নিরাকার
ইভনিং ক্লাশ শেষ। এই সলমা-জরির কাজ রাতময়... নৈশ-বিরতির ঘণ্টা আর বাজছে না। অকটেন গন্ধে চোখ আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে, কারণ এ গন্ধ তরতাজা করে দেয়। সুন্দর কখনো কাজে লাগে না, যা আমাদের কাজে লাগে তা-ই অসুন্দর কারণ তার জন্ম প্রয়োজন থেকে, আর প্রয়োজন বড় কুৎসিত।
ঈশ্বরের রোমান্টিক মানস কথা বলে, ঈশ্বরের পরিণতি বলতে কিছু নেই তাই। এই পরিণতিই হচ্ছে বৈশ্বিক। তাই কবিতারা আর পূর্ণেন্দু পত্রীর মতো হয় না।এসো, বছর বছর জাগ্রত ছিলে তুমি, এসো গহন নিদ্রার দিকে। এসো অরণ্যের ঘনতায়, পাঠ করো নিসর্গ-পুরাণ। সৌন্দর্য তোমার প্রাণসত্তার ফসল। দেখ প্রজাপতির পায়ে চুমু খায় গন্ধরাজ, দেখ আমার মুখে পৃথিবীর ঘাম। বনধুধুলের বাঁশবনে শনশন ছায়া-অন্ধকারে ঐ আমার উঁকি মারা বাঁ-চোখে হঠাৎ বিদ্ধ হয় কাঁটা, তবু আর একটি চক্ষু দিয়ে আমি দেখে যাচ্ছি অন্তিম অন্ধকার।
যদিও শুধু কবিতাই কালোত্তোর, জীবন কিন্তু ম্রিয়মাণ। বোদলেয়ার প্যারিসে একদিন তুলিভরা কমলা রঙ তুলে আকাশটা ঢেকে দিলেন, এরপর নিলেন কালো রঙ, অন্ধকার না হলে আলো ফুটবে কী করে! নিঃসঙ্গতা কবিকে দেয় বাল্মীকির তপস্যা, এ চাঁদের চরস দেয় মগ্ন সমাধি, আর মৃত্যু দিতে চায় নিরাকারত্ব-- সবচেয়ে দামী চোখমণি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন