পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সূর্যকথা

এই হেমন্ত আফসান, উপাস্যমান প্রকৃতি এ বাণীমন্দির থেকে শিখে গেছে তর্কনিপুণতা  এ শিক্ষালয় আমার, এ পান্থনিবাস শিরীষের এখানে আছে রঙিন মেঘের এনামেল, সূর্যের মাইকেলএঞ্জেলো ছবি। সে ছবি জয়ের --- ক্রান্তিবৃত্ত পেরিয়ে যে জয়, তার প্রেমরূপ। প্রকৃতির প্রমাণপুরুষ, ছুঁড়ে দেয় দিরহাম... সে ক্রন্দিতকে ঘুরিয়ে আনে আর্যাবর্ত দেয় জমরুদ, মধূৎসবে গায়- আহা আজি এ বসন্তে... অপাঙ্গে দেখে পৃথিবীর রত্নবণিক তার খাজনাখানা খুলে দিয়ে সে হাঁকে ঘায়েলিয়া সূর্য দেবতা হাসেন, হঠাৎ কালো মেঘকে আদেশ করেন, ঢেকে দাও আমার মুখ, দেখুক সবাই, অদেখায়ও আমি থাকি, মানুষ থাকে না  ২৪/৭/২৪ ঢাকা

যমুনায় ভরাডুবি প্রিয় মেয়ে

তিতাসের কথা, পার ভাঙ্গা ঢেউ আর মাঝির ঐ নৌকো সবই সমান নিখুঁত। কবিতারাও তাই, তবে কেউই আর এখন জিজ্ঞাসাই করে না,- কত রাত জাগো? যমুনায় ভরাডুবি প্রিয় মেয়ে তুমি অবাক চোখে দেখ,- একটি ফুল ধীরে ফুটে উঠছে, তার চারপাশে এর মাঝেই নেমে স্বর্গ এসেছে। কে আর জিতেছে প্রেম? তার খুশিটি কথা বলছে রাত্রির সাথে -- ‘অজ্ঞাতরাই নিরাপদ’। কে আর খুঁজবে বল প্রজ্ঞা পারমিতা অরণ্যে ঘোর?   সবুজিমা, সে জ্ঞানী কিন্তু কোনো চাল মারে না কিছু, সে অরুণ মুখ তার ভ্রমাতুর সোহাগবচন সে যুদ্ধক্ষেত্র হতে আনা শোক, শোকমানে জানে ভালোবাসার যোগ্য ছিলাম আমি, কবিতা তা মানে  ২৪/৭/২৪ ঢাকা

সন্ধ্যা নদীর তীরে

জীবনানন্দের খোঁজ সেই ম্লান চুল আর নগ্ন নির্জন হাত কবিতার সৌন্দর্য আর বিস্ময়-- আমাকে লেখায়, এ সমস্ত স্তিমিত বরষায় সবুজ ঢেউ-এর মত ধানে ধানে হাওয়ার ছন্দরাগ— আমার শিশুর দিকে চেয়ে থাকা আর্দ্রা নক্ষত্রের চোখ, তারপর ধীরে জাগ্রত সমুজ্জ্বল  ভোর। এসবই আমাকে লেখায় আর আমি শিখি থিয়োসফি--- তুষারমৌলির ডাক থেকে নীল রূপে উপমিত বেদনা, জ্যোৎস্নার চন্দ্রাতপ থেকে দক্ষিণানিল বাতাসে উড়াই নক্সাপেড়ে শাড়ি, প্যারাশুট দিয়ে নেমে আসে সব সুদর্শন পাইলট— তারা জেনেই আসে বিমান চালনার প্রজ্ঞান, কিন্তু তারা নেমে আসে ধানের শরীরে মনে হয় সন্ধ্যা নদীর তীরে বরিশালে— ধীরে  ২৬/৭/২৪ ঢাকা

অণুকথা

১) যার দৃষ্টি প্রসারিত তার আর ধ্রুবতারার মাঝে যে শূন্যতা আছে তার সে শূন্যতাকে শূন্য বলে মনে হবে না কোনোদিন ২) মানুষের মৃত্যু সত্য তবে, যে যে আত্মারা চলে গেছে মহাকাশে তাঁরা কি সকলেই মানুষের দুঃখকে ঈর্ষা করে? ৩) মনে মনে কথা বলার জায়গা নয় এ সংসার কথা বল একা হয়ে জীবন দেখতে পাবে ৪) বিরহ আমার চক্ষু থেকে ঢালছে মায়া অনর্গল এই দু’চোখের বাউল হওয়া তোমার হাওয়া মেঘ বাদল ৫) তোমার মাতলামীতে শেষ হয় এ সংসারের ষড়ভূজ ঘর আমি মাতাল না হতে মদ খাই ৬) শোনো এই গান--- বিস্মৃতি শুধু সুখী সময়ের সুর ৭) বৃক্ষ যদি রচনা করে যেত তার আত্মজীবনী, তবে আমরা বুঝতে পারতাম মৌন ধুনের কোনো তুলনা নেই ৮) আমার বাগানে ভোরে আর স্নানে দেখি এক পাখি শিস দিয়ে উড়ে যায় আমি মান্যতা রাখি কিন্তু সে পাখি যদি বলে চুপ থাকি তবে ও পাখির দূরে যাই আমি তাকে নিষ্প্রেম ডাকি ৯) প্রেম নিয়ে মাতাল হয়ো না তোমার প্রাত্যহিক ব্যবহারে মদের উপস্থিতি টের পাওয়া যাবে ১০) আমি তোমাকেই ভালোবাসি আর আমি তোমাকেই চাই। তুমি কেন ওরকম ভালোবাসো? শিশুর স্বভাবে কোলে... শিশুর স্বভাবে বল যাই ১১) তুমিই আমার গান সুপ্তির সন্ধান ১২) চোখ সরে না রাত আসুক শিফন শাড়ি স্পষ্ট বুক ১৩) আঁখি ...

সিঁথিমোড়, কলকাতা

আহা, তার কাছে আর কী কী আছে মুগ্ধতা ছাড়া খুব দেখলাম, মেরুন প্রজাপতি, বসে আছে সে কী বিবস করা গায়ের রঙ আর ফুলের কাছে তার কত যে মিনতি যমুনার পাড়ে ধ্বসে গেছে! সে আর দেখবে না এরকম মেরুন সময় তার কাছে ঐ বিকেল মানে সূর্যবিয়োগ তিথি সন্ধ্যা আকাশ, তারা আর তারা, এরকমই সে প্রকৃতির সাথে মিশে কবিতা বলা শোক-অতিথি। নাইন বাই ওয়ান-এ, বাড়িটার পাশেই তুমি খুঁজে পাবে আমাকে, আমার হারানো গান বাজছে; সেখানে, পড়া-গান-কবিতা-কাকলী, সবই আছে তরুণ সূর্য-অভিধান, বর্ণমালা নিয়ে সাজছে। এ কোনো কবিতা নয়, এ আমার ধূসর স্মরণ সিঁথিমোড়, কলকাতা- এ আমার বন্ধু মানস বিদ্যুৎ হারিয়ে যাবে ঐ ঘনরাতে আকাশ কালো হারাবে না সিঁথি, সে আমার বর্তমান সাহস ঢাকা ২৩/৭/২৪

বর্ষা অসাবধানী

সূর্যের অমিত তেজ আলো আদরে জড়াতে চায় বেলির পাতায় হীরক শিশিরকণা, শিশির সে জানে না অফুরান রোদের পিতা সে, তাই সে ছুঁতে ভয় পায় তার প্রসারিত হাত। ভোর থেকে হাসি আসে মিটিমিটি- হেসে ওঠে দিন ...... রাতে রঙধনু নেই তাই সে এতটা বিধুর, রাত্রি খুলে দেখায় পান্ডব সংযম, দেখায় গ্রামধর্মের নেশা ব্লাউজের সেলাইয়ে ঘামলীন চুম্বন গন্ধ। এরকম দিন আর রাত শেষে ঢুকে যায় নাকে আরতির ধোঁয়া, ছন্দনাম ভুলে যাই সব তারা থেকে তারারে বিদায়, আমি এর শেষ চাই-- সে আমি চাই নিঃসীম সময়ে যেতে, এক হতে...... যেন ফলকী মাছঝাঁক ছুটে চলে মৃত্যুর দিকে যেন এক বর্ষাঅসাবধানী স্কুল পড়ুয়া ছেলে    ঢাকা ২৩/৭/২৪

আর্যবাণী

প্রতিটি তারায় আছে পৃথিবীর মাতৃমতি ঘর এ পৃথিবীর টান আমি জানি। এই টান রেশম কাপড়ে বোনা তাঁবু আর এই সন্ধ্যার নীল বন............ গান আছে বনের হাওয়ায় আছে লাল জামের মদ। আমি এক প্রাচীন পারস্য সম্রাট আজ শিকারে এসেছি। এই প্রান্তর আর ঘাস, আর এই ধবনিপুর থেকে প্রাণের ছায়া মেখে আজন্ম দগ্ধ মানুষ নেবে ছায়া, অস্ত দেখার মতো গান। তোমার দেখার দৃষ্টি হোক রাত্রিদেখার চোখ, তোমার বাহির হোক আত্মজন, ব্যক্তিসত্ত্বা শুধু নিজেকে প্রকাশ করে আর জগতসত্ত্বা সব। ওমর খৈয়াম, শেখ সাদি, জালালুদ্দিন রুমি, হাফিজ, মুহম্মদ ইকবাল এঁরা  এঁকেছেন ব্রক্ষান্ড, আর চলেছে আর্যবাণীর ক্যারাভান ঢাকা ২২/৭/২৪

হুইস্কি

মৃত্যুও সিনেমার সুচিত্রার দু’চোখ, ধীর টান তার প্রায়ান্ধকারে ঢুকে দেখি কাহিনীরা সব কারো দেহে আমি সাবানের মতো সুগন্ধ ঢেলে ক্ষয়। কেবলি এই পাটিগণিতের দিন শেষে ধ্রুবতারা ঐ আকাশে ঝিলমিল, মৃতের আবার চাকচিক্য! শায়িতের আবার উৎপল, শার্ল বোদল্যায়ারের ঝিম! জীবিত শোনো, পেয়ারার গন্ধ মাখা বুক, আমি সংসার ঘরানার প্রাণী, শিশুসুলভতা বাড়ে আমার প্রাপ্ত বয়সে। শুধু মানি, এই চিতা ছুটে চলেছে সে আমাদের শয্যায়, যেইখানে বর্ষাধোয়া তুমি নগ্ন শুয়ে আছো-- এই আদর চারুবাক সিদ্ধতায় পূর্ণ ভালোবাসা  এই হুইস্কি- একাকিত্বে জাগিয়ে তোলে মন সে সুর তোলে, ‘তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে’ ঢাকা ২২/৭/২৪

কথাগুচ্ছ

 ১ == কীভাবে দেখতে পারে মানুষ সূর্যের লাল রক্ত কণিকা – আমরা জন্মান্ধ, দু’জন এ কথা অবাক হয়ে ভাবি... তবে বুঝতে পারি, আমাদের এই ঘুম আজীবন পপি গন্ধে চুর, কীভাবে বুঝবো বল, মিলনে মানুষ  দেখে আরবসাগর, দেখে সহস্র নারকেল বীথি—কল্লাই নদী থেকে দক্ষিণী নৌকোমেয়ে দুলে দুলে ইশারা সবুজ... সিঁথির রঙের মত উজালা বেদনা, মুহুর্মুহু সৈকতে বৃষ্টির বোন--- শরীরে অন্ধকার রাত হয়ে নেমে আসে যেন আমি জলপাই বন... আসলে তুমি কেউ ভেতরে স্রোতের মহা টান-- এই নদীনাম তোমার --- জন্মান্ধ তুমি পাও ফসলের শেষ অধিকার আমিও ভিৎহারা, মাথায় গামছা বাঁধি, ফসল ওঠাতে যাই, হায় অনাহার।   ২ == মেঘনার ভাঙ্গনে উদবাস্তু নরেন ভাবে এই যে তার মাছ ধরার নৌকো, তার মাছ ধরার জাল—এগুলো তো পড়ে রইলো, যেমন পড়ে আছে তার সাত বছরের মেয়ে, নোংরা জলে পড়ে আছে সে---- শতের ওপর লাশ, মানুষ ভাবে এ দেশে সন্তানদের কোটা মুক্তি চাই না, জীবন চাই, জঙ্গী গোষ্ঠীর বুকে অ্যাসল্টের গুলি চাই– হৃৎপিন্ডে গুলি--- প্যালেস্টাইন ভাবে কবে পাবো পিতার লাশ-- আমার ভূখন্ড পরে---- কবে পাবো আমার ছোট্ট ফয়সালের লাশ...... ভাবনাগুলোর একক বার্তা এ পৃথিবীর কাছেই আছে, বলুন ৩ == লোক...

সুর সুফিয়ানা

শব্দের মেলায় তুমি যেও চিলমারী তোমার ঐ বেআব্রু নাব্যতা ছেড়ে তুমি যেও দেখতে এ পৃথিবীর তাবত নির্মাণ এই বুকে কী মোহন খেলা করে । করতল বন্ধ করেছিলে, এখন জোর করে খুলে দেখি – দু’ফোঁটা অশ্রু রয়েছে তাতে তোমার দুইটি হৃদয় মতো আছে – একটিতে নির্বিকারত্ব আর অন্যটিতে খুন আর মায়া...   মায়া আর জাগ্রত ঘুম । আমি সে দৃশ্যে খেলা করি তুমি কে – এই প্রশ্নে দ্বিধান্বিত হয়েছিলাম একদিন কবিতার টেরাকোটা,বেআব্রু বুক ...... হৃদয়ে থাকলে চেনা যায় কিন্তু তুমি যদি তোমারি অন্তরে থাকো তাহলে তো অচিন ! অতীতের শব্দরা, গতকালের গানেরা বলছে – কৈশোর নুনের মুগ্ধতা পবিত্র, কারণ   আমাদের চোখের জলে সমুদ্রের হস্তাক্ষর বালু বেদনা জমে জমে মুক্তো, হাস্যোজ্জ্বল তুমি যখনি তাকে বের করে আনো, ঝিনুক তনয়া তখনি শাদা ভোর, তখনি খিলখিল আলো, সূর্যশিশুর হাসি । আমি সারাটা জীবন চুপ, শুনছি রবিনাথ, শুনছি তাঁর প্রেম ও প্রকৃতি একতারা ছিঁড়ে গেছে কিন্তু আমি গাই সুর সুফিয়ানা আলোর হাতে অঞ্জলি দেয়া দেখি   সীতাকুন্ডের পোড়ামাটি কপালে আমার দেখি তুমি বীজ – তুমি অপেক্ষা রাত্রি স্খলিত হয়ে যুবতীরা নিয়ে আসে প্রাচীন কথক নাচ তর...

বিত্রস্ত আঁধারে

শীতের জানালার মতো হিম সরবতে রোদকণা......... ভিঞ্চির মোনালিসার প্রতিচিত্র এই রজনিচর ভোর। প্রত্যক্ষবাদ বজায় রাখি, আদরমুহ্যমান শিথিল শরীর তোমার, নিদারুণ চুমু আর চেটে খাই শ্বেতসার স্মৃতিরাশি। নেশা কাটা চোখ দেখে আলোধারা, তমাল শালের বনে পিকতান। শুখা বনে বাঘ আর হরিণ, মাথা প্রায় এক করে জল পান করে দুপুরের রোদে। তারপর কান্নার মত তুমি মিলিয়ে গিয়েছো অন্ধকারে। এ আমার প্রলপিত কথা নয় এ আমার রজোগুন। শিশুকে আদর করার মন করে পর্দার আড়ালে যেও না, শোনো, হিমরেখায় দেখা যায় রক্তস্মিত মুখ। পাশুপাত শাদা ফুল হাতে, স্নেহ ঝরে পড়ে না হয় চুমু চেয়ে না পাওয়ার কষ্টে ঐ ঠোঁট প্রপঞ্চ মায়া করে আর আমি রজতদ্যুতি সইতে না পেরে হৃৎপিন্ডে জ্যোৎস্নার গান নিয়ে হর্ম্যতল ঘুম। দেববিগ্রহে শ্যামাপাখি হয়ে ঘুরি..... জহুরি সময় দেখে তারপর, তারপর নেত্রপাত তারপর খরিফ ক্ষেতে প্রতিঘাতী হাওয়া। অশুমার শ্যামলতা পেরিয়ে আমি উপগুপ্তের কাছে ছুটে যাই। তাঁকে বলি - স্মৃতির পরেও যে অব্যর্থ স্মরণে সে বেঁচে আছে এই চোখে তার মৃত্যু নাই, সে ত্রিমূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে প্রতি ভোর হিমরেখা ধরে। এই বিত্রস্ত আঁধারে, সে আমার দেখাশোনা করে।

ইচ্ছে

আমার এ ঘুম কোনো নীল জেগে থাকা সেই ঘুমে চোখ ছাড়া ঘুমে যায় সবি সে ভাসানে প্রেম আসে পদ্যের গাঁথা সাপের মতন প্রেম ভ্যানগগ ছবি কী সোহাগে দেহ থেকে মন মরে আগে দিন-রাত যে তোমার শ্বাসে ঝরে পড়ি বেলির কলির মত বুজে থাকো রাগে রাগ নয় এই ঘুম ভালোবাসা পরী একবার প্রেম মানে এক হতে চাওয়া তোমার শরীর মানে ব্যাগ্র উপাসনা হাওয়া কেন উড়ে যায় শীস গান গাওয়া তোমার ঐ মন পরী এত এত চেনা হাসি কোনো বিচ্ছেদ, যে আমার ঠোঁটে একটা কলম দিও কালিহীন শোকে আমাদের যদি আর ভালোবাসা জোটে কবিতা লিখবো আমি রাত্রি রোয়াকে

বনলতা সেন

আমাদের চোখে আছে নীল নীরবতা আমাদের ঠোঁটে গান হারানো সে ব্যথা ব্যথারা কবিতা হয় ট্রয় আর রক্তের ছাপ ভালোবাসা খুন নেয় ভালোবাসা এক অভিশাপ অভিশাপ জানে গান সিনেমা কবিতা সিনেমা কবিতা নয় জীবনের গোধূলীর কথা জানে এইসব জানে বরিশাল কিশোরীর নদী জীবনানন্দ জানে মানুষের অশ্রু আরতি আর জানে কেন তিনি এমনটা ট্রামে ঘুরলেন অশ্রুর থেকে লেখা এক একটা বনলতা সেন মেয়েমানুষের ব্যথা এই ব্যথা কবিতা লেখায় মাধবীর প্রেম সে তো পুরুষের বুক হাতরায় জেদ করে মাধবী যে, শুধু চায় প্রেম আর প্রেম এমন বর্ষা রাতে সেই প্রেম বনলতা সেন মুদ্রিত পৃথিবীর এরকম শেষ কবিতারা শেষ কবিতা তো নয়, শেষ নেই শুরু নেই সারা এরম বৃষ্টি দিনে মনে পড়ে নিশিথীনি রায় দিন বদলায় আর মানুষের মুখ বদলায়

ধুন

কত কথা ফুলঝুরি তোমাকে দিলাম রাত শোনো বিহনের টানে ফুল অঝোর বিকেল ছায়া ছায়া ধ্যান জানে ঘুম জানে মন জানে লকনৌর মায়া রূপ কিশোরী গাল মখমল বুক না ঘুমোনো। লকনৌর মায়া সে তো পুরোনো চাকার গাড়ী ছুট পুরনো বর্ষা রাত তিতাসের বুক ছলছল এত যে নৌকো সেচি বুকে তবু জল আর জল জল ভরে যায় তবু ঘুম আসে পালে, রাত লুট। ভোর হয় এ সময় প্রবারণা পাড়ে যায় মন মনে পড়ে পূর্ণিমা বুদ্ধের চোখ নিরাকার মনে পড়ে আলো তার পড়েছিলো চোখেতে আবার তখনি তাকায় সে যে, মনে হয় নির্জন বন। সন্ধ্যার বনে খুঁজি নিরাকার বুদ্ধের মুখ অথবা তোমার ঘুম নিঃঝুম বনে এক গান সেই গানে সেই ধুনে ঝুম পৃথিবীর মন দান মন পাও বা হারাও এই ব্যথা আমার অসুখ।

ডুব

কান্নারা জমে আছে তোমার বুকে লিনা তুমি ফুঁ দাও বাঁশিটি বাজুক আজ কাজলে কাজলে চোখ হয়েছে উজালা ডাগর চোখের আক্রোশে আজ উচ্ছন্নে গেছে মন লতানো পাতার গলাবন্ধনী খুলে এসো তোমার বুকের মাখন স্তুপে দাঁত বসে গেছে আমার ষাট রাত ষাট দিন পরে নিদ্রাহীন জেগে আছি যখন মেঘের সাথে কথা কবে চাতকের মেয়ে; তখনই আমার কবিতার বই খুলে পড়বে সে বিছানা সাজিয়ে সুষুপ্তির দিকে এত ঢেউয়ের মাঝ থেকে সে ডেকেছিলো, ডাঙা আত্মা বেঁচে রয় রবিনাথের মত, কারণ এইমাত্র শুনলেন উনি – রবিনাথ তাঁর গানে প্রকৃতি তাঁর গানে ঈশ্বর তাঁর গানে প্রেম আর আমি ঘুমিয়ে পড়ি; বুকে তুলে নেই গোলাপ কাঁথা তোমরা তো সবাই সবাইকে চেনো – আমি ভিনদেশি তবুওতো সে আসে নির্বাক, নদী-আলো কথা কয় যেন সে নিজের প্রেমের কথা- যেন পরাজয় যেন সে প্রেম এনেছিলো সন্ধ্যার ডাহুক এরপর পশ্চিম এরপর অস্ত এরপর ডুব

পুজোর মাঠে ট্রাপিজ বার

নৈর্ঋত  থেকে  নৈর্ঋতে  যায় সন্ন্যাসির মা মা ডাক, মন্দিরের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসে দূর্গা মাতার বেণী। ঝড়-শিকারী তুমি সূর্যের মেয়ে কোটি ফুলের কলি চক্ষু তোমার --- এসো।  বনের গন্ধ আসে রাতে মাঝরাতে বিস্মৃতির ঘাটে ঘাটে তত দূর খেয়া পারাপার করো চিরকাল তুমি পুরবী... সমুদ্রে গিয়েছি তাপর, সমুদ্র পাড়ে আমি বিয়োগ চিহ্ন দেখি সটান শুয়ে আছে।  দক্ষিণ দিকে... লবনাক্ত জল আর দক্ষিণ...  জয়ের পতাকা খুলে নিয়েছি সন্ধ্যেবেলা এখন যাপন। ওশান প্যারাডাইস হোটেলে ঢুকে দেখি সমুদ্র দেখা যায় আর ভেসে আসে দূর থেকে মা মা মাগো......... ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মাতৃ রূপেণ সংস্থিতা   এরপর শৈলচূড়ায় গেছি এই উষ্ণতায় বাবার চোখের মত হাসে সে।  সেখানে দাঁড়িয়ে বলি,- নয়ানজুলি, প্রেমক্লান্ত এই বারোটা বছর শেষে ঘর করি চল, এ যাপন হবে তোমার-আমার দাবা খেলা বছর বছর  শুদ্ধ ভুলের মত এ আমাদের জীবন যাপন; জীবন এক পুজোর মাঠে ট্রাপিজ বার। 

দূরসম্পর্কের ঈশ্বর

আলতা দিয়ে লিখেছে সে প্রেম সারা পা’য়, তারপর পোড়া মধ্য দুপুরে সে রবিগৃহে------ শান্তিনিকেতনে, ধান পাতা উঠোনে নেচেছে বিহুনাচ স্বচ্ছ রাত্রি মেয়ে নগ্ন বাহুতে তার, পুরুষের স্থির-মুগ্ধ চোখ স্তনের ভাঁজে স্বেদ তার গড়িয়ে যায় কাচ জানালার গায় ফোঁটাফোঁটা বৃষ্টিদানা সুখ সে আসে আর আঙ্গিনায় খেলে যায় চাপা-শ্বেত মুক্তা মণি শিশুশাদা দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ে চারপাশ হাসি তার রৌদ্র ঝিলিক মাঝদুপুরে প্রাচীন গ্রামের ঘুঘু ডাক কান্না তার যেন তার অতীত যুবকের ক্ষুরকৃষ্ণ চোখের আঘাত চুল তার রাত্রির গহন সুন্দরবন বৃক্ষ আর সোনা হরিণের নীরবতা তার সিঁথি ব্লুবার্ড চোখ শিশুসরল এ সকাল নীলগিরির হাওয়া এসে বলে যায় – শীত সবুজ শনের দেশ ভালোবেসে হাওয়া এসে শীত আরো শীত ক্ষুরকৃষ্ণতা আমি জানি না পরমা স্মৃতিহীন চাঁদ ওঠে নীল নীলিমায় আকাশের তারারা দেখে আলো আমি দেখি কালো – বাকী কালো আকাশ যেইখানে তুমি বাস কর সেখানে কি রণজিৎ দাশের এক দূরসম্পর্কের ঈশ্বর বাস করেন?

গুম খুন নিরাকার

এটা কোনো রাত নয় মন পাখি কথা কয় ঘুম মৌনতা নয় অমাদের কথা হয় পুরোনো শপথ মনে দিনরাত তড়পায় ভাঙা মাস্তুল মাঝি ঝড় নদী গান গায় রাত্রিরা হতবাক ঘুম বিস্মৃতিটার তুমি কার কে তোমার প্রশ্নটা কী অসাড় তবু ধীরে দেখা হয় লাগেনি তো পরিচয় আমাদের যুগ যুগ এইভাবে কথা হয় তারপর কী আঘাত গেছো তুমি হারিয়ে সারাদিন বর্ষাত চোখে ঘুম পাড়িয়ে সংসার আর কার কথা কয় নিরাশার তোমার বেথুন বনে সবুজাভ মায়া ভার আমি আর তারপর করি না কবিতা ঘর শব্দেরা নিরাকার তারপর তারপর এখন লিখছি যা সত্যিই কবিতা মৃত্যু কবিতা দেয় অন্তরে ভাবি তা কথা বলি কবিতায় দিন যায় রাত যায় গান-কান্নার সুরে তুমি সব কবিতায় কথা হয় নদী পার কথা কয় নিরাশার শোনোগো বিমনা রাত গুম খুন নিরাকার

সুইসাইড

সূর্যের কাছে সুখমুদ্রা নিয়ে বসে আছি, নাও--- শোনো, গম্ভীর ঢাকেশ্বরির ঘন্টা বাজে, তোমাকে যদি নিয়ে আসে এই ভোর দুজনের বুকে শান্তি-সমাহিত প্রেম আছে। হে আমার বদ্ধ প্রকোষ্ঠ প্রেম, রক্তমদের দাহন তুমি পান কর--- এ তোমার দহন পোষা বুক মধুর মেয়ে তুমি, শাড়ির প্রান্তে তোমার রাতব্যাপী কবিতার স্বাক্ষর দাবদাহে মেঘ আসে বর্ষাসমেত জাদুর ছিটে। গানদেবী ভোরসুর তোলে শিবরঞ্জনী; আর এই পাখিপ্রিয় ভোর, বন্য গোলাপগন্ধ মাতাল ভোরে নির্জনতা আছে। আছে বনটিয়ার মিহিন পাখার ঝাউ-- রাত্রিকুটুম এই বকুলগন্ধ বনে এরপর উঁকি মারে আত্মঘাতী চাঁদ; সে আলোতে দেখি--- মৃতের মাদুরের মত পড়ে আছে কোটবাড়ির পাহাড়ের ধূসর পাথরখন্ড আমার সাথে তারাদের অবিনাশী চোখ দেখে ---- কোরবানির ছুরি বুকে কেঁপে ওঠে কবিতার

কক্সবাজার

  তোমার গহনে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করে না। সমুদ্রে এসে এই হোলো আমার বুঝতে পারা। প্রমান সহ বুঝতে পারা, এই পৃথিবীতে জলের আধিক্যই বেশি। তাই তোমার-আমার অশ্রুজল বড় বেশি স্বতঃসিদ্ধ এই পৃথিবীতে, বড় বেশি মানানসই এই বোধ হোলো আজ ঈশ্বর যে পরিমান জল নিয়ে খেলা করেন, সে খেলা আর তোমার হাসিতে কৈ? সে হাসি ক্ষুদ্র, নিশ্চিহ্ন...... ঈশ্বর জলের প্রেমিক, হে সমুদ্র......... জল দিয়ে ঘিরে ফেলে শুধু নিরুদ্দেশের খোঁজ চালান তিনি আর আমরা সবাই আব্দুল জব্বার। আমাদের কন্ঠে সেই নীল গহনের গান... হইয়া আমি দেশান্তরী------ দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে............ [গতকাল রাতে কক্সবাজার সৈকতে বসে লেখা।]