অণুকথা
১)
যার দৃষ্টি প্রসারিত
তার আর ধ্রুবতারার মাঝে যে শূন্যতা আছে
তার সে শূন্যতাকে শূন্য বলে মনে হবে না কোনোদিন
২)
মানুষের মৃত্যু সত্য
তবে, যে যে আত্মারা চলে গেছে মহাকাশে
তাঁরা কি সকলেই মানুষের দুঃখকে ঈর্ষা করে?
৩)
মনে মনে কথা বলার জায়গা নয় এ সংসার
কথা বল একা হয়ে
জীবন দেখতে পাবে
৪)
বিরহ আমার চক্ষু থেকে ঢালছে মায়া অনর্গল
এই দু’চোখের বাউল হওয়া তোমার হাওয়া মেঘ বাদল
৫)
তোমার মাতলামীতে শেষ হয়
এ সংসারের ষড়ভূজ ঘর
আমি মাতাল না হতে মদ খাই
৬)
শোনো এই গান--- বিস্মৃতি শুধু সুখী সময়ের সুর
৭)
বৃক্ষ যদি রচনা করে যেত তার আত্মজীবনী, তবে আমরা বুঝতে পারতাম
মৌন ধুনের কোনো তুলনা নেই
৮)
আমার বাগানে ভোরে আর স্নানে দেখি এক পাখি শিস দিয়ে উড়ে যায়
আমি মান্যতা রাখি
কিন্তু সে পাখি যদি বলে চুপ থাকি
তবে ও পাখির দূরে যাই আমি
তাকে নিষ্প্রেম ডাকি
৯)
প্রেম নিয়ে মাতাল হয়ো না
তোমার প্রাত্যহিক ব্যবহারে
মদের উপস্থিতি টের পাওয়া যাবে
১০)
আমি তোমাকেই ভালোবাসি আর আমি তোমাকেই চাই।
তুমি কেন ওরকম ভালোবাসো?
শিশুর স্বভাবে কোলে... শিশুর স্বভাবে বল যাই
১১)
তুমিই আমার গান
সুপ্তির সন্ধান
১২)
চোখ সরে না রাত আসুক
শিফন শাড়ি স্পষ্ট বুক
১৩)
আঁখি নেশা সন্ধ্যায় কে চায় ফোন আসুক? দেখি তোমাকে যে চায়, যার চোখ অর্জু্ন, যার নীরব মুগ্ধ মুখ ......
সে স্পষ্ট উচ্চারণে বলে-
সরে যাও
১৪)
হোটেল লা মেরেডিয়ানের বুফে লাউঞ্জে দেখা
একটা স্লিভলেস রাত, সুইট--- লা ইজ লা বনিতা
স্কচ হাতে তোমার- ‘স্যরি’
সেই থেকে নাকে শ্যানেল স্মেল.........
মৃদু হুইসপার
১৫)
স্কুল স্কার্ট পড়া মেয়ে
তোমাকেই দেখে, ঘড়ি ৮ টায় থামে
মন জানে কোন চুলের ক্লিপটি
ঠোঁট থেকে চুলে নামে
১৬)
এই হেমন্ত দুপুরে আজ
নিভে গেছে দুজনের চোখের আলো
এই অন্ধকারে দুঃখ জানে, মনে রাখা জানে
মানুষের প্রেম পায় জীবনের না চাওয়া ক্ষণে
১৭)
প্রেম এক কুহু সুর নীল বাঁশি তান
প্রেম শুধু যৌবনে নয়
প্রত্যাখ্যানেও নয়
১৮)
যদি দূর রবিনাথ এ হৃদয়ে না হোতো পঠিত
তবে কীভাবে এ গুনগুন- সুন্দর বটে তব অঙ্গদ খানি তারায় তারায় খচিত
১৯)
বাবুই-এর ঘর বোনা দেখেছিলো চোখ; আনন্দ স্মৃতি এক। এ পৃথিবীর অন্য স্মৃতি সব তাতে ঝাপসা হয়ে যায়।
২০)
শুশ্রুষার হসপিটালে, আঙুরে কমলায়
তোমার অশ্রু পান করি আমি মৃত্যুর তৃষ্ণায়
২১)
বর্ষাবাস এখনো এই প্রৌড়ত্বে
শ্রাবণের হাত ছুঁয়ে শুয়ে আছি
আর তুমি রঙ ছেটাও তোমার করা বাগানে
আর তোমার ঐ ডাক দিকচক্রহীন, তুমুল ভেজা এক ঘুঘুর ডাকের মতো লাগে
২২)
আকাশে সলমা-জরির কাজ অমাবস্যা জানে
এখন সে বিশ্রামে
তোমাকে দেখে স্থির চোখে।
তারপর লগি মারে আলোর উজানে
২৩)
আমার ছায়ার মতো দীন, তোমার মায়ার মতো লিন
যতটুকু আলো আছে আমাদের বুকে যে বিলীন
২৪)
তখন আমার একুশ বছর বোধহয়
ভয় ছিলো না একুশ বছর তোমার দু’চোখ দ্যুতিময়
২৫)
শীবচর স্নেহভরা নাম
আড়িয়ালখাঁ’র কন্যা সে
এই কারফিউ শহরে ভোর রাতে ঘুম ভেংগে যায়
মনেপড়ো শীবচর
ছোট ভাই জন্মেছে তোমার কোলে
মাগো শীবচর
২৬)
খেলার রিক্সা আর টেনিস বল ছিলো শীবচরে
শীবচর আর শিশুকাল মনে রঙ ঝরে আর রঙ ঝরে
২৭)
বাবা, মা, স্ত্রী সবাই চলে গেছে ওপাড়ে
একজন যতীন্দ্রমোহন মনে পড়ে...
আমি প্রশ্ন করে রই
রাত হল যে, মাগো, আমার কাজলা দিদি কই?
২৮)
আজ জ্যোৎস্নার তীব্র আলো সূর্য হতে চায়
তাজমহলের নীচে উদ্ধার হতে থাকে হাজার শ্রমিকের বৃদ্ধাংগুল
২৯)
থানা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে
কুমিল্লা থেকে গান গাইতে আসতো মুক্তা
আমি গানে লীন
আজন্ম লীন চোখে
তার হাসি কথা টানাচুল
স্থির ছবি হয়ে আছে
থানা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে প্রাণ নিতে আসতো, মুক্তা
৩০)
অমাবস্যা ঢুকে গেছে এ জীবনে, তবু আমিও জীবন খুঁজি ও জীবনে
আলোর ঢাকায় দেখি সকলের মুখ, তবুও আলোক রাখি মন-কোনে
৩১)
কলকাতা-মেয়ে তুমি সুন্দরী
শাড়ি কোনো বর্ষায় বালুচরী
এমন মেয়ের বিয়ে একদিন
জিন খাই ফোন করি কথা হীন
৩২)
কোটা আন্দোলন ঘিরে, একটা কথা আসছে বাতাস চিড়ে
যে জন দেশের বন্ধু না তার জল্লাদী মন ঘোরে
বাংলাদেশের স্বাধীনতা
আজো যুদ্ধ করে
৩৩)
মন কেনো গেজিং পাহাড়ে নির্জন পামের বাগানে তুষারের শাদা ধারা চেনে না, শুধু বলে এ তো কান্নার বর্ষাত, তুমি ডেনজকা ভডকা’র বোতোল খোলো, শোনো কিশোর কুমার- ---
চলে গেছে দিন তবু আলো রয়ে গেছে
৩৪)
ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের পেছনটায়
লেকের ধারে
সিমেন্টের বসার আসন ছিলো
আমি মাঝে মাঝে একা বসতাম ওখানে
ভাবতাম, মানুষের মন কেনো খেলা
৩৫)
নৈনীতালে
এই হোটেলের ছাদে
নীলশুভ্রার ফাঁদে
হ্রদ আর পাহাড় কাঁদে
শীত মিহিন এ হাওয়া
গান শোনা গান গাওয়া
ক্যানাবিসে হাত ধরে
পুরোনোকে মনে পড়ে
৩৬)
আমার পুত্র শিশুটি এলো, তার মা-এর মুখটি কী আলো!
তার যত প্রসবের ব্যথা যখনি দুঃখ জানালো
আমার মায়ের হাত
তা ক্ষমা করে দিলো।
৩৭)
আমার গ্রামের নাম উল্লাশ্বর
গ্রামের বাড়িতে একটা পুকুর ছিলো
শিলকড়ই এর গুড়ি ছিলো তার ঘাটে
সে আমাকে একদিন খুব ভোরে বলেছিলো
আমার শরীরে লেগেছিলো ঘন রাত্রির শ্যেওলা
ছোট্ট বিষু তা বুঝতে পারে নি
সে বোধ হয় স্নান করতে এসেছিলো
তারপর পিছলিয়ে পড়ে গেল বিষু
তোমরা সবাই স্নান কর আজো
তবে স্নান শেষে উচ্চারণ কোরো ---
ভালো থেকো বিষু
৩৮)
শিবানী, তোমার কথা মনে পড়ে আজো
এই বিকেলে এক্ষুণি মন
তোমায় বলে -- খোঁজো
মনে পড়ে আজো
৩৯)
ছায়াটা তোমার দিকে চক্ষু মেলে দেখছে
খেলা শেষ, বাড়ি চলে যাচ্ছো
তোমার ছায়া
তুমি নও
ঢাকা
১৯/৭/২৪
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন