আবার কিছু খেয়াল... (৫৯টি)

{১}
কিছু আত্মহত্যা প্রবণ পাখি
উইন্টার ফরেস্ট থেকে উড়ে গিয়েছিলো
সূর্য লক্ষ্য করে, জীবন-আনন্দের দিকে...

{২}
তারার মেয়ে
সন্ধ্যা নামে
সন্ধ্যাতারা
রাত যেখানে

{৩}
আর্টিমিস,
বিদ্ধ হতে হতে জেনেছি
জীবন অন্যখানে;
হে সুবর্ণা শিকারি
রাতের অরণ্যে যাব আশ্রিত পাখি
অভয় দাও
আদি পৃথিবীর শুদ্ধতার বুকে
ঘুমিয়ে পড়ি

{৪}
একটি রুদ্ধ কথার মত ঝড়
চলে যাচ্ছে সমুদ্রে দিকচিহ্নহীন

{৫}
খুব জটিল তো নও
সমস্ত বন্ধনী তুলে তুলে
দেখেছি সরল অংকের ফল-
এক

{৬}
আষাঢ় সূর্যের মত বেমানান তোমার এই বিষণ্নতা

{৭}
বেলি সাজি, কারুকাজে নিপুন...
তুলছো সৌরভ
আঙ্গুলের চুপধারা ভাঁজে ডাক ভোলে মুনিয়া মাতাল
......... শাদা শাড়ি
আর

এই

ভ্যানিলা সকাল

{৮}
রাত গভীর হচ্ছে
বেরিয়ে আসছে অন্ধকারের লেজার প্রিন্ট
স্পষ্টতর শঙ্খ গহীন রেখা
রেখার ভাঁজে ভাঁজে দূর
মানুষের মুখ

{৯}
মমতার কথা ভাবতে পার
বিকেল পাঁচটায় ছেড়ে যাওয়া ট্রেন

{১০}
এই প্রান্তিক কৃষকের কুটিরের
ভাঙ্গা দরজা দিয়ে ঢুকে পড়েছে
চিরস্থায়ী আষাঢ়
এ যাপন ঋতুচক্রহীন

{১১}
ঘুম ধরেছে গান
শান্ত রাতের নাম

{১২}
টাই নটে
স্থির হয়ে আছে নাচ
আঙ্গুলশৈলী

{১৩}
চোখ পোড়ে, রোদ জুড়ে হাসি
-বৃষ্টি প্রত্যাশী

{১৪}
তোমার স্নান বাজনার মত বাজে
হে বিষণ্ন মেঘ
ঝরে পড়
আমি নিস্পৃহ তৃণ মুখ
তৃষা নেই আর
শুধু পায়ের শব্দ শুনি
জলরিমঝিম .........

{১৫}
শুধু এই কথা বললেই
লেখা যেত দুইটা জীবনী-
“চল্ রাত হয়ে নামি”

{১৬}
হায় মহুয়া বন,
কার কাছে যাই বল্!
মৌসুমি বেলা আর ছিল
ফুল ও ফসল মৌসুমি

{১৭}
রোদের ইউনিফর্ম পরা
স্কাউটগার্ল
শুধ্রেছিল, ভুল পথে আছো
ঝর্না পাড়ের তাঁবু
ঐদিকে

{১৮}
সন্ন্যাসী হাওয়া,
বানের নদীকে বোল
অত ভাল নয় বাড়াবাড়ি,
এরকম ডুবে মরা বসত বাড়িকে সাথে করে
সীমানা পেরলে নদী শুধু ভুল করে

{১৯}
ছুরির পোঁচ চুরি করে নিয়ে গেছে নীল,
কখনও আকাশ
কখনোবা চোখ

{২০}
এইতো এইখানে পথ খোলা আছে
ঐসব বাগানের অপসৃয়মান রঙ নিয়ে
ঘুম মাখা বু্গ্যানভিলিয়ার আর্কেইড;
এইতো এইখানে স্লিপওয়াক ......নির্লিপ্তি

{২১}
এমনো হয়,
লুকনো ফুলের গন্ধে
ভয়

ক্যানি রজার্স -
ঠোঁট থেকে
‘লে...ডি’
মনে পড়ে কিছু দাবী
যারা প্রতিশ্রুত নয়
কিছু চুমুকসময় ফুলের গহীন...
অগোচরে রয়

{২২}
এই ঘুম ঘুম মৌসুম
এই ঝুম কান্না গুম খুন
মেঘ তুই জল বুনে আষাঢ়
শ্রাবণ, বোন আমার
আকাশ ঝরা পদ্য শুনবি আয়...

{২৩}
মন দোলে তন দোলে রঙরানী রাঙিয়েছে সেই বৃন্দাবন
বাঁশিধারী বাজিয়েছে পুরনো শ্রাবণ

{২৪}
সমস্ত প্রহরার কাছে বসে আছে
তুলতুলে শিশুমুখ
হাত বাড়ানোর ইচ্ছে

{২৫}
এরকম কোমল নামে
প্রকৃতিও তীব্র ছোবল দিতে পারে
যেমন সমুদ্র প্ল্যাসেন্টা থেকে নার্গিস

হৃদয় সাগর থেকে বড়

{২৬}
আমিও তোমার বুকে শুয়ে পড়ি ছায়া
কান পেতে আলোর বিরহ কথা শুনি

{২৭}
জীব দাহ দেখ এইখানে
প্রেতলোক মিথ্যে ভয়ের

{২৮}
এই সমুদ্রযাপনে তৃষ্ণার মত কিছু অদৃশ্য থাকে, শ্রাবণী
ঈর্ষা ভোল

{২৯}
এই পাতার শরীরে শব্দের সবুজ ভাইপার
আঘাতযোগ্য নয়

{৩০}
হেডবেন্ডস
রুক্ষ রাস্তায়
রঙমশাল এদিক-ওদিক

রিক্সা আস্তে চল
সামনে স্কুল

{৩১}
হায়রে হাওয়া,
উচ্ছল হওয়া যেত তবু-
দেখ এই শান্ত শ্রাবণে
তার চুলে মৃত্যুর মত ঘুম

{৩২}
তার ঠোঁটে তুলে নিয়েছিল সে সমস্ত বসন্তের শিস
সমস্ত কবিতা তার গান
মলাটের আদ্যপ্রান্ত সব কবিতা শোনানোর পর
এখন অঘোর বৃষ্টি
অচেতন সন্ধ্যার পথ

{৩৩}
চোখ, হৃদয়  হতে জান, শিউলী তলার
ফুল সজ্জার, আনন্দ-পূজার; পূজার লক্ষ্যে যে আত্মদান
তার দেহ কুড়িয়ে চক্ষু খুব কাছে রেখ, কেননা
মৃত্যুর পরে মানুষের দেহ দানের মতই
কিছু উপযোগ রেখে গেছে সে

{৩৪}
বৈদুর্য মণি নয়
নয় কোন প্রত্ন খোঁজ,
কবিতার কৃষ্ণবিন্দু তুমি
সন্ধ্যার পথ ধরে অন্তহীন রাত্রির বুকে
হারিয়ে গিয়েছো;
শব্দ চক্ষু আমার

{৩৫}
কিছু হাইকু----

#পিপাসা ভীড়
কারো মনে নেই যে
আজ ড্রাই ডে

#ঐ জলে মায়া
হরিণ জল খাচ্ছে
নদীর পাড়

#চাঁদ ডুবছে
সূর্য কিন্তু একাই
এখন ভোর

#ফল নিঃশেষ
পাতায় চুপ জল
শ্রাবণ মাস

#ঘোলা জানালা
বহু বর্ণ সবুজ
পাহাড়ে জীপ

#নিদ্রিত চোখ
ঘুম সে শিশুকথা
বৃদ্ধ ঘুমায়

{৩৬}
এ কেমন ছড়িয়েছ
ক্লিকখুশি
এ তল্লাটে যেখানেই যাই
তরঙ্গ তোমার
...ওয়াই-ফাই

{৩৭}
সুর কোন শেষ নয় শুরু
তবু তুমি বিষণ্ন রঙ, পার্পেল
হারমোনিকা ঠোঁটের অদূর

{৩৮}
টব থেকে চুরি হয়ে গেছে ফুল
আর কিছু প্রতিদিন,
না শুকানো কাপড়...
একটা মানুষ তবু এইসব তালিকা ভাবে
বারান্দায় রকিং চেয়ারে

{৩৯}
আমাদের সড়ক বিভঙ্গ দেখে
হেসে ওঠে কালের নাগিন
কুলফি ওয়ালা দেখে তুমি ভাব সিদ্ধির কথা
আমাদের গোপন চিন্তা গুলো
খুঁটে খায় অজানা শালিক
তার বাড়ি বহু বহু দূর

{৪০}
লবনের আগ্রাসনে ফুলে উঠেছে দেয়াল
আমাদের বাসা-বাড়ি
আমাদের প্রিয় দক্ষিণ তোমার দখিন হাওয়ায়

এ বিপন্নতায়
আমাকে
এক বন সুন্দর
ডাকে

{৪১}
হে আমার নতমুখী ফুল
ধীর তাকাও রুপালি পতঙ্গ ডানায়
সেইখানে জীবনের ক্ষুধা
জীবনবিস্তার

আর আমি যে মানুষ
তোমাকে কাছে পেতে ছিঁড়ে ফেলি শুধু--
ভয় নাই
এইবার সরে যাই
হে আমার নতমুখী ফুল

{৪২}
এই বৃক্ষ সাক্ষী আছে-
জ্যোৎস্না আর দর্শক
একসাথে দেখবে বলে
নিয়েছিলে বৃক্ষবাস;
এই বৃক্ষ সাক্ষী আছে,
সাক্ষী আছে প্রতারিত
সারস

{৪৩}
নক্ষত্র দেখুক
তার মত ঝিলমিল
হয়তোবা নয়
জোনাকির মত সব
হৃদয় যেন
রঙ আর আলো খেলে
বৃষ্টিবনে পুঞ্জীভূত রয়

{৪৪}
একটি নিঃসঙ্গ বুড়ো হরিণের সাথে
কথা বলত অপরিণত বন, সাহসের কথা
বেঁচে থাকবার কথা
এরপর সেই বনে একে একে বসন্ত বাহার
বনের বয়েস বাড়ে বুড়ো হরিণের বুক খালি করে

{৪৫}
বিন্দু থেকে ভুল মুছে ফেলছি না
বৃত্ত উন্মুক্ত থাক অসীমের দিকে
এক মুহূর্তের ভুলে তাই
সব অভিমান জড় করতেই পার

{৪৬}
স্বর্গ কিছু শোনে

যেই কথাটি
বৃক্ষ বলে পাখির কানে কানে,
পাখি থেকে যেই কথাটি আকাশ হতে জানে
আকাশ থেকে বৃষ্টিতে চার মুগ্ধ চোখে নামে

কান পেতে রয় স্বর্গ শুধু
সেই কথাটি শোনে

{৪৭}
একটা নৈঃশব্দ্যের ডাকবাংলোর
ঘুলঘুলিতে নীল চড়ুই হতে চাই
সমস্ত জীবনের অনুবাদ
রাংতার মত উড়ে উড়ে যাক
শুধু নৈঃশব্দ্যে
সঙ্গীতে.........

{৪৮}
অনেক উড়েছ ঘুড়ি
গোপন হাতের নাটাই
যা ছিল ভাঁজে
মুঠো বন্দী
তাকে চেন;
চিনে এবার এক
গোত্তায় নেমে এসো
কাচ-মাঞ্জার সুতো ছিঁড়ে
প্রসারিত হাতে
দুই হাতে

{৪৯}
পথ কি অসমাপ্ত!
গল্প?
ইশারার ভুল মানে করে
হেঁটে যাওয়াও
অতিক্রম
আর বুঝে নেয়া...

একটা হাসির মানে বেলি আর বেলি
কীট ক্ষয় গোপন গূঢ়তা
অপ্রকাশ্য-
তাই থাকে
নিপাট শহর

ভোরের বালক বলে-
নিদ্রামুগ্ধ থাকি
গভীরের কথা বলে তাও

লুপ্তির দেশে আছে
প্রকাশ্য চোরাবালি
ঘুম নেমেছে চোখে যাও

{৫০}
ফিরতি উড়ান পাখা মেলবে না
কত অজস্র গান শোনা
রাত্রি পারুল বোন ফিরবে না আর ফিরবে না

{৫১}
তবু কথা থাকে, থাকে না কি? ‘বাঁধব’ ভীষণ এমনতর ডাক
অলি’র কথার মত হাসি, নিহিলিস্ট রেখেছে গোপন অন্দরে
নির্লিপ্তির রোদে পুড়ে যাবে না কখনও বাগানের ওড়ানো পরাগ
তবু মোহ কিছু থাকে, রচনার জোড়, কথা থাকে- বঁধু সুন্দরে

{৫২}
মুক্তি
.........
বর্ষার জর্নাল থেকে
রূপসার দিনলিপি
পড়তে পড়তে আমি দেখি
রূপসা ব্রীজ বড় তন্দ্রাকর
হয়ে উঠেছে
ভয়াবহ নীরবতা নেমে এসেছে সেখানে
নীচে তার অস্পর্শী সুদূর পিয়াসী নদী
দূরে কারখানার শ্রমিকেরা কথা বলছে-
“ধুর, এই কাম আর ভাল্লাগেনা”

{৫৩}
স্বপন
.........
একটা ঈগল মুখো নৌকোর
মাঝির কণ্ঠে
ভেসে আসছে
পারস্যের গান
আর চাঁদ গলে
সাগরের জল
রুপা-রুপা
এই অবিশ্রান্ত সাঁতার
থেকে
কেউ
তুলে নাও

{৫৪}
নাম
......
নাম বল না
মিথের হরিণ
বল নাম।
প্রিয়তম বন্ধু
অথবা
শত্রু প্রিয়ার
ভিন্ নাম,
ভিন্ন আচার;
তবু তুমি
হিরণতীর
চোখে এসে বিদ্ধ হলে
এক ও একমাত্র
মৌলিক পরিচয়ে !

{৫৫}
টিপ
.........
ভ্রমণের এক ভোরে
দেখেছিলাম
কাঞ্চনজংঘায় সূর্যোদয়,
বরফ প্রিজমে
সাত সাত রঙ।
আর আজও হঠাৎ
হলুদশাড়ি
ইতির শ্রাবণ
বিচ্ছুরিত
ভোর।

{৫৬}
কলম
......
একটা নক্ষত্রের বিস্তার,
এই চক্ষুর
দূরবিলাসের লিরিক
আর কিছু
শীত সন্ধ্যার
কফি গুঁড়ো
হলুদ পৃষ্ঠায়

{৫৭}
চশমা
.........
আরো স্পষ্টতার?
নাকি ঢেকে রাখ
চোখের আদল!
হুম, ‘বয়েস বেড়েছে’, বলা...

মাঝে মাঝে চোখেও কুয়াশা জাগে,
জল
ধুসর কাচ থেকে
আঁচল টেনে মুছে ফেলা
কাজলের ফুল।

মুখ
তখন চেনা,
অচেনা ভীষণ।

{৫৮}
ছবি
......
খুব দৌড়ে যাচ্ছিল
সকাল দুপুর বিকেল
রেণু ঝরা রাত
সেই অর্থে কারোই বিস্তার নেই
এই যেমন সংকোচন সূত্র মেনে
কোন এক গোধূলী
আমাদের দুই মুখে চুমু খেয়ে চলে গিয়েছিল
নক্ষত্র তোড়ন ধরে।
তবে আজো দেখ-
নদী ছুঁয়ে
কাশবন,
কাশবন ছুঁয়ে ছুঁয়ে
শাদার ওপর কচি কলাপাতা স্ট্রাইপ পাঞ্জাবী
আর জামদানী-কাজ আঁচলে কেমন
এখনও সে সুস্থির বসে আছে!

{৫৯}
জীবনানন্দ
...............
প্রাজ্ঞ বৃদ্ধের মত তুমি ট্রাম
তাই তুমি ধীর
তাই তোমার অধীর ঘন্টা আজো...







এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অনুবাদ - Gloomy Sunday (আত্মহত্যার গান)

অনুকবিতা

অনুবাদঃ “আফরি” –“ the most beautiful one!”