পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০১১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

জল পড়ে পাতা নড়ে

পদ্যহরফ জোনাক পথে তৃষ্ণা বাড়ে রাতদুপুরে ছন্দমেয়ের নূপুরটারে ধরতে ঘুরি দেবদারু বন নূপুর কোথায়? হাওয়ার পাতায় বলছে যে খুব কানেকানে - "মেঘ করলেই আর লিখো না, জল পড়ে পাতা নড়ে"... পদ্যহরফ অংকুরে তোর মেঘ-তারা পট নিত্যদিনের রাংতাকুচি রাত তারা তুই পাইন ছায়া হ্রদ নৌভ্রমণের রাত্রি পলির বুকের ভেতর বীজ ছড়ালি প্রজাপতি পোড়োবাড়ি ধুপছায়া তুই চিনলি কেমন ভগ্ন মাটি! চোখের ভেতর নিয়ে হাঁটি চন্দ্রাহত তোর অভিমান পদ্যহরফ, তোর ধারাস্নান ঘুমপাড়ানি ছড়াকাটি বিজন বাড়ি জল পেলো না কেন সে কি বলতে পারে? মনোজ এক দেউলে বাতাস মেঘ উড়িয়ে বৃষ্টি কাড়ে। ঝিনুক মাঝে সুপ্তির ধীর মুক্তা অধীর ঘুম কিনারে বালিয়াড়ির পায়ের ছাপে বহুদূরের তৃষ্ণা বাড়ে ...

যাপন

চোখে সিঁদুর ছেটানো জ্বালা; একটা জাল বুনতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছি রাতসুতোর রিল। পরিধি ছোট হয়ে এলে রাত্রি আমার শয্যার মত বড় – তার চেনাজানা জমিনে ঘুমানুষঙ্গের এপাশ-ওপাশ। এপাশে চুপদুপুর তো ওপাশে হৈহুল্লোড়ের মাঝে মাঝে পূর্ণচ্ছেদ দৃষ্টি; যেমনি দীর্ঘ শব্দমালার পর পর ফুলস্টপ দেয়া থাকে। ওপরে রাত্রি থাকে না, শূন্যতা থাকে, থাকে অন্ধত্বের অনুভূতি আর অসীম দর্শন। চোখের মণিতে অর্ধেক কালো আর অর্ধেক নীল নিয়ে বেঁচে আছি। এ রহস্য কনীনিকায় তাই তোমার ভয়। তুমি জানোনি সে অভিশপ্ত। তুমি জানো না। তাই একটা চৈত্রের চুপদুপুর পশমী চাদর এই শীতরাতে জড়িয়ে আছি। এই শেষ রাতে স্ট্রিটল্যাম্প সারি জুড়ে দেখ কত নিঃসঙ্গ আলো ---- নিউরণে জীবনের দাহ থেকে জন্মানো অগ্নিকান্ড তারও চেয়ে একা! উড়ে যাচ্ছে পতঙ্গপাখা আর আত্মখুনের নোটে শিশুঠোঁট গান।

মুক্তি

মেঘ জমেছে বিশোক আকাশে বিরহ তুমুল ঘুমচোখে স্বপ্নের শাদা নিয়ে কালোতে আঁচড় হঠাৎ আকাশ ফুঁড়ে রঙধনু বিনম্র ছুঁয়ে দিলো দিগন্তরেখা আমি তার বাঁকে ঢলে পড়ি...... শুধু ঘুমিয়ে পড়ি... ও আমার অভিমান ক্রমাগত বেড়ে বেড়ে সন্ধ্যেবেলার ফুল দুই চোখে ঝরে গেল মৃত্যুসুন্দর। এই সমুদ্রউড়ান তাই উড়ে যাব, বন্দী পাখায় আমি জমিয়েছি লক্ষ উড়ান মায়ালোক দূরে থাক দেহ-মন সন্ধির গান ইথারবিলীন... নীরবতা জমে গেছে, জেনেছি কেমন তুমি পৃথিবী কেমন সময়ফসিল থেকে চিনে গেছি হৃদয়বিন্যাস রাত্রিশান্ত জলে নিভে যাক কাঙ্খার তীব্র আগুন তুমি আর তোমাদের ক্রীড়া থাক হাজারো দর্শক। ঘুম জমেছে জন্মাবধি প্রতারক দিন থেকে যতটুকু বাঁচিয়েছিলাম। ঘুমুতে দাও চতুরচক্র এবার বেরুনো যাক সকাল রাত্রি জন্ম মৃত্যু ছুঁড়ে ফেলে ছন্নছাড়ার পথে ইরাবতী নদীনিশানায়

