি আর এই ভ্যানিলা সকাল {৮} রাত গভীর হচ্ছে বেরিয়ে আসছে অন্ধকারের লেজার প্রিন্ট স্পষ্টতর শঙ্খ গহীন রেখা রেখার ভাঁজে ভাঁজে দূর মানুষের মুখ {৯} মমতার কথা ভাবতে পার বিকেল পাঁচটায় ছেড়ে যাওয়া ট্রেন {১০} এই প্রান্তিক কৃষকের কুটিরের ভাঙ্গা দরজা দিয়ে ঢুকে পড়েছে চিরস্থায়ী আষাঢ় এ যাপন ঋতুচক্রহীন {১১} ঘুম ধরেছে গান শান্ত রাতের নাম {১২} টাই নটে স্থির হয়ে আছে নাচ আঙ্গুলশৈলী {১৩} চোখ পোড়ে, রোদ জুড়ে হাসি -বৃষ্টি প্রত্যাশী {১৪} তোমার স্নান বাজ...

পাঁচটি কবিতা

....................... নিষেধ ............... সে এক ভয়াল ঝড় মৃত্যুময়ী উন্মক্ত সিডর বন-সুন্দরে এসে থমকে গিয়েছিল অবাধ্য ইস্পাতে হ্যামার ট্যায়রেন্ট অথবা সুনীল গীটার তামাটে আঙ্গুলে তোলে জীবন... জীবন অরণ্য হয়ে আছি প্রযত বিন্যাসে যতটুকু হ্যাঁচকা টানে ছুঁড়েছ লাটিম ছুঁলেই মরণ ....................... চোখ ............... কত দূরে আছে নেত্র অই রজত পুণ্যিতে সাঁতরে যাব মৃগয়া না দর্শনে নেত্র কত দূর! দেখ এই সঙ্গীত অনতিক্রমের মৌনতা ঝরে ঝরে পড়ে যাবে ক্যালিপসো ঢেউ আর তালে কতদূর হিরণ পয়েন্ট? ....................... সময় ............... ক্যালেন্ডারে ছয়টি ঋতুর ছবি ম্যাট লেমিনেশনে ফুটে উঠেছে উলটে দেখার নেশা, এই বিষণ্ন দেয়ালে জোর করে ধরে আনা আলো, কুয়াশা, শ্রাবণ আর চৈত্র ছড়িয়ে পড়ছে সময়, এগিয়ে যাচ্ছে শেষ রোদ্দুরে আর রাতে এই ক্যালেন্ডার বৈরী ভীষণ ....................... ঘুম ............... আর সারাটি দিন অন্তঃপুরের খোঁজ নেই। আর নেই খোঁজ বালকের হারানো মার্বেল। সন্ন্যাস নয়; তন্দ্রালীন সারসের চোখ আর উড়ানমুগ্ধ সন্ধ্যার পথ, ঢেউবিবাগ থেকে লবঙ্গবাতাস একটি না দু’টি পা...

... আবারও মৃত্যু বিষয়ক

আদি চেতনার ফুল ফুটে আছো মৃত্যু......... পড়শিরা কাঁদে, ধীর যায় শোকের প্যারেড... শেষ ঢেউ লিখে রাখে ব্রহ্মপুত্র তীর। তবু তুমিও ছন্দোবদ্ধ- মৃত্যু, কবিতার নীল-নিশা, অঙ্গারের পাত্রকে স্পর্শ কর তুমি আর সে বুকে ধরে শত গন্ধরাজ-- যার জীবনের লালীমায় মৃত্যু পরম, জীবনের জয়গানে যে নাচিয়েছে গন্ধর্ব, সেই ব্যান্ডমাস্টার মৃত নয়। তবুও মৃত্যু কি কল্পনার স্বৈরাচার, অনিবার্য শ্রুতির শৃঙ্গধ্বনি......... মৃত্যু কি বরিষার সাটিন ...... জীবনের তুস আলোয়ান ... মৃত্যু কি ভেঙ্গে ফেলা প্রাচীর-পরিখা, খুলে ফেলা আত্মার স্লুইস গেট! বাষ্পপরিপ্লুত মানুষের কোনো মৃতের দিকে নেত্রপাত কেমন নিদ্রার কথা বলে, তা শুধু জানে সে মানুষ। কোন্ ডমরুর তাল দূর আকাশের অনুসার- এই প্রশ্নের ঘরে জীবনের স্মোক-মেশিন আর প্রহেলিকার কথা আছে -- প্রতিরুদ্ধ আঁধারের মোমে যে আত্মক্ষয়ের শিখা, সেও তো রেখেছে দেহের সুবিন্যাস... কৃষ্ণশূন্যতা; ক্ষয়ের অনুষ্টুপ্ ধরে রেখো গায়েন, কবি রেখো শূন্য শিরোনামা। এই জন্ম থেকে যাত্রায়- যে সুনিপুণ মিলিশিয়া সহস্র বাগানের কাঁটাতার উপড়ে ফেলেছে, তার কাছে মৃত্যু মাথা নোয়াক। তার কাছেই উন্মোচিত হোক টেরাকোটার ম...

নাবিক

মাস্তুলে আঁধার হেনেছে তীর। হে নাবিক, জলে দেখ হিরণজরির কাজ বুনে বুনে সূর্যের বিভার আঙ্গুল গলে যায়। যতিস্থির নির্ধারিত অন্ধকারে পাখিদের বিদায়ী সোজর্ন, তোমাকে এই পৃথিবীর কাজের প্রলুব্ধি দিয়ে গেছে। জাগতিক সুর ঢেলে চলে যায় এরকম জগতের বিবাগী আকাশ তোমার ঐ দূরবীণ থেকে সুয়েজের দিকচিহ্নে রাখা যত স্টার্লিং, চকচকে চোখের বিস্তার, তারও আদিকথা- প্রেম।

তালাশ

অথবা এইখানে চন্দন কাঠ পুড়ে যায় অনুমিতি ধরে নয় কিছু স্বপ্নজ্ঞান সহজাত নয়তো এইখানে চলে আসে ময়ূর-শ্রাবণ পালকসকাল স’মিলের কাঠ চেরা শব্দরা পাঞ্চালীর আঁচলে ঘুমিয়ে গেলে এইখানে এখনো পাতার ঝাঁজর থেকে ছায়া নেমে আসে জোনাকবীথির পথ চলে যায় নীলকণ্ঠের কৈলাস মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে আমিত্ব বানচাল করে আলোর বারুদ হই তাতারের বর্শা ফলায় লুটে নেই মধুরের মন সাপুড়ের বীনে তুলি থুম গোখরোর যত নেশা যখন এখানে দেখি শোকের গন্ধ নিয়ে পুড়ে যায় চন্দন কাঠ এই সেনেটোরিয়্যাম থেকে ছুটে যেতে ইচ্ছে করে, চোখে তুলে নদীর এসথেটিকস চলে যেতে ইচ্ছে করে শব্দের মেহফিল অথবা এইখানে পলাতকা রাত নেই কোন কোন অনুমিতি ধরে নয় কিছু যেন কারো চোখ চাঁদের ফিল্যামেন্ট যেন তার শিশমহল- হারমোনিয়ামে আঙ্গুলের নাচে দুলে ওঠে সে হিরণবালিকা আর হোমকুণ্ডে পুড়ে যায় সমস্ত শোক আর এইখানে চলে আসে ময়ূর-শ্রাবণ শার্শিতে বরষার মিথুনছায়া ডুবে যাওয়া... ব্লিস

আবার খেয়াল

{১} মৃত্তিকা সাড়া দিলে প্রতিমা হবেই বলি আঙ্গুল হবে দশটি রঙতুলি {২} দিন যা পারেনি দৃষ্টিতে, দেখলাম শ্যামরাত্রিতে {৩} খুব খুশির স্বপ্নে ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে তবে আর ঘুম আসবে না {৪} রুপাজলে ভোল, মন - মন তুই মাছরাঙা শিকার ভুলে যা {৫} হে রুদ্র পুরুষ, এই ভেজা দুপুর তোমার বিরহ বেলার কথা {৬} ভুল সময়ে নীরব থাকা ভাল ভোরে যে সুধাবর্ষী পাখি অন্ধকারে মৌন থাকে সে {৭} ছুটে যায় নির্বোধ হরিণ-মন -মুখ তূণীর তার {৮} হাওয়ার ইয়ারফোন সারাক্ষণ গুন গুন নাম ... ইয়ারফোন ক্যান কিল ইউ! {৯} ভাইনইয়ার্ডে পড়ে ছিল একটা সকাল সন্ধ্যার গ্লাসে ছড়িয়ে যাচ্ছে এখন হীরের বুদ্বুদ {১০} কোন্ পথে চলে গেলে লাল ফিতে চুলে দোলা নামতা শেখার দিন {১১} এখনো স্পষ্ট আছে চোখের স্ন্যাপশট, একটি শিশির জড়ানো লেবুফুল এই কবিতা টেবিলের চারপাশে সতেজতা দিয়ে যায় সে {১২} শ্রাবণঝড়ের খোলা জানালা্র একটু আড়াল, খোঁজের ঠিকানা- কবিতার মিষ্টিক স্পট {১৩} এই পাখনায় এনেছি নৈকট্য গল্পের হাসি এই ঘাসের শরীরে মিশে মিশে আমাদের মন লীন উষ্ণ হরিৎ বন্ধুরে জানিয়েছি খুব ভালবাসি {১৪} একটি চোখের জমিনে আবারও দেখলা...

অক্টোবর

খবরাখবর নিলে বলতে পারি বৃক্ষরাই অক্ষর লিখেছে হাওয়ায় আমি কোন্ আক্ষরিক ! নৈকট্য চেতনা নাশক তবু খোঁজ নিলে বলতে পারি- ক্রান্তদর্শীরা কবিতা লেখে না শীতের কিছু আগের ভোরকালে তুলে রেখেছিলাম শরাব-সুরাহী শত সন্নিধান রাত্রির অপচয় ভুলে গিয়ে চোখ রেখেছিলাম অক্টোবর মর্নিং ...... অ্যাজুর আকাশ দেখি নীচে ফাঁকা অঞ্জলীর মন্ডপে আরাধনা অমান্য করে গেছে বন বালিকার নির্ভয় শোক করা অনুচিত ট্রেসপাস, খুনেরা মৌসুম, ঘাস শিষে শিশিরের ফুল জেনো সব বৈধ আছে, ইয়ারা অক্টোবর! না হয় বুঝিনি কিছু সময়সংকেত দোঁহা’র লাগি গান; এখন তো চলে গেছে প্রতিদানহীন চীবর দান প্রথা বলি,- সর্বদ্রষ্টা নয় ওয়ার্ড পেইন্টার; অক্ষরে আঁকা জানে নাই, কিছু অজানাই কবিতার মেরুন মলাট

