প্ত্রালিকা - ৭

১}
ছড়াকাটা
*
ধীরে ধীরে ভেসে আসে
রাগ বারোয়ারি
সাগরমেখলা যে
সবুজের বাড়ি

মৌ মৌ গুঞ্জন
রোদ বালুচরী
হৃদয় দেউল তার
মায়া ছড়াছড়ি

দেখা হবে আরশিতে
আলোক-আঁধারি
সিঁদুরে রঙিনে হবে
রেণু ওড়াউড়ি

তার কাছে পাখি হব
মরে যাবো ভারি
ভ্রুরেখা ধনুক
যার রূপের প্রহরী

২}
অনেক যুদ্ধ করেছি জীবনে, মঞ্জীরে শুনেছি কত রক্ত কথা কয়... জিতেছি বহুবার তবু আনন্দ কোথায়, কোন কলিরকাননে? একবার কানামাছি খেলতে গিয়ে হেরে গিয়েছিলাম এক শিশুর সাথে শিশুর কাছে পরাজয়ের এমন আনন্দ আর কোথাও পাইনি

৩}
এমন বিভোর আগে হই নি কখনও, সবাই দেখলো ফলবতী ঋতু - আঙুর শিল্পীর প্রেম বেজে গেলো মগ্ন ভায়োলিন আমি যেন হঠাৎ ঢুকে গেলাম রাতে চোখ ধাঁধানো ভেনাস জুয়েলার্স শুনলে না গোপন করতালি, এমন নাচলে তুমি যেন সামনে কেউ নেই !

৪}
যদি পারতাম ছুঁড়ে দিতাম এই পোখরাজ
বিহ্বল সব রাতের শুক্তির বুকে জমা মণিদীপিকা
যদি পারতাম মুছে দিতাম সব আক্রান্ত ঘুম
কিন্তু আমি তা পারি নি হে প্রাত্যহিকপ্রয়াণ
কবিতার অভ্যাস - এক উপহার

৫}
আমি দেখেছি তাতে একটি মাতাল, চুর
তার মুখ আয়নার মত লাগে

৬}
তোমরা কবিকে হাসি উপহার দিও
জানো না, কবির হাতের ছাপ রয়ে যায় বাগানে শোকে?

৭}
সমর্পণে নিমগ্ন যে বুদ্ধ তমোহর
স্মিত হাসির আকুলতায় মুগ্ধ চরাচর
একটি হাসি ঝিলিমিলি নিতল নিরঞ্জন
শাপলা ভরা দীঘির সাথে চোখের আলিঙ্গন

৮}
কেন আজ দুঃখশ্লোক
যেদিন নন্দিত করেছিলে
আমাকে আড়াল করেছিলে,
পূর্ণিমার আকাশে জেগে উঠেছিলে শান্তিময়ী, সুধীর--
সেদিনও বুঝিনি

তোমার তো কোন কান্না নেই
তবু কেন বৃষ্টি পড়ে
জানিনি পুষ্পই একমাত্র জানে অপেক্ষার মানে
চিরকাল কেউ অপেক্ষা করে না
তাই ঝরে যায়

৯}
এখন এই ঝিলপাড় নিঝুম নিঝুম দুহাতে আড়াল করেছি দিনের ব্যস্ত চোখ জানতে পেরেছি ঘোর তিথি লাগা সংকেত, ছায়াদেবতার ইশারা ধীর রিক্সায় হ্যারিকেন দোলে, এদিকে আমার ভেজাঘরে নোনা হাওয়ার মাতামাতি আর সবকিছু সুনসান রাতে কি পরাজিত হয় পাখির গান? আর সবার মত নয় পাখিরা, ওরা ঋষিগাছ ভালোবাসে গাছের গায়ের গন্ধ লেগে থাকে পাখিদের দিলির পাখায় রাত্রে গায় না পাখিরা, অথৈ আঁধারে ওরা খুলে দেয় নির্বাক প্রাণময় হৃদয় - রাত্রি এক প্রেয়ার হল

১০}
মানুষের কেউ নেই তবু প্রয়াণ দিবস কেন ঘুরে ঘুরে আসে

১১}
জানি তারাই প্রকৃত মুসাফির যাদের ফিরেদেখা নেই
তবু সেই অষ্টমী রাতের ধুপতি নাচ
মুদ্রার চকিত অহংকার- এক ধাঁধা

১২}
ঘুমের শব্দ শিখি, যে ভাষায় কোন ঘৃণা নেই

১৩}
তোমার মৃত্যু আমি এখনও কান পেতে শুনি গল্পের আসরে অথবা তানপুরার কথায়, অমাবস্যার আদিমে কিংবা রৌদ্রনদীতে যখন হরিণের পিঠের আলো এসে পড়ে; তোমার প্রস্থান চিত্রার মত জেগে ওঠে শুধু শুধু মানুষ বলে, ঘুমের আগের প্রহর স্মৃতি আক্রান্ত আমি তো এখনও সমস্ত প্রহর রিক্ত বাঁশিটির কাছে বসে থাকি আমার বিস্তৃত রঙের করিডোর জুড়ে ছুটে গেল সেই এক হিম শাদা অ্যাম্বুলেন্স... তার সাইরেন... চির নিরাকার 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অনুবাদ - Gloomy Sunday (আত্মহত্যার গান)

অনুকবিতা

অনুবাদঃ “আফরি” –“ the most beautiful one!”