এবার নিশানা ভোল একলব্য তীর

ছেড়েছি - ফেরত এলে কবিতার পাখি আমি নয় আরেকটু অগোছালো থাকি শোন তুমি উদাত্ত মেঘডাক, আত্মহত্যাপ্রিয় তীরবাজ ! স্থির প্রহরের ভ্রূভঙ্গিতে তোমার কেঁপে উঠেছিল রক্তটিপ বুকে দাগা চা-বাগান ত্রিমাত্রিক ছাপ নিয়ে মুদ্রিকা বলো নাই বৃষ্টির নাচ আকাশের কান্নাসোহাগ -- এই ঘুম ঘুম অঘ্রান তীর্থ প্রদক্ষিণ প্রজ্ঞার নম্রতা ভোরহারা চোখ, শুনি উদাত্ত মেঘডাক, জানি তুমি আত্মহত্যাপ্রিয় ব্যাধ। ভোর তো তোমার গান; সেই সুর, নদীর দীঘল বাঁকে পাতিহাঁস উড়ালের সুকান্তরেখা থেকে বিলয় ভাসিয়ে আনে, শুনি... এই তিলচিহ্ন বন্দীযাপন নীলগিরি-নিঃসীম নীলা তুমি চোখভরা ফুল বরফ পাহাড় তার রুপালি গ্রহণ তুখোড় তুলির টান তুষধিকি গহীন দহন চোখভরা ফুল তুমি শাদাশীত ভোরের কুহক বিনত দেখতে পাও খুন; মৃত কবিতার ক্যারাভান ছাড়িনি তোমাকে ছেড়েছি আমি আত্মহত্যাপ্রিয় নাম, তবে এবার ফিরিয়ে নাও চোখ এবার নিশানা ভোল একলব্য তীর, কত আর পান কর পাখির রুধির !

লিরিক - ৩

খুব দেবে শীত কুয়াশা তোমার নাম ঘ্রাণ দেবে ওম গন্ধ বকুল ভুল পরিণাম পথ দেবে পথ পথ হারাবার ধুমকি নেশা তোমার নামে শীতের দহন ঘুম কুয়াশা রাত পড়েছে ভীষণ কালো অন্ধকারে তারার বুকে মেঘের আঁচড় রাত্রি বাড়ে পথ যখনই ঘরের কিনার বকুল হাওয়া ভোরের কাছে যেতেই অসুখ নিশি পাওয়া ..................... ০৮/১২/২০১১

লিরিক - ২

তুমি এমন ঘুমিয়ে গেলে জাগল আকাশ পলাশপুরের ছোট্ট স্টেশন দিল দরিয়ার চরের সাথে জাগলো সকাল রাত্রি দুপুর তুমিই কেবল ঘুম জাগালে ঘুমিয়ে গেলে আর এলে না সকল জাগা আনন্দরা খুঁজলো তোমায় ফিরলো তারা সঙ্গী বিহীন জানলেও না তুমিই কেবল ঘুম জাগালে ঘুমিয়ে গেলে আর এলে না ......... ০৮/১২/২০১১

অনুবাদঃ Dance Me To The End Of Love by Leonard Cohen

তুমি সুন্দর নেচে এসো নিয়ে জ্বলন্ত ভায়োলিন যত ভয় থেকে নেচে এসো, দিও নির্ভাবনার দিন জলপাই শাখা আমি যেন এক, নীড়ে নিয়ে চল পাখি ভালোবাসাবাসি শেষ দেখে নিতে, পরাতে তোমার রাখী চলে গেলে সবে দেখবে তোমায় মন তোমার ভঙ্গি অনুভবে ঘোরে চলনে ব্যাবিলন ধীরে ধীরে তুমি দেখিও আমাকে সীমানার শেষ বাতি নেচে এসো তুমি অনন্ত প্রেমে, নেচে এসো সুখ রাতি মিলনেও নাচো, নেচে নেচে যা্‌ও, কোমল মুদ্রা দীর্ঘ ছড়াও ভিতরে বাহিরে ভালোবেসে বেসে আমরা দুজন সাথী প্রেমের অন্তে নেচে এসো তুমি নীড়ে ফিরে চলা পাখি নেচে এসো তুমি, সাথে করে যত অনাগত শিশু মুখ নেচে এসো ছিঁড়ে আদরে পুরনো কালো পর্দার বুক গড়ে তোল ঘর মুছে ফেলে সব শোক... এই সুন্দরে নেচে এসো নিয়ে জ্বলন্ত ভায়োলিন যত ভয় থেকে নেচে এসো, দিও নির্ভাবনার দিন নগ্ন ওহাতে ছুঁয়ে দিও তুমি অথবা ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না নেচে এসো ভালোবেসে তুমি মেয়ে, আমাকে হারাতে দিও না

শর্ত সাপেক্ষে

এইসব পরাধীনতা খুঁজে নেওয়ার আগে আমি জোনাকজ্বলা অন্ধকারে শিতিকণ্ঠ বেঁচেছিলাম ফানা’র আর্তি নিয়ে প্ল্যানচেটে নামিয়ে এনেছিলাম বিগত বাৎসল্যের পরী এই আনন্দশীত ব্রজপুর... সারেঙ্গির সুরে সুরে কবিতাহারার শ্যামাগান বর্ষাবিলীন রাতে ধারামুখর আরশিনগর জুড়ে ছিলাম তবে ছলবাজ ঘরামির কাছ থেকে ঘরের চাবিটি নিয়েছি এখন আমার ফেরার চোখে কড়িকাঠ কালো কৃষ্ণতারার চোখে নিবিড়তা এমন কোরো না চাহনি এমন গভীর রূপলোকে অধোমুখ বসে আছি হুশিয়ার কবিতার সুরে তান রেখো হাওয়ার রিমঝিম শীতের সকালে রেখো রোদের পিরান ফেরার আমি স্বপ্নঘরামির কাছ থেকে ভালোবাসার শর্তে পরাধীনতা খুঁজে নিয়েছি স্বেচ্ছায় খুঁজে নিয়েছি দরজার চাবি এক অলিভের ডাল