পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

স্নেহ

গহন গহন বন  সেই বনে বানপ্রস্থ অধিবাস মনে পড়ে মনে পড়ে ঠাকুরদালান  মনে পড়ে মুক্তির গান  তরুমর্মরে সুর ওঠে, কোন হাওয়া গান মনে করে থির নয়না তুমি  সে আঁখিতে দেশোয়ালি সাজ মনে পড়ে রুসুমাত মনে পড়ে পঞ্চালে প্রাচীন যমুনা বাস করে নদীও কি সুপ্রাচীন  নাকি নদী নিত্য নতুন  সে তো এক দানগান  ছন্দ দীক্ষাগুরু আজো তো ফেরে নাই ঘরে  আজো রক্তবীজের ঝাড়  তুমি-আমি একাকার পঞ্চালে স্নেহ বাস করে 

দূর

এসব পঙক্তি লিখি শিশুর খাতায় সনেট তাড়িয়ে চলি ঘাসনৌকায় সে যাপন তীরভাঙ্গা নদী সে তো মা মাগো তুই জেনে নিস কে গান মাতায় শিয়রেতে মন্দির আর নামগান লয় নিয়ে ভেসে আসে তবু অশ্রুধারা ঠোঁটে আসে সেই নাম শুধু ঠোঁটে আসে মনতরু হাওয়া আনে জীবনের ফেরা স্মৃতিহীন আজ মেখে বহু রাতরঙ অভিমান করে আর নেয় যে সুদূর কন্যাকাল আলোরাতে মিটিমিটি জ্বলে আপ্তদূতীরা গায় মালগুডি সুর সব ঘর খেলাঘর, নয় এতো জানা জোনাকির গুঞ্জন, আলো নেভে জ্বলে কমলযোনির ফুল ফুটে আছে নির্ভুল সেই ফুল ফুটে আছে দূর বিন্ধ্যাচলে

রাই

তুমি কি মোছ না রাই, চোখ এ নিদ্রা থেকে জাগালে কেন? কুলা থেকে শুভ্রশাদা চাল রঙ ঝরে চক্ষু তারায় জাগে গোধূলি রঙের মতো ঘরে ফেরা বনের রঙের মতো হরিৎ বিস্ময় সুরা সুপেয় নয় কিন্তু এ আচরণে প্রেমপ্রদর্শক চোখ তার প্রবাল-পান্না বুক তার ওপ্যাল-টোপ্যাস পায়ে তার মেনোকার নাচনূপুর তার প্রাঞ্জলতা, হেলেনিক ভাঁজ, তার চোখমণি উপচে পড়া রক্তে মেরুন গ্লাস তুমি কি মোছ না চোখ, রাই ? শরীরে রূপান্তরে তুমি রুপালি ছাই ঘাসে ঘাসে হরিৎ রয়েছি আমি ঐ সন্ধ্যতনু, আমি যেন ঐ হাতে আয়না হয়ে রই

প্রস্থান

অনন্তে আমারে নিও আমার প্লাবন চোখের কোটরে এ জীবন রেখেছি এই শেরপা যাত্রায় তোমাকে দেখিয়েছি উদয়প্রয়াস গিয়েছি বিষ্ণুপুর বালুচর গ্রাম চরকায় সুতো ছিঁড়ে গেলে হয় না যে বালুচরি শাড়ি অনন্তে আমারে নিও আমার প্লাবন এই ঝিনুক আভার ভোর দীপের মত ফুল দিয়ে এই মাতৃপূজা শেষে ছেড়ে যাই মায়া গ্রামবাড়ি জাফরিকাটা জানালা থেকে হাত নাড়ে মা বলে, সোনা-চাঁদি তারা আবার আসিস পেয়ে অনন্ত ইশারা Like Comment Share

জন্ম

জানি গলা শুনলেই মনুষ্যবসতি চেনা যায়   কৃত্তিকা নক্ষত্রের মতো আমি স্থির মানুষ দেখি  ব্যাঘ্রাস্য মুখ, সাথে দীপ্ত মিছিলের মুখ, নিরীহ  সংসারী মুখ দেখি আমি। এ সমস্ত চরণচারী রক্তমার্গ ধরে হেঁটে যায়, কোনো যুদ্ধবাদ্য নাই  নাই কোনো কৃতাভিষেক, তারা পাঠ করে বিচিত্রা  ভাস্বতী তারার কাছে প্রশ্ন করি, জন্মই আমার  আজন্ম পাপ! যদুপতি বলেন, এই কান্তারে  কোনো তুকতাক চলে না, শবর-শবরী তোমরা  তাক কর তীর, আর বোলো না আমি আছি কী নেই  তাক কর, এবার নিক্ষেপ কর, বিদ্ধ কর ঘুঘু  ত্রপা ত্যাগ কর রক্ষিত্রী নারী, মায়া ছিন্ন কর  পুরুষ, যুদ্ধ কর ভোগ কর তৃপ্ত হও। নচেৎ বলবে কীভাবে? জন্ম যুদ্ধের, জন্ম ত্যাগের প্রেম   

জল ও আগুনের মাঝে

জল ও আগুনের মাঝে কে প্রিয়?  সত্য তখন আসে হাত রাখে আমার কপালে বলে, কাজল ভিখারি দূরে থাকো মাঝপদ্মার মতো দূর জোড়াদীঘির সিমেন্টের ঘাট যেখানে ছুটির ঘুমদুপুরে আমি একা বসে থাকি, আর কথা বলি প্রাচীন অশ্বত্থের সাথে সেদিনের কথা বলি  যেদিন শ্রাবণ তার ধারা দিয়ে মুছে দিয়েছিলো কান্নার দাগ  যেদিন নৃসিংহের রূপ ধরে এসেছিলো  আত্মতুল্য তীর্থংকর তাঁর উচ্চারণ জবুথবু ঘুমকে তাড়িয়ে দিয়েছিলো  উচ্চারিত হয়েছিলো-- সিঁদুর - পুণ্য সর্প - ভয়াল বুদ্ধ তুমি, চিরন্তন বৃষ্টিস্নাত বোধিবৃক্ষ দেখেছি ত্রিবেণীর ঢেউ জমিদার বাড়ির মর্মর সিঁড়ি বেয়ে সামনে কচি ঘাসের লন, সাঁতারপুকুর আমি দেখেছি  ব্লু ডি শ্যানেলের ধুন্দুমার গন্ধে মাতাল পার্টি  কোনার্ক সূর্য মন্দিরে, রোশনচৌকি থেকে ধ্বনি আসে  প্রমিত কথার মতো স্পষ্ট --- জল ও আগুনের মাঝে তুমি প্রিয়

আমরা এক

সংহিত সেই বাণী ঘেরা মন  রাতে আকাশে তাকায় ঘুম চায়  ঘুম আকাশের দিকে ছুটে যায়  ঘুম একটি তারা অবুঝ আলো   এই খেলার শেষে জীবনগান   তন্দ্রার মতো এই কানে বাজে  তারপর সূর্য ওঠে শ্রম জাগে   তবে শ্রমের মূল্য মেলে না আর  সংসার তারই মূল্য হারায়  থাকে দিনলিপি থাকে অভিশাপ  থাকে সন্তান আগামীর টান  থাকে দস্তুর আয় ব্যয় শূন্যতা  চশমার ঘোলা কাচে অভিজ্ঞরা  বলছে আমাকে, লেখো কিছু লেখো  আমি বলেছি সুকান্ত নই আমি  সংহিত সেই বাণী আমাকে দাও  প্রতি মে দিবসের গানে গানে হেনরীর হাতুড়ির আওয়াজ   হেনরীর কচি ফুল মেয়েটি আমাদের সন্তান, তাকে ডাকো  বল মেয়ে, আমরা এক---    মানুষ        

নিরাকার

ইভনিং ক্লাশ শেষ। এই সলমা-জরির কাজ রাতময়... নৈশ-বিরতির ঘণ্টা আর বাজছে না। অকটেন গন্ধে চোখ আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে, কারণ এ গন্ধ তরতাজা করে দেয়। সুন্দর কখনো কাজে লাগে না, যা আমাদের কাজে লাগে তা-ই অসুন্দর কারণ তার জন্ম প্রয়োজন থেকে, আর প্রয়োজন বড় কুৎসিত। ঈশ্বরের রোমান্টিক মানস কথা বলে, ঈশ্বরের পরিণতি বলতে কিছু নেই তাই। এই পরিণতিই হচ্ছে বৈশ্বিক। তাই কবিতারা আর পূর্ণেন্দু পত্রীর মতো হয় না।এসো, বছর বছর জাগ্রত ছিলে তুমি, এসো গহন নিদ্রার দিকে। এসো অরণ্যের ঘনতায়, পাঠ করো নিসর্গ-পুরাণ। সৌন্দর্য তোমার প্রাণসত্তার ফসল। দেখ প্রজাপতির পায়ে চুমু খায় গন্ধরাজ, দেখ আমার মুখে পৃথিবীর ঘাম। বনধুধুলের বাঁশবনে শনশন ছায়া-অন্ধকারে ঐ আমার উঁকি মারা বাঁ-চোখে হঠাৎ বিদ্ধ হয় কাঁটা, তবু আর একটি চক্ষু দিয়ে আমি দেখে যাচ্ছি অন্তিম অন্ধকার। যদিও শুধু কবিতাই কালোত্তোর, জীবন কিন্তু ম্রিয়মাণ। বোদলেয়ার প্যারিসে একদিন তুলিভরা কমলা রঙ তুলে আকাশটা ঢেকে দিলেন, এরপর নিলেন কালো রঙ, অন্ধকার না হলে আলো ফুটবে কী করে! নিঃসঙ্গতা কবিকে দেয় বাল্মীকির তপস্যা, এ চাঁদের চরস দেয় মগ্ন সমাধি, আর মৃত্যু দিতে চায় নিরাকারত্ব-- সবচেয়ে দামী চোখ...

আগুন ছোঁয়াতে হয়

এই রাত টাকিলার দরদ মাখানো হিয়া ব্যথাদের আজ ছুটি নাচুক ইউফোরিয়া পুষ্পের শিশুঝোঁক অভিনীত হতে ডাকে কবিতারা গায় তারা, দীপ্র জ্বলন রাখে তাকে ঘিরে রাখে শিব, গুহায় শুনছি শিস আমরা পাহাড়বাসী সুর মিলিয়ে নিস আগুন ছোঁয়াতে হয়, চরাচর পরে জ্বলে বনে পাহাড় মৌন থাকে বৃষ্টিরা কথা বলে

সেইন্ট ভেলেনটাইন

আমার  নিদ্রার গভীরে তোমার মুখ আমি দেখতে পাই স্টারলিট  নাইট ছিল আজ  এই সত্য জানি, হারাবার আগে ওই চোখে প্রেম আসে, হারানোর আগে দীর্ঘশ্বাস  মায়ের পুরনো এম্ব্রয়েডারী চাদর থেকে  মা মা গন্ধ আসে  আমি ঘুমিয়ে পড়ি সমস্ত মৃতরাই নেশাগ্রস্থ  মৃতরাই ক্ষমা পায় আমার  নিদ্রার গভীরে তোমার মুখ আমি দেখতে পাই সেইন্ট ভেলেনটাইন 

মায়া

আজ এপিটাফ পড়তে তুমি এসেছ এ কবরে, দুর্বর্ণ, সব অক্ষর, লিখে রেখেছে এ আমারে। তুমি বেলিফুল ভালবাসতে, তুলে সেই ফুল তুমি আসতে, তুমি যোজন যোজন হেঁটে এসে এই কবরটা ভালবাসতে। কোকেন চারিধার, ত্রিজগতে, তাই নেশাতুর তুমি মগ্ন, শোনো ভাগবত, শোন সারগাম মানো ঈশান আলোর লগ্ন। এই প্রসার্য রূপ কবিতার, এই আদর মুদ্রাক্ষরে, লিখে যেতে চায় এ চরাচর, যত কথা আছে অন্দরে। এ শব্দের, টেরাকোটায়, এঁকে রাখলাম চুলছায়া, সাইপ্রিসের এ বনটায় শুধু আলেয়া, কুহুমায়া। অন্তর ‘পর, সুবহে সাদিকে যে মায়াগান বাজে, ওরে--- আগুনের স্বাদ, যে নিতে চায় তারে বৃষ্টিযে, মায়া করে

প্রার্থনা

তোমার কানবালা মৃদু গন্ধ জলজ ফুল, আমার ভূমি সাতাশটি নক্ষত্র ঘিরে আছে তোমার চোখ টোটেমের রঙ থেকে বহু বর্ণে বেরোচ্ছে গহন অতীত একটি পুষ্পক থেকে উড়িয়ে দিচ্ছ দুধভাত দূর গ্রাম থেকে শহরের রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স, শিশুপাঠ, তুলসীমঞ্চে প্রদীপ আদরের মা ডাক এসবই আমাদের জীবনবেদ তারই শিক্ষা দিয়েছ তুমি এই কালান্তক সময়ে মাতৃকা আমরা ভুলে গেছি ঈশিতার রূপ ক্ষতবিক্ষত করেছি পিতার শরীর উপাসনা মন্দির খুন নিয়েছিরে ভাই তোর এই উৎখাত যেন আমাদের পিতামাতার ঘরে আর না হয় কারণ তাঁরা এই জাতক প্রান্তরকে বুকে ধরে রেখেছিলেন এ শিশু তাঁদের – আমাদের

অনুবাদ

  ইংরেজী অনুবাদ * ও সূর্যচিল আমাকে পাখায় বাঁধো, মানুষের উড়ে যাওয়া ব্যথা দেখে যাই কিছু। শময়িতা, আমাকে বিষণ্ন করে রেখো না, ছেড়ে এলে যে বেদনা আমি তার বন্ধু নই। আমি বালক শিশু, সারি সারি শিরীষের বনে আমার উজ্জ্বল বনবাস। আমার নির্জন সাক্ষী থাক দেবদারু। আমার নীড় পাখির নীড়, আমলকীর ডালে আমি জানি আমার জন্যে পাখি রেখে যাবে কিছু। একশো আটখানি ঘুম আমাকে জড়িয়ে রেখেছে, ওরা নীল পদ্ম নয়। নিদ্রাহীন তোমার চোখ বাতাসে উড়ে যাক। বল, শরীর অস্ত যায় নাকি মন, রক্ত কি পানীয়? পূর্বজন্ম থেকে এইটুকু স্মৃতি আমি বয়ে এনেছি - তোমার চোখের জলে ভরে উঠেছিল সমস্ত আঙুর অর্কিড ... শময়িতা, এভাবে আমাকে আর বিষণ্ন করে রেখো না ... আমি তোমার শিশু, তোমার আমি ছাড়া আর কেউ নেই। O suneagle, bind me to the wings, enabling me to witness the suffering of those who soar. Shamayita, don't make me sad; the pain you have left, I'm not its friend. I'm a little child living in a vibrant Shirish woodland. Allow the Debdarus to serve as my silent witnesses. My nest is the bird's nest; on the branches of Amalaki, I know the birds will ...

hold the evening in your lungs

ঋষিরা প্রণম্য কিন্তু বন্ধুবৎসল নয় বেদমাতা মন্ত্রে তারা শুধু গাছেদের মতো দৃশ্যে বিভোর। গাছেদের তো সেরকম কোনো কাজ নেই তাই তারা দেখছিল তোমাকে তাদের দৃষ্টিপথে খেলে যাচ্ছিলো ক্রসওয়ার্ডস এই করে করে গাছেরা যখন ক্লান্ত তখন তুমি পড়তে ভালোবাসো পিরামিডের ইতিহাস মোনালিসার চিত্রকর্ম আর ভাবো, কে বিক্রি করে দিলো তোমার তারুণ্য? কোথায় হারিয়ে গেল পিলক পাখির ডাক! বয়স নিয়ে অ্যান্সারিং মেশিনের কথা শুনতে শুনতে দেখ আরব সাগরের বিষণ্ণতা আর্বান গার্ল, সমুদ্রে পা রাখো, আমি জল হয়ে ছুঁয়ে যাই তোমার পা তোমার নূপুরের ঝিনঝিনিতে শ্রাবণী আলোয় নেচে যাক আলোকতনু সাইয়ারা, অ্যাবস্ট্র্যাক্ট ছবির গ্র্যান্ড গ্যালারিতে এই দুপুরে হঠাৎ এক লিলি ফুল; তার পুষ্পরেখায় মার্মা মেয়ের চোখ আজ পাতার শব্দে আলোর মত উজ্জ্বল দিন— তারুণ্য বয়সের ওপর নির্ভরশীল কিছু নয় আজ এই প্রবারণা পূর্ণিমায় - "Inhale and hold the evening in your lungs." মে ২৩, ২০২৪

রিচিরিন

ওড়নার মৌনতা মানে বিছানায় মাঝরাতে শাহানার ধুন নারীর সাথে রাত সেই রাত আদর ক্ষীপ্রতায় ভোর আমরা তরুণ, চলে যাই যেদিকে শহর নেই, সবুজ বটতলে কাঠের রাজস্থানী বাঁশি নিয়ে যেইখানে সুর তোলে অচেনা ফকির বর্ষার শরজাল যেখানে তীব্র করে তিতাসের ধারা মোম মাখা পেতল কলস থেকে জল খাই, ভাবি --- চন্দনের বনে এ নির্জনতা আমার সন্তান দিল বাই দরিয়ায়, আহা ফিরোজা শহর আহা শ্রাবণদিঘি- তোমরা কি খুঁজে পাও নিরবধি নিখোঁজ পাওয়ার সুখ? রিচিরিন, তোমার নিরুদ্দেশ ছড়িয়েছে কেনো কাল রাতে রিচিরিন মারা গেছে যাইনি বিকেলে গতকাল

আশাবরী

তোমার কী আছে বল, তুমি কার? তোমার চোখের নাম গাংচিল আমারই তির শুধু বৃথা যায় পাখির বেঁধে না তনু, একি নীল! যে তুমি শোনোনি পূজা নবমীর শেষ রাত হলুদিয়া বন্যার ঢাকের বাজনা রাতে শোনা যায় আগামী সমাপ্তিরই সুর তার আমি তো চাই নি কিছু অনুপম চাই নি আবৃতিরাত কবিতার একান্ত তুমি এক অনুরোধ জীবনের প্রতি ভোরে তুমি কার? ইশারার কাছে ঘুরি প্রতিদিন একটি ছোট্ট শিশু কথা নাই অতসীর কাছে পূজা অসহায় আর্য শব্দটির ভাষা চাই

এরিনমোর

এরিনমোর মিক্সচার, কাগজ মুড়িয়ে বানানো, এর ফ্লেভার হারানো দিনের গান। প্রাকপুরাণিক মেয়েরা, তোমরা শোনো, তোমাদের নাচ হোক নদী, আর চুমু হোক এরিনমোর। ভেনিসের মাঝি আমি, নৌকোর এক কোণে টিউলিপ, অন্যপাশে কড়া তামাকের হুকো। ছাউনির আলপনায় তুসকানির ল্যান্ডস্কেপ, বৈঠায় গ্রীসের তামা। এ নৌকো পরজিত হবে বলে আমি যাত্রী তুলি নি। এ নৌকোর ভালো লাগে রুপোলি জলে সাঁতার আর ধীরে বয়ে যাওয়া। এই যে অনাদিকাল জলের সাথে জীবন, তাতে এ নৌকো নদীর যথাযোগ্য হয়ে উঠেছে। সাগরমুখী বাঁক গুলো চেনা হয়ে গেছে। এ বজরা ষড়োশির মতো বাঁক থেকে দূরে সরে উর্মিতে নাচে। চোখের নীলে ব্লু ডেইজি তার, নদীর আকশে হিরণ পাখির ওড়া-উড়ি। এ নৌকো পরজিত হবে বলে আমি যাত্রী তুলি নি। এরিনমোর মিক্সচার কাগজে মোড়াতে মোড়াতে আমি ভাবি, জীবনের সবথেকে অনুচ্চারিত কথা কিন্তু জীবনের রূপ। একাকীত্ব। এ একাকীত্ব এরকম ভেনিসের জলে দোদুল নৌকোর সূর্যবিদ্ধ চোখ – তুমি

ওয়ান-লাইনার

১] মুখের ভাতের উপার্জন একটি প্রমত্ত আদিমতা ২] মেলবোর্নে খেলা হোক, ঈশ্বর বল করবেন আমাকে, দেখি কত রানে আউট হই ৩] আমার এ চৌকাঠ ভেঙ্গে ফেল, দুজনে গাই চল- না পেয়ে তোমার দেখা, একা একা দিন যে আমার কাটে না রে ৪] সাজেক থেকে ফিরছো তুমি ট্রেনে, দুহাত বাড়িয়ে দিলে হঠাৎ, তারপর চিৎকার করে বললে- মা কে দেখে এলাম ৫] আকাশটা কালো কালো, তুমি মিছিলের কথা বল ৬] বাংলা শব্দের বুনন প্যাগের পর প্যাগ রেড লেভেল হুইস্কি ৭] না, এমন কোনো সুখ নেই আর এই পৃথিবীতে তোমার গন্ধ নেওয়া ছাড়া ৮] কাঁদবে সে সারা রাত-- চড় মারি নি, শুধু ছেড়ে গেছি তার হাত ৯] স্বর্গের স্টেডিয়ামে যে খেলা হয়েছিলো, তার কিছু দৃশ্য ঈশ্বর পাঠিয়ে দিলেন এ জগতে, সে টিমের নাম্বার টেন- মেসি, পৃথিবীর সবাই দেখছি ১০] যে ম্যাসেজে লিখেছো- নীরবতাই সন্নিকট, উত্তরে বলেছিলাম, প্রত্যাক্ষাতরাই শব্দ সাজায় ১১] মাঘের আজানভোরে হেঁটে যাচ্ছে এক বাউল, তাকে ফেরানো যাবে না, সে কুয়াশার মাতৃরূপ দেখতে চায় ১২] গন্ধরাজের আঘ্রাণ তুমি পুজোর থালি হাতে দাঁড়িয়ে থেকো না আর পুকুরের ধারে ১৩] খুব কম পাখি পোষ মানে, তাদের গান তোমার মত দূর থেকে শুনতে হয় ১৪] জীবনানন্দ কেন নাটোরের কথা বলেছিলেন, ক...

প্রমার হাওয়ায় ওড়ে লালনের গান

অহল্যার পাথর মূর্তি যদি ফিরে পায় তার অপ্সরী দেহ প্রমার হাওয়ায় ওড়ে লালনের গান শরীর জুড়ে তার ধূপদানীর গন্ধ ঘুরে বেড়ায় মনে হয় তার দেহ যমুনায় ধীরে কাঁপা চাঁদের সমান অমর নগর– যে নগর ঈশ্বরের, সেখানে সে গ্রহণমুক্ত চাঁদ গানের দোহার গায় মনবেড়ির ধুন ত্রি-সন্ধ্যা গায়- দেখ না মন, ঝকমারির এই দুনিয়াদারী মনবেড়ি খুলে ফেলে তারা বায় তরিকার নৌকা তারা ঈশ্বরের অযোনিজ সন্তান তাদের ইন্তেজারী সূর্য দীপ্তা ভোর কৌতুকে চতুর মেয়ে তুমি ক্রেমলিন রূপসী তুমি জেনো, রাহু – এক দানব, অমৃত পানে যে অমরতা পেয়েছিলো সেই রাহু এই আমি রঙিন প্রহসন আমার সাথে নয় আমাদের যৌবন, ঝরার খালে চলে যাচ্ছে সমুদ্রে তুমি কেন আবার কাঠে কুড়োলের শব্দ শুনছো? লালনের প্রেম কামহীন, তা-ই তার আরাধনার নীল রতন এসো ছায়ার বিতান এসো বনে নিকুঞ্জে, এসো গাই লালনের গান

পনেরো আগষ্ট, ২০২৪

জীবনের তেরোটি বছর জেলে থাকা ১৯৪৭-এর ছাত্রনেতা তুমি দলের সভাপতি আমার মায়ের ভাষার জন্য ১৯৪৮-এর ১৫ই মার্চ তোমার নেতৃত্বে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলা হয় জেলে ভরা হয় তোমাকে তুমি জেলে অবস্থান করেই অনশন পালনের সিদ্ধান্ত নাও আর এই অনশন ১৩ দিন স্থায়ী ছিল তারই রূপ দেখ আজ এ কবিতা বাংলায় লেখা, আমরা বাংলায় পড়ি ১৯৬৮-এ আগরতলা মামলা ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান ৬ দফা ৭০-এর নির্বাচনে বিপুল জয় ভুট্টো আর ইয়াহিয়ার চাল আর নির্বাচিত নেতাকে অস্বীকৃতি বঙ্গবন্ধু তারপরও তুমি অনেক চেষ্টা করেছো কিন্ত না, পশ্চিম পাকিস্তানের রক্ত নিশানা তখন এই বাংলার দিকে তারপর নিজেদের সত্ত্বাকে এই বিশ্বকে জানান দিতে ১৯৭১-এর ২৬-শে মার্চ তুমি ঘোষণা দাও - “এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক। জয় বাংলা।“ ৩০ লাখ শহীদ ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এই স্ব...

ডুব

কান্নারা জমে আছে তোমার বুকে লিনা তুমি ফুঁ দাও বাঁশিটি বাজুক আজ কাজলে কাজলে চোখ হয়েছে উজালা ডাগর চোখের আক্রোশে আজ উচ্ছন্নে গেছে মন লতানো পাতার গলাবন্ধনী খুলে এসো তোমার বুকের মাখন স্তুপে দাঁত ষাট রাত ষাট দিন পরে নিদ্রাহীন জেগে আছি যখনি মেঘের বাড়ি যেয়ে কথা কবে চাতকের মেয়ে তখনই আমার কবিতার বই খুলে পড়বে সে বিছানা সাজিয়ে সুষুপ্তির দিকে এত ঢেউয়ের মাঝ থেকে সে ডেকেছিলো - ডাঙা আত্মা বেঁচে রয় রবিনাথের মত কারণ এ পৃথিবীর যত কিছু অনুভূতি আছে সবকিছু নিয়ে রবিনাথ বিচ্ছুরিত প্রেমের আলোর ধারাপাত তাঁর গানে প্রকৃতি তাঁর গানে ঈশ্বর তাঁর গানে প্রেম আর আমি ঘুমিয়ে পড়ি; বুকে তুলে নেই গোলাপ কাঁথা তোমরা তো সবাই সবাইকে চেনো – আমি ভিনদেশি তবুওতো সে আসে নির্বাক, নদী-আলো কথা কয় যেন সে নিজের প্রেমের কথা- যেন পরাজয় যেন সে প্রেম এনেছিলো সন্ধ্যার ডাহুক এরপর পশ্চিম এরপর অস্ত এরপর ডুব জুলাই ৯, ২০২৪

দেখতে তুমি নাকি কালো

দেখতে তুমি নাকি কালো? আগল দেবো না বাঁশি বাজাব বলেছে এই মুখ তুমি অভিধান থেকে কবিতার শব্দের মানে খুঁজতে যেও না বটের শিখরে নীল শূন্যতার মতো নিঃশব্দচরণে আসে পুকুরের বুকে চাঁদ ভেসে থাকা রাত তোমার শিশুটির জন্য যদি তুমি ঘুমপাড়ানি গান গাও দেখো কিন্তু ধীরে তুমিই ঘুমিয়ে পড়বে - আমার দিকে তাকাও, আমি তোমাকে দৃষ্টি দেবো দেখো, কালোপাইপ কালো রোদ চশমায় জ্যোৎস্না ধরে রাখে কোনো সুদর্শন পুরুষ সে পুরুষের প্রয়োগ আচার বড় প্রতারণাময় এই যে অপেক্ষা তোমার, তাতেই রোপা আছে প্রজন্ম, যৌনতা কি পৃথিবীর অন্যতম সত্যি নয় তাতে প্রতারক আরো প্রতারণাময় হোক অপূর্ণতা এরকম, যেন এক গ্লাস জিন, সে গ্লাস অর্ধেক পূর্ণ থাকলে অভিযোগ আর যদি তা শূন্য হয়ে যায় আমাদের আর কোনো অভিযোগ থাকে না দেখতে তুমি নাকি কালো! তোমার গানই তোমায় অপ্সরী করেছে যে শোনো, নাবলা অনুভব যদি গাইতে পারো তবে তুমিই শ্রেষ্ঠ গায়িকা

সূর্য পালায় নাকি জীবন পালায়

শাদা এক প্রজাপতি বেলি ফুলে বসে পাখা নাড়ে শুধু শুধু চোখে মায়া আসে চোখে মায়া আসে আর সন্ধ্যা ঘনায় কুয়াশা কুয়াশা বন ঠিকানা হারায় ঠিকানা হারায় মাঝি দাহ গান গায় মরেছে পুত্র তাই বুক চাপড়ায় বুক চাপড়ায় মাঝি জল আর জল এমন জীবন তার জলেও অনল জলেও অনল তার বৌ কান্নায় এক দুই তিন করে বছর পালায় বছর পালায় আর নৌকোর পাল ছেঁড়া ফাটা ওড়ে পাল বয়সী মাতাল বয়সী মাতাল জেলে হুঁকো তুলে খায় ভ্রু-তে হাত রেখে দেখে সূর্য পালায় সূর্য পালায় নাকি জীবন পালায় চোখ কুচকিয়ে মাঝি সে জবাব চায়

কবর খনন করে পেয়েছি

শুধু তমালের বনে দূরে আরো বহুদূরে একটি দিঘীর বুক শেষ রাত বুকে নিয়ে নিবিড় ঘুমে ছিলো তুমি কেনো ডাকো অই ঢাকেশ্বরীর সন্ধ্যা ঘন্টা? তুমি আজ এই লেখা নাও, এই লেখা মৃদু ভোর, ধীরে ধীরে সূর্যদীপ্ত হবে মরমিয়া আজানের একটি মোহোন সুর ভাসে দিন আসে, আর এই ঋতু এই ঋতু সংকেতময়, রিক্সার পেছনের আলপনার মতো সহজ নিপাট বাসি বিছানার ঝারপোছ সেরে ক্ষীণকটি মোহের যাত্রাপথ আমাকেই চিরে চলে যায় ঝালকাঠি নদী নালা খাল বিল ধরে তারপরে, তারও পরে আরোহীবিহীন নৌকো মেঘনার বুকে ভেসে যায় হাড় সহ ভিজে যায় এমন বৃষ্টি মনেপড়ে নক্ষত্র ও নুলিয়ার মাঝে শান্তিনিকেতন স্মৃতি বায় মায়ামোহ মেয়েরঙ স্বপ্নরা প্রতিরাত। তন্বী তুমি রূপের আখর নাহয় পর্দা কেনো, কেনো আধোলাল শাড়ি? কবর খনন করে পেয়েছি ঘুমের ঘর অবিমিশ্র কালো এক মাছ ধরা জাল সেইখানে রাত্তিরে বাজে মাঝ রাত্রির কিন্নর জরিপঘর থেকে সামান্য ছাড়া পেয়ে বেরিয়ে এসে দেখি রোদবাহী দুপুর শুনি তৃণ পিয়ানোর সুরে পল্লীর ধুন

দূরে, খুব সুদূরে টিম টিম করে জ্বলা মাছের ট্রলার

একাকিত্বের এ ঘরে আগমন দীর্ঘ যুগ হয়, তারপর আর যাচ্ছে না সে জনপ্রিয় টিভি সিরিয়ালের মতো ঘুরে-ফিরে আসছে; আমি সংসার করছি দায়িত্ববোধ নিয়ে সব প্রতিপালন করছি পালিত হচ্ছি নিজে প্রিয়জনের- হাতে মনে জীবনে তবু যখনই একটা কবিতা লেখার তৃষ্ণা পায় সে দেখি ল্যাপটপ খুলে দেয় পাসওয়ার্ড জানা তার এই মন জানা তার জানা তার, নির্ঘুম রাত্রির স্লিপিং পিল নিদ্রা দেয় না তিন রাত তিন দিন ধরে আন্দামানে তার কানে ওয়াকম্যান--- ও মেরে দিল কি চেন একনাগাড়ে শুনে শুনে তার প্রেম রাত সাগরের সীমাহীন বিস্তারে মায়া। অমাবস্যা রাত আকাশে মেঘের গাঢ় ডাক আর মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ ছলকে ওঠা; আমি দেখি তীর লক্ষ্য করে ছুটে আসে মাতাল দুর্বিনীত ঢেউ দূরে, খুব সুদূরে টিম টিম করে জ্বলা মাছের ট্রলার সে আলোর দিকে তাকালে হুইস্কির চোখ দেখে এই গাঢ় অন্ধকারে, এই তীব্র সমুদ্রের ঢেউয়ে সেই আলোই ঈশ্বরের সযত্নে গড়া প্রেম

ভ্রমণ

চিন্তাহীনতা মৃত্যুর প্রকাশক তাই কবিতা লিখি তাই হাওয়ায় ছড়িয়ে দেই স্মৃতি এই সন্ধ্যায় বলি - সন্ধ্যা আমার নেশা আর যৌনতা, কবিতা আর তার প্রাপ্তির যুবতী মেয়ে সারাদিনের কর্মক্লান্তির পর এ আমার সাঁঝের বাতিক হিয়েরোগ্লিফের সংকেতময় ঈশ্বরের হস্তাক্ষর এই গোধূলি পেড়িয়ে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত স্নিগ্ধ শাওয়ার সেরে হোটেলের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে বলি- ও ত্রিযামা, ও স্তনমেদুর তমসা তোমার এই সুখ ভাগ করে নেওয়া জরুরী ‘তোমার সৌন্দর্য, নারী, অতীতের দানের মতন’ পালক-কোমল চুল, নীলগিরি দূর চোখ। তোমার নাইটি পরা ভরা রাতে জ্যোৎস্না রাতে তোমার গুন গুন আমি ছিনিয়ে নিয়ে আসি সমুদ্র তীর থেকে তার গভীর থেকে আমি একটি স্মৃতিনৌকো বেয়ে চলে যাই মহাপ্রস্থান বন, এই বনে কাঠের কুটির, সে কুটিরে শিরীষ, দেবদারু আর সেগুনের শ্যামছায়া, সে কুটির চন্দন আর কস্তুরীর ঘ্রাণে লীন আমাদের চারদিকে পর্দা ভেদ করে আসা নরম কমলা আলো, ঘরে কাশ্মীরি কার্পেট আর নাম না জানা নীল-মেরুন পুষ্প তার সাথে সেগুন কাঠের দক্ষিণ ভারতীয় শৈলীর দুর্লভ আসবাব স্বপ্ন সঙ্গতের করুণ গান গায় বৃক্ষ – এটাই আমি চাই শরীর বদল নয়, এই মনই অনায়াসে ঘুরে বেড়ায় তোমার ত্রিধারা দেহ মন্দিরে সুখ...