খেয়ালী লেখা - এবার পঞ্চাশটি

{১}
স্ট্রবেরীতে গোপন চোখ
আর মৃদুলাও দৃষ্টি প্রবণ

{২}
চারুসাজে ফোটাও দেবশিশু, প্রাণের প্রতিমা গড় তুমি। বোধনের বেলা হয়ে এলো, এখনই অধীর সবাই ছুটে যাবে। আশু খুলে যাবে জোছনা কপাট। আমি তবু তোমারেই দেখি। তোমারেই দেখি, শিল্পী প্রীতিভাজনেষু।

{৩}
কবে তোর মোহন গাগরি থেকে
দহন দুপুরে দিলি আঁজলায় জল,
ঠোঁটে তুলে থমকে গিয়েছি, দেখি
করতলে মুখ তোরই দোলে;
সেই রূপবারি ছড়িয়েছি আজ
খুঁজে নেরে বৃষ্টি মিছিলে।

{৪}
মোহন বাঁশিও শ্মশান সুর তোলে
ভুল থেকে অভিমান হলে

{৫}
রোদের পাখিরে
তোর তৃষ্ণা নিয়েছি,
আমি বরষায় আছি।

{৬}
চোখ মুছে ফেলো না আকাশ
ঐ চোখে কাঁপে ঝিলমিল
ঈশানের না জানা নীল

{৭}
দিয়া জ্বলে
অন্ধকারের মত জ্বলে
শংকরী'র দোরে কড়া নাড়ে শুধু বর্ষা বাতাস

{৮}
ঘরে আর ফিরছি না পল্লবী
ঘর হবি?

{৯}
ওরকম স্নেহকথা কেউ জানে না
সাদা শাড়ি-তে ঘুমের মত ঘ্রাণ
তোমার ঘোলা চোখে আদরের মত জল
উঠোনে আচার বয়ামে তোমার যত্নস্বাদ
হরিতকি গাছের নীচে তোমার ভিন্ন রান্নাঘর
পাথরের থালা আর গ্লাসে শুদ্ধ ঝিলিক...
ওরকম শুচিস্নিগ্ধ ছাপ আর যে মেলে না
ভোর সাতটায় ট্রেন আসে এখনো ঠাকুমা
ভোর রাতে পুলি পিঠে
ডেকে তোলা...... ঘোলা চোখে আদরের মত জল...
আজ কেউ কাঁদতে জানেনা, ঠাকুমা

{১০}
যতই আড়াল থেকে মেঘে ডোবোনা, জোছনা
-- নির্বাসনে যাবো না।

{১১}
ওহে মায়ামোম, জ্বলে থেকো অন্দরে
কারো চক্ষে পোড়ো না,
চিরআলোদায়ী – অক্ষরে মূর্ত হয়ো না।

{১২}
মাধবকুন্ড, জলের পাহাড়
জল যেখানে নাচে-
শপথ লেখা আছে।

{১৩}
মেঘকাজল দূর জানি
বর্ষা নিবিড় বন্ধনী

{১৪}
ফের শৈশবে ফিরে যাও। বালকের পকেট থেকে নিয়ে এক মুঠো আলো-লাগা মার্বেল ছড়িয়ে দিলাম তোমাদের ভোর উঠোনে।

{১৫}
মাঝরাতে ঝড়,
ঐ বারান্দা পাখিনীড়ে
ছুটে যাস একা তুই,
মুনিয়ার ছায়া।
ঝড়ে ঝড়ে ভোর হয়, তখনও সজাগ
ঝড়ে তোর গাঢ় অনুরাগ।

{১৬}
এখনো যে আশা আছে,
জ্বলে আছে শিমুল অন্ধকার
জলপাই নদীটির জল কেটে শিকারার মাঝি
নিয়ে যাবে তৃণদেশ মৌর্যপাহাড়;
আশা আছে ডাকলেই হরিণেরা কাছে আসবে আবার

{১৭}
আঁখি ছাড়া তুমি তার সমস্ত শরীর,
ময়ূরাক্ষী-রাত।

{১৮}
নাইট গাউন পরে নেমে এলো শব্দরা,
নদীর বাঁকের মত ইশারা যাদের;
কণ্ঠে কাল-বিষ, আঙ্গুলে জলরঙ-
হিপনোটাইজড...
রাতের পোয়েট !

{১৯}
প্রথমতো ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাক বাহিরের কিছু
পাজর হাড়ের টুকরো ব্যাঙ লাফে
ছুঁড়ে মারি তোর বুকে রানীদীঘি
জানি নিবি গভীর অতলে শেষে
নিমজ্জনে হবে বন্দেগী

{২০}
বেহাত কোরো না মৃন্ময় হীরামন
রাতবর্ষায় বোলো তারে
প্রার্থনা, দূর করে কাছে;
বেহাত কোরো না তুমি...
বিসর্জন আরো দেরি আছে

{২১}
বৈরাগ বাড়িতে এসো
যমুনা দীঘল মেঘ
তাপ মুছে দাও ধারা স্নানে
ভেজাও যে গান গাইতে জানে-
প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে...

{২২}
ঐখানে রক্তিম উত্তাপ
কৃষ্ণচূড়ার ছায়া থেকে সরে এসো

{২৩}
আলোর ধারা স্নান
আমার মায়ের নাম

{২৪}
দোয়েল এসো দৃষ্টি এসো স্বপ্ন এসো শব্দহীনের ঠোঁটে
আমার চুপ তারাটি হয়ে ওঠো একটি পাখির নীড়

{২৫}
আমি বৈশাখী তোমাতে পুড়েছি
সকাল দুপুর রাত্রিতে
কালবৈশাখী ধুলোঝড় পরে
আষাঢ় বলেছে ভিজে যেতে

{২৬}
কাচশিল্পে মুগ্ধ হয়েছি শান বাঁধানো দিনে

{২৭}
কীভাবে কে জানে
কিছু মানে থাকে অনুমানে
জুয়ারীর নেশা তবু থাকে শেষ দানে

{২৮}
অক্ষরের পর অক্ষর শব্দ
শব্দের পর শব্দ বসালে রাত
রাতের পরে রাত জমালে বৃষ্টি

{২৯}
তাপদাহ খিটিমিটি
উদ্ভ্রান্ত আবেগ
মুঠোফোন অনুচিঠি
কোহিমার মেঘ .........

{৩০}
তোর সমস্ত দ্বিধা-সন্ধ্যাকে রবিগান শুনিয়ে দেবো

{৩১}
শুধু বিভক্তির দোষ কেন
কিছু চুপ থাকে আনন্দে
ভোর বা সন্ধ্যে
বিভক্তিচিহ্ন কিছু নয়,
আশাবরী ইমন, ভোর-সন্ধ্যের তান
ভোর-সন্ধ্যে সূর্যে রক্তটান--------

{৩২}
তুই এলে এই দুপুরও কেমন লেমনগ্রাসে মিশে থাকে রোদ রোদ অ্যারোমা,
তুই এলে পাওয়ার কাট ফুঁড়ে চোখ ঝাপটায় লিরিল বিজ্ঞাপন

{৩৩}
সূর্যোদয়ের মত খুব স্পষ্ট নও
চাঁদের মত স্থান করে নাও---- ধীর
হারাও জাগো, জাগো হারাও
হায়, তোমার চন্দ্রস্বভাব!

{৩৪}
লোককাহিনী হব,
কোনো বোধিনীড় আদিবাসে দুজন-
মুখে মুখে রব।

{৩৫}
বিলুপ্ত ব্যথার সোনা-ঘর
আমাদের তৃতীয় সংসার
হারিয়ে যাচ্ছে দেখ
মন ভালো ভালবাসা যেই ঘরে থাকো
তার পথ ভুলে যায়নি সবাই?
হায় লাল ঝুঁটি উডপেকার
লুপ্ত আলোপাখি
ফিরে এসো...

{৩৬}
আরো একবার হরধনু থেকে তীব্র ছুটে যাবে তীর, সূর্যতমার দেশ। মায়াবলে বহ্নিমান করে দেব স্বপ্নজল গহন শরীর। করুন নদীর বাঁকে রাত বাঈজির ঘূর্ণি থেকে ছুটে যাবে নৃত্যস্রোতধারা। বুকজুড়ে ডাক দিয়ে গেলে জাদুর ডাহুক, আরো একবার হবে যুগল নির্বাসন।

{৩৭}
ঢাল দেখে মনে হয় বৃষ্টি প্রবণতা
নেশা ধরা চোখে তুই
বর্ষা শ্রীমঙ্গল...

