হারানো চিরকুট
১.
নায়াগ্রা থেকে ফিরে এসেছি অস্নাত
ঐ চোখ স্নানঘরে
নায়াগ্রা থেকে ফিরে এসেছি অস্নাত
ঐ চোখ স্নানঘরে
২.
স্যুভেনির
............
উড়ে আসছে হিমগন্ধী শীত
মন থেকে মনিপুর
মনিপুরী শাল
স্যুভেনির
............
উড়ে আসছে হিমগন্ধী শীত
মন থেকে মনিপুর
মনিপুরী শাল
৩.
পালিয়ে গেছি
মস্তানা হাওয়ায় ভাব,
জ্যোৎস্নাচুর রাত নিয়ে গেছি সাথে
করে। সমাহিত সব কবিতাকে সাথে
নিয়ে তরুমুগ্ধ গয়ালের শরীরে হেলান
দিয়ে দেখছি যাপন সুদূর
অরণ্য পাখিশালা।
জ্যোৎস্নাচুর রাত নিয়ে গেছি সাথে
করে। সমাহিত সব কবিতাকে সাথে
নিয়ে তরুমুগ্ধ গয়ালের শরীরে হেলান
দিয়ে দেখছি যাপন সুদূর
অরণ্য পাখিশালা।
৪.
তোমারে দেখে নাই আর যারা--
জানবে না আলো,
মানবে না গহীন গোপন;
দূর দিশারী আঁখিতারা
ধ্রুবতারা ধ্রুবতারা।
তোমারে দেখে নাই আর যারা--
জানবে না আলো,
মানবে না গহীন গোপন;
দূর দিশারী আঁখিতারা
ধ্রুবতারা ধ্রুবতারা।
৫.
চোখ যেখানে থাকে দৃষ্টি,
থাকে বিস্তার-- নদী, গন্ধরাজ,
লাল রবীন।
থাকে পৃথিবীর সেরা চিত্র শিল্প--
তোমার মুখ।
আর তার মণি হারিয়ে গেলে সবকিছু নিকষ অন্ধকার-
সবাই হারায় শুধু থেকে যায় দীপ্র তোমার মুখ
হৃদয়ের কোমলে খোদাই
চোখ যেখানে থাকে দৃষ্টি,
থাকে বিস্তার-- নদী, গন্ধরাজ,
লাল রবীন।
থাকে পৃথিবীর সেরা চিত্র শিল্প--
তোমার মুখ।
আর তার মণি হারিয়ে গেলে সবকিছু নিকষ অন্ধকার-
সবাই হারায় শুধু থেকে যায় দীপ্র তোমার মুখ
হৃদয়ের কোমলে খোদাই
৬.
আমার আকাশ রং থৈ থৈ
আমার আকাশ রং থৈ থৈ
ইচ্ছে ঘুড়ির নাচের মতই
একটানা লাল কৃষ্ণচূড়া
লাল রেখেছে শরীর ভরা
খেলবি যখন রঙের হোলি
ঝাপসা চোখে কই পালালি
চলে যাওয়া জল হলি তুই
নদীর মত হোস না যতই
সন্ধ্যা স্নানের সঙ্গী হব
স্রোতের মত জড়িয়ে রব
৭.
তোমার ঘুমের মাঝে আমি জেগে থাকি। নূপুর থামলেও যেমনি নাচ।
তোমার অপেক্ষারা লাজুক, ভঙ্গুর। আমার
তৃষ্ণার কাছে এক বিন্দু জলও নয় তারা। আহত হওয়ার পর জেনেছি রূপ সুন্দর- চাঁদ তার
কাছে পুরোনো। আহত হওয়ার পর জেনেছি অকূল নদীর প্রার্থনার সমুদ্র এক ধু ধু বালুচর।
আহত হওয়ার পর জেনেছি মায়া; আর জেনেছি আমার
পতন রোধে আর কেউ নেই। তোমার নিদ্রার পর বৃষ্টি যেমনি শোন তেমনি আমাকে শুনো। দেখ
অনাথ পাখির নেত্রকোণ। কেন যেন মনে হয় আমি একা নই। একদিন আমিও হাওয়ার মত উত্থিত হব।
মায়াডোর সাথে নিয়ে শূন্যতা শরীরে মাখবো--- তখন আর একলাটি নই আমি। কোনো এক নীল
নির্জনে যুগলবন্দী হবে হারানো সুর আর এই যে আমার। এইটুকু জেনো, সুন্দর নিদ্রাকর নয়- জাগ্রতকারী। তুমি শুধু জেনো, তোমার মাঝে সকাল
ছিল তাই জেগেছিলাম আমি...
