হিজল বনে অলিখিত কবিতা
একটি হিজল বন খুঁজে পেয়েছে জীবন-মৃত্যুর সংজ্ঞা। আমার প্রশংসার প্রয়োজন কি ফুরিয়েছে তোমার? এই বয়সে এসে এরকম স্তুতিদান আমারও কি ভালো লাগে আর? একটি বসন্তের কবিতা লিখে ফেলে রেখেছিলাম। কোনো বসন্ত বেলায় তুমি পোড়ো একরাতে।
তোমার মনে আছে? খুলনায় রূপসার পারে সেগুনের ঝলকানি আর তার মাঝে একটা ডাকবাংলো, তার চারদিকে কচি লেবুঘ্রাণ - অচেনা সে ঘ্রাণ, অথচ কত চেনা সেই পাখি হারানোর ব্যথা! সেই ঘরটিতে নদীর হাওয়ার তাজা গন্ধ আর গোধূলির ডাক......
কিছু দূরে ছোট ছোট সব ডিঙ্গি নৌকো বৃষ্টির হাওয়ায় উন্মন। সেই ডাকবাংলোর খোলা জানালা দিয়ে আসা জল মিশ্রিত বাতাস আর সূর্যাস্তের আলোয় ভরা সে ঘর, নীল বেডশীট আর বেলি দিয়ে সাজানো। সাথে আছে ভারী শাল কাঠের বার্নিশ করা সব আসবাব। সেখানে কবিতা নিয়ে গল্প করবো দুজন, সাথে মিহি করে কাটা ক্যানাবিসের সাথে ঝিম গন্ধের টার্কিশ টোব্যাকোর স্মোকিং পাইপ , আর সাথে JBL 800 Watt 9.1 সারাউন্ড সাউন্ড। সেই ঘরের ছাদে শাদা চড়ুইদের খুনসুটি আর ধীর পিয়ানো... তারই সাথে একটু পর যখন রাত্রি হয়ে আসে তখন ক্যানী রজার্স... লেডী
জীবন-মৃত্যুর সংজ্ঞা পেরিয়ে আমি সবসময় তোমাকে দেখেছি ঘোর বর্ষায় মালিনীছড়া চা বাগানে রাতে, যেখানে বৃষ্টির ছাট তোমার টলটলে দুচোখে পড়ে আর তার সুর গায়,-
মন হারাবার আজি বেলা,
পথ ভুলিবার খেলা, মন চায়, মন চায় .....
তারপর সে তোমাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে আর তুমি হয়ে যাও একটি গোলাপী বেড়াল ছানা। বাকীটা জীবন গোপনে চোখ ছলছল করা একটি সুর দিয়ে গেলো সেই বৃষ্টি তোমাকে।
তাই আজ আমি এই শীতের রাত তিনটেয়, তোমাকে জড়িয়ে ধরে তোমারি মতো খুঁজে চলেছি একটি হিজল বন আর সেই বনের রাত্রি আকাশে নক্ষত্র শব্দে লেখা আছে আমার সব অলিখিত প্রেয়সী কবিতা, আর তার সব কাকচক্ষু জল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন