পনেরো আগষ্ট, ২০২৪
জীবনের তেরোটি বছর জেলে থাকা
১৯৪৭-এর ছাত্রনেতা তুমি
দলের সভাপতি
আমার মায়ের ভাষার জন্য
১৯৪৮-এর ১৫ই মার্চ তোমার নেতৃত্বে
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলা হয়
জেলে ভরা হয় তোমাকে
তুমি জেলে অবস্থান করেই
অনশন পালনের সিদ্ধান্ত নাও
আর এই অনশন ১৩ দিন স্থায়ী ছিল
তারই রূপ দেখ আজ
এ কবিতা বাংলায় লেখা, আমরা বাংলায় পড়ি
১৯৬৮-এ আগরতলা মামলা
৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান
৬ দফা
৭০-এর নির্বাচনে বিপুল জয়
ভুট্টো আর ইয়াহিয়ার চাল আর
নির্বাচিত নেতাকে অস্বীকৃতি
বঙ্গবন্ধু তারপরও তুমি অনেক চেষ্টা করেছো
কিন্ত না, পশ্চিম পাকিস্তানের রক্ত নিশানা
তখন এই বাংলার দিকে
তারপর নিজেদের সত্ত্বাকে এই বিশ্বকে জানান দিতে
১৯৭১-এর ২৬-শে মার্চ তুমি ঘোষণা দাও -
“এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক। জয় বাংলা।“
৩০ লাখ শহীদ
২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা
তারপর ১৯৭৫
তারপর ১৫-ই আগষ্ট
৩২ ধানমন্ডির বাড়িতে তুমি সহ ১৭ টি লাশ
আজ আর আমাদের কী কী দেখার বাকী আছে?
স্মৃতিদায়ী পোড়া ৩২
জাতির পিতার মুখ থ্যঁতলানো ভাস্কর্য
নাকি মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে মাটি লেপা গ্রাফিতি
অথবা পোড়া মন্দির
লাশ আর লাশ!
আজ এই আগষ্টের ১৫ তারিখ
তোমার আত্মদান বেজে ওঠে কোটি মানুষের বুকে
আজ আরো কেঁদে ওঠে সন্তানহীনা মা
পিতার মুখ ভেসে ওঠে মাঝ রাত্তিরে মেয়েটির চোখে
ভাই-এর লাশ দেখে আসা ভাই আজ কাতর
আজ এই আগষ্টের ১৫ তারিখ
তোমার ৩২-এর বাড়ি, যা কিনা কোনো শাসক হাত পর্যন্ত দেয় নি
সে বাড়ি আজ ছাই
আমরা নাকি দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি
এ স্বাধীনতায় বাংলার মানুষ শুধু আকাশে দেখতে পাচ্ছে
কালো শকুন
পরাধীনতার অশনিসংকেত
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন