পত্রালিকা - ৪

১}
এরকম নম্র বৃষ্টির রাতে চলে যেও
ডালিমবনে দূ...র
সঙ্গে নিও না কিছু
এই যে এমনকি আমাকেও, যে
বলেছিলাম- বিদায়ের আগে দেখা করে যাব

২}
ধূসর বৃক্ষ যেন, ধরে রয়েছি রূপের বিনাশ
লতার নিটোল ভঙ্গিমায় তবু অলীকের ডাক,
ছুঁয়ে দাও শোভন পলকে
এই জন্মে হয়ে উঠি তবে-
একটা জীবন।

৩}
সিঁদুর রেখার পথ চলে গেছে অন্ধকার চিরে
চিহ্ন পাই,
সেইখানে অন্ধ চিহ্ন পাই
প্রিয় ভুল -
হাত নেড়েছিলে

৪}
কার কাছে এ আত্মদান
কথোপকথনের মিহিজাল,
কার চোখে নীলতারা ভেসে ওঠে
বেজে যায় কবিতার ছায়া আঁকা হৃদিগান
কার কাছে এ আত্মদান !

৫}
তার মুখ দেখলে ভয় হয়
বৃষ্টি ঢেলে দেয়া একটা ভোর
অথবা ধূপের সন্ধ্যায়
যে আমাকে চিনিয়েছিল কান্তির নাম,
হাসির মত ফুল বলেছিল -
এই তো তোমার আলিঙ্গনের মিতা...
জাদুকরের অলৌকিক পায়রার মত সেই মুখ
অবশেষে যা এক বিষণ্ণ রুমাল

৬}
এসো দৃষ্টিস্নানের আগে
এই চোখ স্বপ্নপরায়ণ তবু
যে ভাবনা ঘুমের আগে তন্ময় করে রাখে
তা সুদূরতা, অন্য কিছু নয়
রাত ঘন হয়ে এলে এসো

৭}
অপলক জাদু দৃশ্যের কাছে গিয়েছি কতবার
সুর অনুরক্ত রাত
যাই তুচ্ছ শিসের কাছে বৃক্ষ নির্জনে
করুণার কাছে গিয়েছি একবার আহা বালক হৃদয়
হায়, মৃত্যুর আগে কোন মৃত্যুর আশা নেই !

৮}
আজ চঞ্চলতা ভুলে আয়
বুক চিরে সন্ধ্যা ডানায়
আয় চির ঘুম নিয়ে আয়...
স্থির হয়ে আছি কবে থেকে, শুনেছি
কাজলের দাগ টানা চির চঞ্চলা পাখির ডাক-
পশ্চিম পশ্চিম

৯}
শিশিররেণুর ঘাসে
অথবা ফিরোজা আকাশে
এ পায়ের চলনে রক্তিম পাথরে
অনুসরণ লেগে আছে এক কান্তিমতী তারা,
শ্রাবণময়ী রাতের আলাপ
এক অজ্ঞাত মুখছাপ।

১০}
হলুদের ছোঁয়া থেকে কেতকীর গান
কথা অফুরান মনে পড়া অফুরান
নদী পাখি উড়ে চলে চর বাসনায়
শেষের অন্ধকার ডাকে- আয় আয়

১১}
চলে যাওয়া পথে তার
বৃষ্টির ছাপ লেগে তন্দ্রাচুর নিশিবন,
ঐখানে আমি আর সেই ফুল থাকি।
আমি তো আঁকিয়ে নই
যে আঁকে সে আমার কৃষ্ণবর্ণা সুখ-
অন্ধকারে ভেজা এক
কান্নার মত ফুল এঁকে চলে গেছে।

১২}
সেই যে জীবনের ছুটির পরে
গভীর মাঠের কাছে চলে যেত মুখরতা
সব কথা...
সব কথা চলে যেতো প্রণত চোখের কাছে
কথা দিলে ফেরে না আর ফিরতি কথার চিঠি
যদি জানতো,
যদি মানতো- সব রঙ জমে আছে আঁধার রঙিনে
যদি জানতো, যদি মানতো মন
গভীর মাঠের কাছে অরণ্য মর্মরে বাজে
শুধুই চলাচল...

১৩}
ঐটুকু লাল থাক,
চোখে লেগে থাক।
ভুলের এক প্রজাপতি
দিয়ে গেছে সে পরাগ।

১৪}
আরো একটা দিনকে আমি ভয় পাই
তাই রাত জাগি

১৫}
ময়ূরাক্ষি তুমি দিলে বর্ষাঘন রাত

১৬}
মনে কর পুতুলনাচের দিন
আমি তোমার বুকের কাছে গান,
তখন বোশেখময় অগ্নি ঝরা চোখ থেকেও
হেলায় শিখে নিতে পারতাম বৃষ্টিপাত।
অথচ তুমি বললে আমি এক ছন্নছাড়া বাঁশি
তিনসত্য দিয়ে বললে-
‘খোঁজ...
আপন মনে বাজো’

১৭}
এ আঁধার বাজনা জানে
তারাদের দাহের গানে

১৮}
দু'চোখহরণী, তুমি তো ছড়িয়ে আছো
শিরীষের পাতায় পাতায়
সবুজের কুচি যেন ধূসর মনের মাঝে মন
কীভাবে তাকালে তুমি !
খুলে গেল তৃতীয় নয়ন...

১৯}
কত নাম ধরে ডেকে ডেকে
হয়েছি সর্বনাশ
কতবার বলে বলে
উঠেছে হাহাকার
কতটুকু বলা হয়নি কখনো
বুকের প্রতিবিম্ব ধরে
এমন আয়না কই

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অনুবাদ - Gloomy Sunday (আত্মহত্যার গান)

অনুকবিতা

অনুবাদঃ “আফরি” –“ the most beautiful one!”