মুসাফিরি

আকাশ ভোলেনি ঘুমপনা- বলে ভোররাতে আদুরে তারার মুখে রব প্রার্থনা হয়ে গেছে কিছু দূর তেলাওয়াত সুরে মন বরষায় নামে বিমনা আকাশ তার বাড়ি নামে মোহন পাখায়, যার বাড়ি রূপকুমারী ডোরের আরেক নাম নামডাকা পাখি সুবে-শাম আবডালে ডাকে; রুহানি তালাশে আকাশের মন মানে না যে তাহারে দেখে না- দেখে না যে; শুধু অন্তরে আলেয়ার আলো আফসানি ভোরের আরেক নাম আলো শ্রমণের লালমাটি পথে শত রাতজোছনার ছায়াটান ছোপ ছোপ আলতার ছাপে ঠিকানার প্রশ্নবিদ্ধ নাম শ্রমণ ভোলেনি এ পথ অন্যনামে বিমোহ সরণী, জানে মায়াঘর মর্ত্যলোকের আদিবাস আরো জানে নিধুবনে হাসি আর শোক পাশাপাশি, চেনে রক্তআলতা পা বাসন্ত নির্জনা নারী জানে- জলকথা কবে বালিয়াড়ি তাই আকাশ ভোলেনি ঘুমপনা- বলে, নীলতারা ঘুম দেখে যাব মুসাফিরি ক্লান্ত চোখে তাও সুছন্দ নৌকো ছায়ায় জল হব

একটি মোহের নাম- মন

আলীবাবা তস্কর, মর্জিনা নাচের শেষরাত পরও আমরা দেখলাম‌, ‘ছল বল কৌশল’ ব্যবহার; চিরজাগ্রত সিদ্ধার্থ হে, ক্ষমা কর নির্বাণ বিশাল প্রাণের, আমরা ক্ষুদ্র খুব মৌলিক মিলিয়ে চলি শুধু, নয় লিখি সুইসাইড নোট আমাদের হাতের ওপাশে থাকে রুপোর ম্যান্ডোলিন তবু ইচ্ছে করে মাঝেমাঝে অত বৃষ্টির পরে জলকণা ফুঁড়ে ছড়িয়ে পড়ি খুশির প্রিজম লাইট। বাজীর ঘোড়ার নাম ড্যান্সিংকুইন, বাজীখোর হয়ে ময়দানে আছি হে প্রবুদ্ধ সুন্দর, আমাদের বৃক্ষরা কাঁদে চোখবুজে থাকে গহীনের আলেয়াকিশোর আর মাঝেমাঝেই এরকম আমাদের শরীর জুড়ে পৃথিবীর ঝর্না বয়ে যায় কবিতারা কবুতর... উড়ে যায় নীলগিরি বন আমাদের একটি মোহের নাম- মন

খেয়ালী লেখা - এবার পঞ্চাশটি

{১} স্ট্রবেরীতে গোপন চোখ আর মৃদুলাও দৃষ্টি প্রবণ {২} চারুসাজে ফোটাও দেবশিশু, প্রাণের প্রতিমা গড় তুমি। বোধনের বেলা হয়ে এলো, এখনই অধীর সবাই ছুটে যাবে। আশু খুলে যাবে জোছনা কপাট। আমি তবু তোমারেই দেখি। তোমারেই দেখি, শিল্পী প্রীতিভাজনেষু। {৩} কবে তোর মোহন গাগরি থেকে দহন দুপুরে দিলি আঁজলায় জল, ঠোঁটে তুলে থমকে গিয়েছি, দেখি করতলে মুখ তোরই দোলে; সেই রূপবারি ছড়িয়েছি আজ খুঁজে নেরে বৃষ্টি মিছিলে। {৪} মোহন বাঁশিও শ্মশান সুর তোলে ভুল থেকে অভিমান হলে {৫} রোদের পাখিরে তোর তৃষ্ণা নিয়েছি, আমি বরষায় আছি। {৬} চোখ মুছে ফেলো না আকাশ ঐ চোখে কাঁপে ঝিলমিল ঈশানের না জানা নীল {৭} দিয়া জ্বলে অন্ধকারের মত জ্বলে শংকরী'র দোরে কড়া নাড়ে শুধু বর্ষা বাতাস {৮} ঘরে আর ফিরছি না পল্লবী ঘর হবি? {৯} ওরকম স্নেহকথা কেউ জানে না সাদা শাড়ি-তে ঘুমের মত ঘ্রাণ তোমার ঘোলা চোখে আদরের মত জল উঠোনে আচার বয়ামে তোমার যত্নস্বাদ হরিতকি গাছের নীচে তোমার ভিন্ন রান্নাঘর পাথরের থালা আর গ্লাসে শুদ্ধ ঝিলিক... ওরকম শুচিস্নিগ্ধ ছাপ আর যে মেলে না ভোর সাতটায় ট্রেন আসে এখনো ঠাকুমা ভোর রাতে পুলি পিঠে ...

আমি জানি চোখভাষার মানে একটি স্থির সময়

আমি জানি চোখভাষার মানে একটি স্থির সময় জীবনেই মৃত্যু থাকে তবে অভিযাত্রায় থাক নগ্ন সাগরবেলা আনন্দের সমুদ্র-স্নান তবু মেরিনারের সমুদ্রমুখীনতা অতলান্তিক টান একটাই কথা বলে – যাত্রা জোয়ার-রেখায় চিহ্ন রাখা আছে কতটুকু পারি কতটুকু জুড়ে থাকা যায় এই মানুষ লীলায় প্রাঞ্জল হলে তুমি বন্ধুস্বভাব স্বরলিপি জুড়ে হলে পত্রমিতার অক্ষর আমি চিনি গোধূলি ক্রিমসন ফয়েস লেক দুই চোখে ধরে কে নিয়েছে বৃক্ষবাস মধুরা হয়েছে কে রক্তের ফুল পুষ্পারতি হোক মধুপের বন্দনা ঋণ কিছু থাক সুন্দর প্রার্থনা থাক; গ্রহণের অন্ধকার অচেনা সময় থাক কিছু আমার চেনার চিহ্ন শময়িতার চোখে আলো করে থাক অন্তরপ্রান্তর, গত সব দিনের কবিতা আপোষের সিঁড়ি পেরিয়ে যে গৃহ তার কিছু শান্তি আছে সন্ধ্যাবরণ তার এক নাম আছে ফুলকলি বহু আগুন গ্রীষ্ম পেরিয়ে আছে মরমিয়া মৌসুম, শস্যস্নানের জল বৃষ্টির রূপসারি ধারা আমি জানি চোখভাষার মানে একটি স্থির সময় আমি জানি শব্দের মানে - চারিদিকে অদৃশ্য হরিণের পায়ের নূপুর

লিরিক - ৫

হলদে পাখির দিন তোমায় ভুলতে নেই ফুল দোকানে তিন কথায় রাগতে নেই কথার শালিক আজ একটা পাখি হয়ে চুপ রয়েছে খুব রোদেরই হৃদয়ে হলদে পাখির দিন ফুল দোকানে তুই গেছিলি কোন্ ভুলে নিয়েছিলি জুঁই জুঁই গন্ধে ঘুম দিন ফিরেছে বাড়ি গোলাপ চেয়েছিল জুঁই দিল আনাড়ি হলদে পাখির দিন ফুলের মানে জানো সাদা রঙে ভুল করেছিলে মানো সকাল সকাল রোদ ভুলে যেতে নেই ফুল দোকানে তিন কথায় রাগতে নেই

নিশীথে...

কবিতার কথা থাক, বাঁশ পাতায় সুর তুলেছিলো যারা হরিণরাখাল, তাদের বেদুঈন দিন গুজরান যাদের চোখে থিতানো সন্ধ্যার মত আলো বিরলতা বিলুপ্ত সংসার – তাদেরও কেউ হইনি আমি লজ্জায় আমি সম্প্রদায়গত, পথভোলা নই, জন্মনামেই দেই পরিচয় বালুঘড়ি হাতে নিয়ে ত্রিসন্ধ্যা যুদ্ধ ঘোড়ার মিছিলে মাড়িয়ে গেছি বসরাই বাগান; আমারও তাই অনুতাপ আছে বিষণ্নতার কাছে – সংগীত কিছু আছে কৃষ্ণ মেঘের আসরে রোহিণীর বুকে তীর ছোঁড়া নিষাদী নেশাটিও আছে তাই রাত্রি বন্ধু হও, নক্ষত্রনীল শরীরছায়া থেকে বেরিয়ে আসবে দেখো একটি দেখা হয়ে যাওয়ার পথ... রাত্রি তুমি বন্ধু না হলে চির বৈরী জীবনে শব্দধারারা যত ভীরু হরিণশিশু, মাংসের লোভ নিয়ে বেমানান স্নেহে তাকালে এই মায়াহারা অরণ্যে শুধু হিংস্রতা রক্ত হাড়... তাই বন্ধুর মত রাত্রি এসো, যার আয়নায় ভেসে উঠবে চোখজলকথা, সব চিহ্নিত বর্ণনা; ওসময় ভগ্ন রাজবাড়ি থেকে শুধু অতীত তুলে নিয়ে গেলে দেখা যাবে অন্দরে রত্নহার, এক বিশেষ কথার কাছে ঋণী নত সিংহাসন, সেইখানে চিরবন্দীর নখের আঁচড়ে লেখা- 'হৃদয়ে হৃদয়'। দেখা যাবে, সর্বশেষ ব্যথার কাছে জ্বলে আছে তখনও প্রদীপ্ত মশাল, আর চোখের প্রিজম থেকে বেরিয়ে আসছে এক...

সিনফোনিয়া

একটা যাত্রা ছিলো দুইদিন দুইরাত মনোহর কয়েকশ মাইল, ট্রেন নয় পায়রাপালকি যেন, যার বেহারার দল টেনেছিল চাঁদের চরস। অবকাশ দীর্ঘ যদি হত ওরকম, পাম এভেনিউ ধরে ধরে চলে যেতাম আবারও নলিনীহাওড় ......... আহা কাঠগুদাম, রাতের স্টেশন- তুমি কতদিন কতরাত আগে দিয়েছিলে দৃষ্টি আর শ্রবণ সন্ধান- এক রাত বৃষ্টির একুস্টিকস তো অন্য রাত মুনলিট ভেলি’র ঢালে সিনথিয়া’র মুখ! এই যে আমার ঘুঙুরস্পন্দ চোখ, সেইখানে লেগে আছে এখনও সেদিনের অরণ্য বিথার। এই যে আমার দোরঙা চব্বিশ প্রহর তবু সেই গুনগুন মুকুলকথন, মোহ টান- বিজন পাহাড় অবকাশ দীর্ঘ যদি হত, প্রেয় অন্ধকার আর পথরহস্যে ভ্রমণকাল দীর্ঘ করে নিতাম। অনন্ত শূন্যসোপান বেয়ে বেয়ে, কালরক্ষীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তুলে নিতাম স্ফটিক দোয়েল ... ... অবকাশ দীর্ঘ এত হত তারপর নৈঃশব্দ্য বাজিয়ে যেত মন সিম্ফোনিস্ট!

খেয়ালী লেখা (৭০টি)

{১} রাত্রি তার নিয়ম মাফিক দিনে গিয়ে পড়ল। সন্ন্যাসী আবার ব্যবসায় নেমে পড়ল। {২} অবাধ্য নিজের ধোঁয়ায় পালিয়ে এলি মৌয়াল {৩} বৃষ্টি বুঝিনি, সে সবার ঘুমে ঝরে গেছে তার প্রতি মায়ায় আজ সকালে সব মুখ সুন্দর... {৪} নক্ষত্রে নক্ষত্র জেগে রয় রাত্রি গভীর আর আমরা ভাবি সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে... {৫} এখন প্রান্ত বদল হোল শুধু খেলা বাকী খেলা বড় নির্মম শোনালে, ছবি? বিরতীর পর শেষ দৃশ্য রয়ে গেছে অথবা নির্মম শেষ বাঁশি {৬} রাত্রি কালোর প্রান্তরে অনন্ত তার রূপ ধরে বিজন বেলা এক হয়ে সমগ্রতার মুখ ছুঁয়ে আলোকপাতে চোখ ভরে রাত্রি কালোর প্রান্তরে {৭} আমার হোক অধীর চোখ ঝাউ পাতাদের বর্ষালোক {৮} দূরে পাখির ঝর্না না তার প্রিয় ওড়না? {৯} বর্ণপরাগে শব্দফুল বৃথা কবিতা বলেছি তারে, শব্দে লিখি নি যারে {১০} আমাদের মত লুট করেনি কেউ নদী ভোর বৃক্ষ পাখি নিখুঁত এ স্বরচিত জেল জীবন {১১} সবার বুকেই আছে এক কথা বলা পাখি পৃথিবীর ঠোকর থেকে বেঁচে যেতে আমরা যে বর্ম আঁটি তার নাম পৌরুষ উদ্ধত যাপন তবু সবার বুকেই থাকে সুনীল সে পাখি আমরা সবাই শুধু বুকে চেপে রাখি... {১২} তোমার চোখ থেকে ভোর ঝরে পড়লেই ...

শুভ দিন

ঝাউপাতা ঝিরিটির মুখ দেখ এইটুকু মনে কর তুমিও পেয়েছো কোনো পৌরাণিক দান, সূর্যলোক থেকে একটি তড়িৎ জ্বলা চোখ স্থির হয়ে আছে দেখ তোমার রোদরেখা চিবুকে, ভোরবালা আজ শুভ নতুন দিন ভোর থেকে রাত আজ মনিহারি প্রহর প্রহর চিত্রার মধুবনী শাড়িটির কাজ থেকে আজকে আমার শ্রুতলিখা একটি তিশাবাজ প্রমোদ আকাশে ওড়ে দেখ তার ডানার হাওয়ার গন্ধে লবঙ্গফুল তার ডানার শব্দে মন্ত্রের মত গান তার পিঠে উড়ে চলেছে তোমাকে বলার মত কথা্ পুষ্পপুরীর দেশ সেইখানে সংক্রান্তি উৎসব শেষে সবাই সন্ধ্যামণির মত ফুটে আছে মূর্ছনার কাছে, নির্ঝরের কাছে কথার অক্ষর মিলে জলে জলে তথাগত মুখের ছায়া শুভদায়ি স্রোতে তার হৈম ফসল কাল রাতে তারামণিকার আকাশ থেকে আলো ধার নিয়েছি উজালা তারও আগে সন্ধ্যার কণ্ঠ থেকে চেয়ে নিয়েছি ধুপছায়া রঙ ছবি এঁকে দেব এই বেলা ভোরবালা।

কেন... ?

আজীবন আপন থাকার স্বপ্ন দেখিয়ে গেছে কবিতার দূর্বাগাছির করতল, স্ফূরণের রঙ্গন- এই বিভোর চলাচলে শ্রান্তি নেই ধুলোর টাইপরাইটার কবির ম্যাজিকবক্স পিয়ানোর মত তাই বেজে ওঠে তোমাদের রৌদ্র বাতাস। আপন হাওয়ায় তার বুকের উইন্ডমিল, হৃদয় নাচ পাখি তার অক্ষর স্লিপিং পিল অথবা জাগ্রতের শাণিত চোখ হতে পারে, তাকে পথ দেখিয়ে গেছে ছায়াপাখি ওহ অসহ ব্লিজার্ড... আজীবন কান্না করার ইচ্ছে জাগিয়ে গেছো নাছোড় ছায়াপাখি! কবিরা তাই মেঘপ্রেমিকের দল, স্বপ্নখচিত হিয়েরোগ্লিফ ছড়িয়ে দিয়েছে যারা স্মৃত কোনো মহৎ ভুলের দিকে; ফুটিয়েছে অক্ষরের দ্রোহ আর নাচ... আর ঘুম কবির মৌনমন্দিরে তার চির উন্মুক্ত নৈঃশব্দ্যের কাছে কবিতা কালো হীরের ভ্রমর, জীবন অথবা মরনের প্রসন্ন গ্রহণ কবিতা নীলচে গীটার অন্ধ তানে যার ভেসে যায় অন্তর-মহাল রবিনসনের দ্বীপ.....................