৮.
তোমাকে ছেড়ে গিয়ে দেখেছি
আমার ক্ষমাহীন অনুরাগ-
করেছি তারার জরিপ
দেখেছি তারায় তারায় আঁকা
জ্বলজ্বলে চক্ষুলিপি তোমার
তোমাকে ছেড়ে গিয়ে দেখেছি
দুঃখরা কত অন্তরঙ্গ
প্রাণপ্রতিম
তোমাকে ছেড়ে গিয়ে দেখেছি
আমার ক্ষমাহীন অনুরাগ-
করেছি তারার জরিপ
দেখেছি তারায় তারায় আঁকা
জ্বলজ্বলে চক্ষুলিপি তোমার
তোমাকে ছেড়ে গিয়ে দেখেছি
দুঃখরা কত অন্তরঙ্গ
প্রাণপ্রতিম
৯.
অতিমুগ্ধ দূরারোগ্য প্রেম
আমাকে ঘুম পাড়াবে
আর ফিরতে দেবে না
এমন মনে হয়
মনে হয়
আলোর কণা হয়ে ঝরে যাই
শুধু ঝরে যাই
এতটুকু অন্ধকারেও তোমার
১০.
বলেছি রক্তপলাশ ছুঁয়ে
আকাশের সাত তারা ছুঁয়ে
ছুঁয়ে
আমি চলে যাব
অনন্তের দিকে
তোমাকে সঙ্গে নিয়ে
আমার মণিতে
এই হীরক দীপালির
রাতে
১১.
একটি সন্ধ্যার কাছে মুগ্ধতা চেয়ে হন্যে হয়েছি
সে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে অশোকের বন
আমি তার বুকে বৃষ্টি হয়ে ঝরি
শুধু ঝরে পড়ি
সবুজের অতল থেকে ডাক আসে,-
আরো ঝর রিমঝিম
আরো আরো...
একটি সন্ধ্যার কাছে মুগ্ধতা চেয়ে হন্যে হয়েছি
সে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে অশোকের বন
আমি তার বুকে বৃষ্টি হয়ে ঝরি
শুধু ঝরে পড়ি
সবুজের অতল থেকে ডাক আসে,-
আরো ঝর রিমঝিম
আরো আরো...
১২.
এখন পাখির মত ঘুমিয়ে গেছে সে
এখন পাখির মত ঘুমিয়ে গেছে সে
ব্যথা নিয়ে,
কথা নিয়ে...
আমি তার ঘুমন্ত চোখের
পাতায় পড়েছি
অবাক রূপকথা
যা সে বলে নাই কোনোদিন
বলবে না আর...
১৩.
সবুজ বুনে দিয়েছিলো
সবুজ বুনে দিয়েছিলো
তোমার অক্ষর
হাসি,
ওগো বৃষ্টিকান্তা
মেয়ে-
তোমার চিবুকের
ছায়ায় থাক্
আমার অক্ষর বিন্যাস
অনুক্ত কথা
বিমূর্ত বেদনার ছাই।
ধ্রুবতারাকে বলি নাই
পথ কোথায়-
কোথায় তীর্থ বল তারা?
তোমার ইশারার আশ্রয়ে
পালিত আমি
আর ঘর খুঁজি নাই
ওগো বৃষ্টিকান্তা
মেয়ে-
ঐ স্নাত মুখ
ঘুমের মত আমার--
যাপনের মত,
আমৃত্যু
নিবিড় আশ্রয়
১৪.
