পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০১২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কবি, আমাদের কবিতারা

"বৃষ্টির দেবতা আমি এ জীবনে যত বৃষ্টিপাত করেছি সে সব কথা মনে পড়ে, ফলে বেঁচে আছি। বৃষ্টিপতনের কথা কোনোদিন গোপন থাকে না।" -বিনয় মজুমদার জল তুলতে এলে আর কবি বিষাদ পুকুর, কলসির আলপনায় সে যে আরো কাছাকাছি- নাচের পিদিম তুমি জল তুলেছ আর চুপ করেছ সব কাজ, কবিকে নিয়েছ? নাকি অচেনা ভাদর ! কাঁখে এরকম হাসির দুপুর তুমি জল তুলতে এলে আর কবি বিষাদ পুকুর। ঐ লুপ্ত বাসস্থান, ঘুঘু আর সুর মিলে মিলে এই নীলচে কালো মশারীতে সিলিংফ্যান হাওয়ার ঢেউয়ে দেখি নিদ্রাহীন ঠাকুরনগর, নেশাতুর কবিতা স্টেশন- আমাদের কবিতারা এরকম ঘর বিমুখ করেছে সব, এনেছে নিবিড় যাপন-- আমাদের কবিতারা শুধু মস্তিষ্কে আর ধুকপুক হৃদপিন্ডে বাসা বাঁধে; আমাদের হাত কাঁপে, ক্ষয় শুধু ক্ষয় নয় আত্মনিপীড়নে আর আত্মহত্যায় যে সুবর্ণ অক্ষরের বিনিময় সেইখানে কে বাজায় শহুরে নূপুর! জল তুলতে এলে আর কবি বিষাদ পুকুর!!

সময় অথবা স্রোত

ওরকম বয়ে চলার কথা, উদভ্রান্ত পতনের কথা একদিন বলেছিল নির্ঝর মুক্তির ডানাকথা শুধু ঘরহারা কিছু নয়- তারও কিছু লক্ষ্য আছে সমুদ্র আকাশ মুক্তিপূজারী কেন ছোটে আর গড়ে গড়ে তোলে তার ব্যাখ্যা বোঝ। সুভদ্রার জানালা ছিলাম, আমি ময়নমতির  বাঁক যেইদিকে চলে গেছে সেইদিকেই ছিলাম। আমি সেই পূজকের জবা কানে গুজে ভুল করে নদী স্নানে নেমে পড়ি খড়িমাটি দাগ কাটি পথে অনবধানে বায়ুগর্ভে চোরা শিস বাজিয়ে তলপেট মুচড়ে দিই রূপলতার বুঝি সব রূপকিশোরীর পায়ে পায়ে ছিল আলতার ভুল- আজ বুঝি রুধির; আলতায় লেখা ছিল নূপুরগীতবিতান শ্রাবণের গান শেষ হয়ে গেলে বিজরী ময়ূর চলে গিয়েছিলে মেঘচিঠিঘর কাল রাতে চিঠি এলো তার, সেইখানে লেখা ...ভাঙ্গন আর লেখার টেবিলে টুপ করে ঝরে পড়লে তুমি গান মাতাল চাঁদ, সন্ধ্যা তখন,- বন ময়ূরীর সাথে আর কিছু মেঘের যোগে নীল রাংতা কুচি হয়ে উড়ে গেল সব চির প্রস্থান... কী যে লিখব ভেবেছিলাম, এখন আর মনে নেই আমার সৌরসন্ধান পড়ে রইল ইচ্ছেকুসুমের গহন কোরক চাঁদকে বোঝাই, আর কোন অক্ষর নেই, আর কোন শব্দই নেই, চাঁদমণি! মিছেই তোমার দুর্বিনীত ঝাপ, গান যা লিখেছিলাম তা সুরের বজরায় চলে গেছে গোমতীর ঘোলা...

যা,

এবার তোর প্রস্থান বড় কষ্টের স্বৈরিণী শ্রাবণ পড়ন্ত ঝড়ের আওয়াজে ছুটে এসেছিলি। তোর মুখে একদিন শরতের উদাস তো অন্যরাত স্মৃতিসহায়িকা। বৃষ্টি; বৃষ্টিময়তা নয় কোনোদিন। তবু যা কিছু জল-চুম্বন-প্রদাহ রেখে নুন বাতাসে বিদায় জানাবি, তা বড় কষ্টের হবে, নারে! আমি বুঝি তোর আর কবিতার বিযুক্তি অনুরাগ। এই মনে বিমনা মলহার, কাজলের আঁক থেকে বেঁকে যাওয়া শ্যাম নদী পেড়িয়ে চলে যাবি, সত্যি চলে যাবি?

দুটি লিরিক

= ১ = রাত্রি তোমার নন্দিত ফুল হয়ে ফুটে আছে খুব ফুটে আছে এসময়ে রূপটি ভীষণ অরূপ রুপাজলে এসেছে ঘর বৃষ্টির মৌ তালে আজ বিভোর লিরিকের রাত তুমি বুনছো রাত সুর দিয়েছো তুমি শার্সিতে জল আলতো আলতো ছুঁয়ে মন-কথা জল আঙ্গিনার ঘাস জুঁইয়ে সুবাসের কোন খোলা জানালার কানে হরফ দিয়েছো কবিতা দিয়েছো এনে কবিতারা গান ফোঁটা ফোঁটা জল মুখে কবিতারা সুর বরষার মুখ দেখে আলো নিভিয়েছো আলো জ্বলে আলো জ্বলে জোনাকির মত মুহূর্ত নেভে জ্বলে আবছা নীলে আঁধার মিশেছে রাতে কান পেতে রাখ রাত্রির পাখি ডাকে ভেবেছিলে খুব একলা বর্ষা দেখা এই রাত্তিরে তুমি একা- সব একা... ........................... = ২ = ছায়ার সাথে কার খেলারে শিশু ছায়া কার ছায়ার সাথে মায়ার খেলা শূন্যে প্রতিবার এমন অনেক খেলাই আছে মনে খেলার নদী ছিন্ন মনে খেলা করে নদী নিরবধি বন্ধু তুমি আলো হবে শিশুর মত হব দীপ্র এসে আমায় ছুঁয়ো দেখতে তোমায় পাব আমার সাথে আমার ছায়ার খেলা তখন নদী তুমি আছো জেনেই খুশি লক্ষ শ্রাবণ কাঁদি

পিল

এই রাত একা- অনুপ আঁধার, তুমি চোখ বোজ নিশীথা ঘুমোও, তুমি তো মধুর রূপ কৃষ্ণরেখা দিন ক্ষণ মেলাতে বল লোকনাথ পঞ্জিকা খুলে- যাত্রা কবে শুভ হবে, বা কখন নদীরা বিরূপ। জানো নাই, শুভ-অশুভ বোধ খুচরো কয়েনের মত ছুঁড়ে দিয়েছি নাইট শো-এ রুপালী টকিজ; একটা বাঁকা হাসিতে দর্শক, ভনিতা নেই কোন- তাই আছি। কোথাও যাবার ছিল কিনা, কেউ আর দেখে কিনা ফিরে আসা পথ, হঠাতই মনে হোল!! হঠাতই মনে হোল স্বপ্ন দেখাব, তাই সুজনি চাদরে ঢেকেছি, দোদুল লালাবাই... ফুলদোলনা এই রাত একা- সুরেলাআঁধার। তুমি চোখ বোজ, প্রিয়কামনারা থাক্ হরিয়াল উদাসীনা ডানা, চোখ বোজ চোখের বিদ্যুৎ, শোন, এই রাত একা- স্বপ্ন ভাসাব বলে পিয়াইনের রুপা জলে আমি নীল নৌকো হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি- দেখে যেন ঘুম ঢলে নাজনী’র মুখ

আবার কিছু খেয়াল... (৫৯টি)

{১} কিছু আত্মহত্যা প্রবণ পাখি উইন্টার ফরেস্ট থেকে উড়ে গিয়েছিলো সূর্য লক্ষ্য করে, জীবন-আনন্দের দিকে... {২} তারার মেয়ে সন্ধ্যা নামে সন্ধ্যাতারা রাত যেখানে {৩} আর্টিমিস, বিদ্ধ হতে হতে জেনেছি জীবন অন্যখানে; হে সুবর্ণা শিকারি রাতের অরণ্যে যাব আশ্রিত পাখি অভয় দাও আদি পৃথিবীর শুদ্ধতার বুকে ঘুমিয়ে পড়ি {৪} একটি রুদ্ধ কথার মত ঝড় চলে যাচ্ছে সমুদ্রে দিকচিহ্নহীন {৫} খুব জটিল তো নও সমস্ত বন্ধনী তুলে তুলে দেখেছি সরল অংকের ফল- এক {৬} আষাঢ় সূর্যের মত বেমানান তোমার এই বিষণ্নতা {৭} বেলি সাজি, কারুকাজে নিপুন... তুলছো সৌরভ আঙ্গুলের চুপধারা ভাঁজে ডাক ভোলে মুনিয়া মাতাল ......... শাদা শাড়ি আর এই ভ্যানিলা সকাল {৮} রাত গভীর হচ্ছে বেরিয়ে আসছে অন্ধকারের লেজার প্রিন্ট স্পষ্টতর শঙ্খ গহীন রেখা রেখার ভাঁজে ভাঁজে দূর মানুষের মুখ {৯} মমতার কথা ভাবতে পার বিকেল পাঁচটায় ছেড়ে যাওয়া ট্রেন {১০} এই প্রান্তিক কৃষকের কুটিরের ভাঙ্গা দরজা দিয়ে ঢুকে পড়েছে চিরস্থায়ী আষাঢ় এ যাপন ঋতুচক্রহীন {১১} ঘুম ধরেছে গান শান্ত রাতের নাম {১২} টাই নটে স্থির হয়ে আছে নাচ আঙ্গুলশৈলী {১৩} চোখ পোড়ে, রোদ জুড়ে হাসি -বৃষ্টি প্রত্যাশী {১৪} তোমার স্নান বাজ...