{৩৮}
শ্বেতপাথরে জমে আছো বেলুড়, সেই গ্রীষ্মদুপুর। কিছু অরূপ হিম বুকে নিয়ে কার যেন চোখ ভিজে গিয়েছিল, আলোকলতার মত চোখ। ওরে দুরপনেয় রৌদ্রের রঙ, তুই সেই জল মিশে মিশে হলি স্বপ্নতম ছবি। সমাচ্ছন্ন স্মরণ হলি গঙ্গা, নৌকার এপাড়-ওপাড়। আহা বেলুড়, চিরসকাল বুকে নিয়ে এখনও কি আছো?

{৩৯}
ভালোবেসে হারিয়েছ হুঁশ?
ভালোবাসা কিছু নয়
মেপে দেখা, কে কতটা করেছে আপোষ ।

{৪০}
পুরনো হয়েছে গান,
বিকেলের অক্ষরে কিশোর বয়েস কবিতায়...
পুরাতনে সুপ্রিয় রাত্রি ঘনায়, রুবী রায়।

{৪১}
একটু সময় নেব
একটু গোপন
চিঠিঘর
নীল খাম
হঠাৎ এমন

{৪২}
আমাকে মুগ্ধ কর নিদ্রায়
অস্পর্শে, যেখানে বস্তু অবস্তু সব কবিতা,
সব কবিতা যেখানে হয়ে ওঠে মনপুরে বাঁশি
তারপর হয়ে ওঠো প্রতিটি সকাল

{৪৩}
আমাকে পথভুলো করেছিল বনমৌরির ঘ্রাণ। আমি সেই পথে হেঁটে দেখেছি লাজুক বাগান, আম্রপালির সাজ। ভীষণ একলা লাগা দুপুর থেকে আমাকে সেই পথ নিয়ে গেল সাতবর্ণা বোশেখের মেলা, শাদার আলপনায় লাল রেখাপথের আঁচল তোলা শহরতলি। তুমি সেই সাজে অশেষ হয়েছ ভুল পথের জমিন, অশেষ রয়েছ আজো বৈশাখ, শুভদিন।

{৪৪}
খুব রাত হয়েছে যেই
আমি দূরের খবর নেই
সেই চুপ জাহাজের ঘাট
বিকেল পাঁচটা বেজে আট;
মাস্তুল, আবছা অনেক দূর
রুমালে মনমরা রোদ্দুর
খুব রাত হয়েছে যেই
আমি নদীর খবর নেই

{৪৫}
হে অরণ্যগন্ধী কাঠ, আমারও আছে কাঠশিল্পীর পেন্সিল
{৪৬}
চিত্ররেখার পথ বলবে
চঞ্চল আঁধারীর বাড়ি
দীপশিখারাও জ্বলবে
যেন চিনে নিতে পারি
পথ হাঁটা পথ
বন্ধু-
দূর হাজারদূয়ারী
যেন চিনে নিতে পারি
বন্ধু

{৪৭}
তুমি মায়া লাগা শ্যামল বনের নাম
তুমি সনাতন,
-ভালোবাসা
তুমি সুখ
চির অসুখের নাম
-ভালোবাসা

{৪৮}
ঘুমবতী মেঘ করা চোখ,
পলক গহনে তোর
ছলছল তারা
রাত থেকে নেয়া তোর
আড়ালের নীল মাসকারা
- বন্ধু আমার

{৪৯}
মনদোলা মায়ানাম প্রার্থনার আকাশ
একেলিয়ানা এই, হিমছায়া মুখ
মধুরা করে না তালাশ

{৫০}
চন্দনে গন্ধ মিশে থাকে
তাই তো আছি

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অনুবাদ - Gloomy Sunday (আত্মহত্যার গান)

অনুকবিতা

অনুবাদঃ “আফরি” –“ the most beautiful one!”