পত্রালিকা - ১

১.
শীতের সময় ওড়ে
পাখির ঝর্না থেকে নেমে আসে
গোলাপী কার্ডিগ্যান
ডাকে, ঐখানে ক্যাম্পফায়ার, এসো

২.
মেঘলাচোখের ছেলে সুর বেঁধেছে
ভীষণ গোপন
একলা শোনার গান শুনেছিল যে
সেই তো আপন

৩.
সহস্র রাত্রিবাণে অন্ধ হওয়ার পর
জ্যোৎস্না চোখের সাথে চেয়ে বলেছিল
চেয়ে থাক কেন, আলোর চাতক?

৪.
এই সন্ধ্যায় হিমসরোদের তান
চাপা রাত্রিতে মিশে যাবে
এক গোপনবাসীর কাছে
সেই কান্না লেখা আছে

৫.
পিয়ানোর রিডে আড়ষ্ঠ তোমার আঙুল,
কেন দাও শীতের দোহাই?
সুরের বিরহ বড় লাগে
রাত ফুরোবার এত আগে...

৬.
নদীর কাছে গেলাম
নদী তো আপনহারা
ভাসিয়ে নিলো এই চোখে ঘর করা হরিণ তনিমা
একাশ্রিতের স্পর্ধা,
ছায়ানটের বোল ...
হারিয়ে যাব বলে নদীর দীক্ষার্থী হলাম
গোপন দেরাজ খুলে
উড়িয়ে দিলাম সব পত্রালিকা- চন্দনার পাখায় পাখায়

৭.
একটি স্নানের নাম শাওনচাঁপা

৮.
স্মৃতির বন্ধু তারা, মৃতের ছবির মত নীরবতায় আঙুলে আঙুল রাখে
কত প্রীতি আর অভিমান !

৯.
এই পথ হারাবার
সুধাময় কবিতার
যার কাছে ঠিকানা
হারিয়েছি বারবার

১০.
একটা সন্ধ্যা মন্দিরের দীপে সিঁদুর পরা মেয়ে
তার আঙ্গিনায় আরতির কাছে রেখে এসেছি সকল মুদ্রা
শত পাপড়ির বাঁক
এখন মৌন ধুনের কাছে পড়ে আছে নীল শঙ্খ
পূজারীর মন্ত্র ভোলা ঠোঁট

১১.
বিষাদের ধনরাশি আমাকে অন্ধ করেছে

১২.
নিজের চোখে
আয়না ধর
দেখতে পাবে
অপরূপা
আকাশ চোখে
ঝাঁপ দিয়েছে
একটি পাখি
একা একা
নীল খোঁজেনি
সেই পাখিটা
ইচ্ছে মরন
এমনতর
হারিয়ে গেছি
গাইছে সে যে
তাকেই তুমি
খুঁজে মর

১৩.
মুখেও ফাগুন আছে- দেখ তার দুটি পুষ্পচোখ

১৪.
আমার শূন্যতার ভেতর রয়ে যাবে দুটি তারা
-- আঁখিতারা

১৫.
নৈঃসঙ্গ্যের সমস্ত নীল নিয়ে নেচে যাচ্ছ তুমি কবিতাময়ূর
ঝিরি পাখায় এঁকে যাচ্ছো মিথি'র চোখ
যা তোমাকে দেখলো না কোনোদিন

১৬.
শত মুগ্ধ চোখে ফুটে উঠেছে দেখ আজ এই দীপান্বিতা রাত। দেখ কত চক্রান্তজাল পেরিয়ে আমিও এসেছি নাচ। শত নোয়ানো মাথাকে তুচ্ছ করে উর্ধ্বমুখী আমিই দেখেছি সকল প্রদক্ষিণ... হে বিষণ্না ব্যালেরিনা !

১৭.
জীবনের ছোট্ট অথচ একটি মাত্র চাওয়া ফুরিয়ে যাওয়ার পরে আজ হঠাৎ নৈঃশব্দ্যের কণ্ঠে উঠে আসে রক্তরাগ, আচ্ছন্ন করে ফেলে এই কাজলঘন রাত্রি। মোহ যায়, মুক্তি আসে প্রাণে।

১৮.
মোহন আঁধারে এক ছুটে গেল তির, প্রণয়হরিণ নাম আলেয়ার দিকে


১৯.
দূরশ্রুত, তবু এই নন্দিনী রাত তন্ময়
কৃষ্ণপ্রিয়া পাখিটির বন্দিশ আলোকরা
- এতটা জাজ্বল্যমান!
অন্ধ আমি তার দিকে ছুটে যেতে থাকি
ছুঁয়ে দেই অন্ধকারের গোপন কুঞ্জ
আর কারা যেন বলে ওঠে -
দেখ, দূরে বহুদূরে জেগে উঠেছে কার নয়নতারা

২০.
আমাকে ভোলাতে চেয়েছিল কাল
হাসির পূর্ণিমা
এলাচের বনে ছুটে এসেছিল যত মৌতাত
আমি শেষে যাইনি তার কাছে...
ওগো বিহন, এই সুর দেহাতীত
ওগো চুনরি ভোরের বীণা,
তোমার কাছেই ঋণ

২১.
রূপ বাণ নিক্ষিপ্ত হলো, ভেসে এলো অজস্র গানের কলি আর দিন এলো রাত এলো দোয়েল দোয়েল। তাই তো ধ্যানস্থ ছিলাম, পদ্মরাগের ছটায় অন্ধ ছিলাম।

একটাও কবিতা লিখিনি

২২.
সেই চন্দ্রকথক বলে গেছে কার জন্য পুষ্পমাস অতসীর নীলিম বাগান, কার কাজলপাতায় বিষ বিভোর চোখ, কার নাচঘর- দাদরায় নৃত্যপর ঝাউপাতার মঞ্জির...
সেই চন্দ্রকথক বলে গেছে জীবন্তিকা-
আজন্ম বধির কারো কানে

২৩.
রাত নেমেছে রঙ ঝরা
টিপ পরেছে নীল তারা
বন্ধু হতে তার কাছে প্রেম
কাঁদছে যেন কেউ ছাড়া
রাত নেমেছে শীত ঝরা

২৪.
চলে গেছে গানপাখি
রেখে গেছে ধুন
সুরেই বেঁধেছে রাখি
হৃদে গুনগুন

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অনুবাদ - Gloomy Sunday (আত্মহত্যার গান)

অনুকবিতা

অনুবাদঃ “আফরি” –“ the most beautiful one!”