ড্রাংক

একটা সময় হবো নীল চক্রবাক সময়ে সময় মিলে রঙের ক্রোটন; আঙ্গুল যখন ছোঁবে মেরুন স্প্যানিশ ঘোর যাত্রা হবে ঝিম প্রপেলার সুদূর রুপোর দেশ ঝড় জলপথ ডুবুরীর হার্পুনে বিষ মেশাবো। একটা উড়ান হবে পতঙ্গ দহন ছিন্নভিন্ন করে যত হানিট্র্যাপ মোক্ষ মধুর জানে নিশানার তির একটু বেপথু হয়ে সামলে নেবো।।

দোল জানবে না

ধাঁধানো রঙে চেনা চেনা মুখ সব, সব মুখে আপন ফাগুন, রঙবন্দনা রৌদ্রলেখায় যে নাম আলপনা করা ঝাউময়ী জমাট সবুজ ওরকম লীন কারো মুখ খোঁজো দীপ্ত আবির নয় দোল হও আকাশকাজল মেঘ তারার আড়াল মত কালো রূপটান নাবিকের দীর্ঘ ভ্রমণ শেষ, তার চোখ আর দূর তাকাতে পারে না নদী আর ভ্রুরেখায় অচেনার বাঁক তবু কীর্তিনাশার তৃষ্ণা... নাবিক জানে না, আদিম সুর্মা-পানকৌড়ি কোনো চিহ্ন রাখে না তার পথে যাত্রার প্রবর্তনা রেখে যায় যখন সে ডুব দেয় নদী আর বনশ্রী পথে জোছনার উৎসব ভিড়ে সেই ডুবসাঁতারি আর লক্ষ্য রাখে না এই খেলা জানবে না তৃষ্ণার মানে আর অভ্যর্থনা এক নয় যাপন, দেখানো বন্দনা স্বপ্নের কোন্ রঙে অচেনা পাখির পাখনা দোল জানবে না দোলপূর্ণিমা দেখা হলে অজানা জ্যোৎস্না আর কেউ দেখবে না

মিসিং

প্রাপকের নাম আর ঠিকানা লিখে দিলেই চিঠি পৌঁছে না। ডাক পিয়ন কেমন আছে জানা প্রয়োজন। যেমনি জানা প্রয়োজন তোমার হাসি কেমন আছে, তোমার কান্না আর কেমন ছায়ায় মোড়া তোমার চোখের পথ! কি ঠিক ছিল কোথায় বেঠিক এইসব তর্ক আর শোরগোল এক পাশে ঠেলে দিয়ে আমরা বুঝলাম একটু ঘুরে আসা প্রয়োজন... সেই ভ্রমণে সেগুন অরণ্যে জ্যোতিপাখি দেখে নির্বাক হয়ে গিয়েছিলে। কারো কাছেই ধরা দিলো না সে! তাকে ধরতে চেয়েছিলো এমনকি দক্ষিণ বাতাস, অবেলার বর্ষণ এবং তুমি। পাখি উড়ে গেলে এই রুটিনবসন্তে পড়ে রইলো যুগল কান্না আর একটা হুডখোলা ভেজা রিক্সার নিঃসঙ্গ বেল-এর মনটোন। ============= ৫ মার্চ ২০১২

অন্যকোথাও

আর আলোরও আচ্ছন্ন লাগে মেহগনি পাতার নিবিড় দূরের ভূখন্ডে তাই সন্ধ্যার রঙ বারোমাস জীবনের থেকে দূর কুহকীর দ্বীপ প্রহসন থেকে দূর প্রমূর্ত ইচ্ছের দেশ দিন তুমি ঘুমিয়ে যাও এবারে শঙ্খ নৌকোয় ভাসাবো জোনাকির আলো ও পাপ, শিকারী তাঁবুর যুগল ছায়া আর সাথে নেব ইক্ষুর মদ হেমন্ত তরুণীর নাচের পরব দূর শাদা পালে যাও ঈর্ষার নাও আমারে নিও রে মাঝি- মেঘলার দ্বীপ যাবো নাগা প্রাচীনের কাছে লুণ্ঠিত হলে হোক যা-কিছু আমার গৈরিক বসনে যাও দিল বাউলের নাও নিয়ে যাও যেইখানে এত সুরে কথা বলে আদি শৈশব মাঝি তোমারে শোনাতে রাজী নুলিয়ার অথৈ মরন, মায়াবী ঘাতক আছে বলে রাখি- ঐখানে মেঘলার দ্বীপ, ডুবোচর পথ... শব-ডুবুরী আমি পথ চিনি নিয়ে যাও যেইখানে এত ভোর ভাসিয়েছি আহির ভৈরব

খেয়ালী লেখারা...

{১} কাঠদস্যু হানা দিয়েছিলো চন্দন বনে লুটেরা কুড়োল ঝুলিয়ে রেখেছিলো তারপর রাত্তিরে ডেরায় ফিরে ... সুঘ্রাণে সুঘ্রাণে তার আজ অনিদ্রা রোগ {২} দোলনায় দোল দেখে দেখে কিশোর ছন্দ শিখেছে {৩} পুষ্প অধীর দেখে, কার হাসি থেকে প্রজাপতি উড়ে উড়ে যায় হাসিন পাখায় {৪} দক্ষরেখায় আটকে আছে কে কে? {৫} এবার সব কৃষ্ণপক্ষের কালো তুলে নিতে পারি দাহকাল অচেনা সময় নয়, এবারও বুকের দাহ দুর্বহ নয়; এবারও ভবিষ্যত বলে দিতে পারি, -- মনপুরা দীঘিতে ডুব দিয়ে পারঙ্গম শ্বাসে তুলে আনব মোহর কলস; অগ্নিযুদ্ধে আমি সেই রূপকলসে নেব জল। মোহর তোমার। {৬} তাপমাত্রা বাড়ছে ফ্যান, এসি পুরোদমে এবার হাতে বোনা হাফ সোয়েটার তুলে রাখি তুলে রাখি আঙুলের কারুকাজ কাছের অভয়, গ্রীষ্ম অসহ্য সময়। {৭} কী ভেবে যেন, ঠোঁট ছুঁইয়ে একবার নক্ষত্রে উড়িয়ে দিয়েছিলাম রুপোলি কাগজের প্লেন ! {৮} আজ এই সবুজতম বৃক্ষ হোল তোর ঘুমের আশ্রয় হিরন্ময় পাখি ...... শ্রাবণ নিবিড় ছিলো {৯} আর এইসব সুচরিত বসন্তদিনও একদিন বর্ষামুখর হবে, জানি {১০} একটা আলোচিল পথ ভুলে গেছে তার পিছে উড়ে উড়ে দিন হারিয়েছে {১১} দিন যায় দিন মুছে যায় আমরা চেপেছি শেষ সন্ধ্যার ট্রেন দেন-দরবার, গল্পকথা, প্রাপ্তি- অ...

বোধন

রাত্রি বোধনে এলে জানিও যেখানে ছোপ ছোপ চিতারা ঘুমিয়েছিলো বনপলাশের আঙ্গিনা, সেখানে আরতি হবে, এসো। পায়ে পায়ে মাড়িয়ে যেও আলোর পৌরুষ পর্দা রেখো না। অরণ্যে লুকায় না কেউ অরণ্যে কেউ মুখ ঢাকে না। পুরো প্রচ্ছদে রাত্রি এনে দিতে সব কবিতাকে শিখিয়ে দিও চরসুন্দরে বসবাস- যেখানে চুপচাপ শীতের পাখি মন ভোলাতে জানে না। সেখানে আরতি হবে, এসো। ..................... সোম, ২০/০২/২০১২

সুর

এ কেমন দুপুর হলদে চিঠির নিলামের দিন এ কোমল পৌষদিন ভোরগভীর দুপুর! সুবর্ণ আঙ্গুলে টোকা দাও বেজে উঠি ধুলোর গীটার টোকা দাও ঝরে পড়ুক রৌদ্র কণা দিন ফুরোবার আগে, ললিতঘুমের আগে কিছু অবসাদে জমিয়ে নেই এসব রিহার্সেল মৌনদুপুরে জমে শালবনবিহারের অচিন পাখির ডাক হারিয়ে যাওয়ার মনটোন এ এমন ক্ষণ দাহনবেলায় সিক্তার রুপালি শাওয়ার আর্শির ঝাপসায় জল পুঁতিমালা যুবকদুপুর তার শিশিরসঙ্গ বেলায় এ এমন সঙ্গীত, ধ্রুপদীয়ার অনিঃশেষের গান একলার সঁপে দেয়া ধুনে আসে কি না আসে ভেসে ভেসে বিহ্বল আলোর কার্পেটে অচৈতন্য সন্ধ্যার দেশ আলোর মশাল জ্বালো ব্যথা টাপুর-টুপুর ব্যথা আমার কৃষ্ণসখা পুষ্করে অবাধ সাঁতার; বাজিকর নই, এই পাখিপ্রাণ আকাশবিলীন এত প্রার্থনাসঙ্গী্ত আপনমুক্তির; পরাশ্রয়ী নই আয়ত চোখরেখার পথে যে ঘরের ঠিকানা বলা ছিল সে ঘর দেখেনি কোনো কবিতাকৃষক তবে এই পৃথিবীতে কোনোদিন কোনো সুর লুণ্ঠিত হয়নি জেনো বাঁশিসিদ্ধ জাদুই আঙ্গুল খেলে... এবার অধরে সন্ধ্যা ঘনায় রোশনির ফুল হয়ে ফোট অয়ি বন্ধা সময় - দেখ, উপড়ে যাওয়া নখে লেগে আছে পরিখার মাটি, যাবতীয় আত্মরক্ষা ============================================== ফেব্রুয়ারী ০৩, ২০১২

মেসবাড়ির লিরিক

পুরোনো ঘর পুরোনো তোর পুরোনো মেসবাড়ি সিংগেল বেড ময়লা চাদর না তোলা মশারী তুই নিশাচর ঘুম দিনভর ক্লাশ বাংকের ফাঁকে লাইব্রেরীর চুপটি কোণ মিষ্টি হেসে থাকে ‘সেলুনে যা চুল কাটা’ ঠোঁট বাঁকানো রাগ লাল পাড়ে সাদা শাড়ি ঠান্ডা চায়ের কাপ অবাক ভোর, ছিল তোর একুশ ফেব্রুয়ারী রাতের আলপনা শেষে মৌন প্রভাতফেরী এমন সব, শোক - নাটক, আনন্দ মিছিলে চিত্র প্রদর্শনীর হলে ক্যান্টিন-টেবিলে জমিয়ে গান আড্ডা তোর রাত করে মেসবাড়ি না-ঘুম রাত, কল্পনায় রাতটা যে দরকারী সেদিন ভোর, অবাক তুই, তোর কে এসেছিল? সাত সকাল মেসবাড়ি সাজিয়ে দিয়েছিল খুব গুছিয়ে ঘরটি তোর, টানানো মশারী সেই মেয়েটা বলেছিল, ‘দেখ্, গোছাতে পারি’ বুঝলিনা, কিচ্ছু তার- বুঝলি কি এর মানে সেই সকালের গল্পকথা কাকে পিছুটানে? পিছুটানের মানে জানিস তুইও যাযাবর লিখলি তবে কেমন করে সকালের অক্ষর! =========================== জানুয়ারী ৩১, ২০১২

সংলাপ

আমি বললাম মেঘ তুমি বললে বৃষ্টি জীবন বলল কান্না কান্না দেখে শেখ।। আমি বললাম নাচ তুমি বললে কষ্ট জীবন বলল গোপন পর্দা টেনে রাখ।। তুমি বললে নাটক আমি বললাম নদী জীবন বলল থাম নাটকপাড়ায় শোক।। তুমি বললে বীজ আমি বললাম ভূমি জীবন বলল খরা ভূমি কোথায় পিচ?! আমি বললাম শিশু তুমি বললে হাসি জীবন বলল বাউল সব শিশুরা যীশু।। আর কথা নয়, থাক্ তুমি বললে, ‘বলো’ জীবন বললো, ‘ভয়?’ কথায় মেতে থাক।। ============= জানুয়ারী ২৭, ২০১২

রূপলতা

চলনে ঈর্ষা তার হিমদিনে চিত্রক ছাপ, হাওয়ার পেখম সে নিশীথ সুধীর, সমাহিত তার বুকে আদিবাসী গান; হাতছানি মায়া তার কাজলহরিণ, বাসন্তী খুনকাল ইশারায় রূপলতা নাম। রূপলতা তুষজ্বর রূপলতা ওলোটপালোট রূপলতা বিলকুল দাগ নিয়ে উড়ে যাওয়া চোট চলনে লঘুতা ছিলো তোরসার ঢেউ লুকোছাপা নেই নদী জোছনায় ভেঙ্গে দিত চাঁদের কেলাস পুষ্যি ময়ূর তার হরিৎমহল, রূপলতা ললিত প্রণাশ। রূপলতা নির্ঝর রূপলতা অরূপা সরোদ রূপলতা ফিলহাল এক থেকে একের বিয়োগ

মুখের গোপন

এই হিম লিখে রাখে বন্দিনী জলরঙ মুখের গোপন পুরনো উপন্যাস, পুরনো পাঠাভ্যাস - মাঘের পাতায় পেজমার্কার, আজকে হঠাৎ কেন হলুদাভ পাপড়ির লুপ্ত ঘ্রাণের মাঝে কত কি কথা যে মনে কর; যার হরফে বারুদ নাই, শুধু আছে শমীদীঘি জলকথা মিহিনের ঢেউ, আর তো খোঁজেনি কেউ খোঁজের করুণ; উপহারবৈশাখ রোদমলাটের বই এমন বুকের কাছে আর কি রেখেছে কেউ, আদ্যপ্রান্ত পাঠ কতবার, মিশে থেকে চোরাকাঁটার মাঠে ছুটে ছুটে কার আর ঘাসফুল রাত্রি অমন; রাত ধরে জলরঙ, আঁধারবন্দিনীর হিমছাপ মুখের গোপন ===================================== জানুয়ারী ২৫, ২০১২

এসো

জ্যোৎস্নায় ভেসে যাবো ভেসে যাবো ও আঁখিজল বন্ধু আমার, আমাদের মৃত্যুতে তোমারও মৃত্যু জেনো মৃত্যু এমনই মহান। বিদায়ে মৃত্যু আছে মিলনেও মৃত্যু থাক শমন আসুক মুক্তিময় জোছনায় মাঘ শিশির পেরিয়ে ফাগুন চৈত্র বৈশাখ এই তো কাছেই... কোন বুদ্ধপূর্ণিমায় দেখা হোক জবাকুসুমে হোক আলোনিশার বোধন, নূপুরনির্জনে তুমি সেইরাতে এসো সর্বনিঃস্বের সুখ, বিসর্জন শেষে ঢুলির ঢোলে লেগে থাকা সিঁদুরের মত মহান প্রয়াণকথা। অসহ বুদ্ধপূর্ণিমায় এসো সেই আলোনিলীনতায় দেখা হোক, আমাদের মৃত্যু হোক। ........................ জানুয়ারী ০২, ২০১২

মুহূর্তকথা

১। অন্ধকারের গুল্ম-লতাও আলোরেখা চেনে ----- ২। বিদ্ধ আছে একটা শোক, চুলের আবছায়ায় হাসিচোখ ফুল। ৩। আমি তার সব কথা সে আমার চুপ। ৪। কালার ব্যাংক-এ খুঁজে পাবো এক বৃন্দাবন রঙ? ৫। চিঠি দিও খামে বন্দী এক টুকরো তুমি ৬। ডায়েরির যত অক্ষরে ফুটে আছে খুনটানা পপি না না ডায়েরিতে কবিতা লিখো না ৭। ঘুমের মাঝি সাঁতার শিখিনি ঘুমের মানে কী চক্ষু খুঁড়ে স্থান দিয়েছি একটি গোমতী ৮। আমি তো মুখর সব কবিতার কথা আমাকে নিয়েই তার যত মৌনতা ৯। ঘুম সুরে কেনো জাগে নাচের নূপুর সেই নূপুরে ভাঙ্গে যে ঘুম যেন একটা একটা করে ভেলিয়াম...... পদ্যহরফ হয়ে জাগে ১০। সন্ধ্যাকিশোরী, রাতের বয়েস হলে তোমারও কি মনে পড়ে কৈশর? ১১। তার প্রিয় কোন বাগানে ফুল জ্বেলে দিতে আকাশও বৃষ্টি হয়ে ঝরে, সজল চোখ দূরের বার্তা কিছু নয়। ১২। পৃথিবীর প্রায় সব আয়নার পারদ প্রলেপে কিন্তু ভুল প্রতিবিম্ব। ১৩। সাত সুরে বয়ে গেলে ঐ চোখকে ঝর্না বলি আমি। ১৪। কুয়াশাআড়াল এই হুহু টান ভোর তোমাকে দেখিনি আমি ডুবে গেছি মধুমতি নদী ১৫। নীরবতা এলে শেষমেশ, আমরা সবাই বুঝি আমরা যে কে... ১৬। দিনে চেনা বহুজন রাতে এক জেগেছে আপন ১৭। তীব্র শীত... কার নামে ওম কুসুম? কার নামে ভুল প্রসূন? ...