বিহনের সাথে কথা কই অবিশ্রাম
বিহনের সাথে কথা কই অবিশ্রাম
চলে যাওয়া কবিতার মত
মূর্ত হোল না যা
ভোর হোল না যা...
নীরবতা হয়ে ওঠে
দোলনচাঁপা
কথারা হয়ে যায় বেলি আর
বেলি
চোখের আলোতে বাজে
চোখের সানাই
তোমার সাথে কথা নাই কত
না বছর
দেখা নাই,,,
১৫.
সে দাঁড়ায়
সে দাঁড়ায়
ধূপগন্ধী বাতাসে
প্রতিমার গীতিরূপ।
স্বপ্নে পাওয়া তার
চোখের কুঁড়ি,
ভোর লাগা মুখ নিয়ে
সে আমার আপন জমিনে
বিচ্ছুরিত নীল আকাশে
আকাশে উড়ে যায়...
আমি এক আশ্রয়বর্জিত
শিমুল
চারু সাজের হাওয়ায় উড়ে
যাই
বিহ্বল...
তার শঙ্খশাদা শাড়ি
আর রৌদ্র আঁচলে
মিশে থাকে শুভযোগ,
ধূপগন্ধী বাতাসে
বাতাসে
সে দাঁড়ায়
পরমা প্রতিমা এক
সমস্ত ছায়াবোধ নিয়ে।
শেষ হয়ে আসে ময়ূর নাচের দিন,
অজস্র গানের বর্ষা--
আর আমাদের স্বপ্ন ঝরা
কথা
বৃষ্টি টুপুর হয়ে
কবিতা...
চুপ বসে থাকে বুকের
গহন
জীবনের আর সব দিনে
প্রহরে প্রহরে
পাঠের আয়োজন শুরু হোল
এই করুণ সন্ধ্যায় শুরু
হোল রাত্রি আমন্ত্রণ
শুরু হোল আবৃত্তির চিরনিশিকাল
১৭.
মন তুই রাতের চাদর হয়ে আদরের মত মিশে যাস
মন তুই রাতের চাদর হয়ে আদরের মত মিশে যাস
কোনোদিন কেউ যদি অমন
করে ডাকে,
যদি জোয়ার টানে প্রাণ
খুলে নদীতে ঝাপাস--
মন তুই জানাবি যখন
মনের সন্ন্যাস
সব ভুলে নিজেকে জানাস
১৮.
রাত নেমে আসে তার মত
রাত নেমে আসে তার মত
তারই মত সুপ্তিদায়ী
মগ্নমুখর।
সুগন্ধী লতার মত জড়িয়ে
জড়িয়ে
মৌন মোমের মত জ্বলে জ্বলে
কে আসে সুঘ্রাণ আর আলো
নিয়ে
আমার নিবিড়ে?
কপালে রক্তবাহারী টিপ
ভোরময় চোখ তার
জ্যোতির শব্দমালা
ঠোঁটে
কবিতা বিছিয়ে দিয়ে
যায়...
নিয়ে যায় দূর দূর
গন্ধরাজের বন।
কৃষ্ণশূন্য স্তব্ধতায়
প্রতিরোধহীন
আমি ঐ অনন্তরূপার পথ
ধরি
জানি একবার সৌন্দর্যের
কাছে
দৃষ্টিপাত করলে
মৃত্যুর কাছে উৎসর্গিত হতে হয়
মৃত্যু পরম নেশা, আদি চেতনার ফুল-
সে এক আধো নীল ভায়োলিন
যার সুর খুলে দেয়
কৃষ্ণ দিগন্ত
স্মৃতিনাশী তার
পারাপার
ঢলে পড়ি
বিবশ, মায়াচ্ছন্ন
মনের ‘মন’-এর মাঝে...
সে এখন কী কথা কয় ফেরারী আলোর সাথে
যার শ্রাবণ হৃদয়
রূপরাশি মেলে দেয়
হেলায় হেলায়
নাছোড় ছায়াপাখি
সে এখন কার দিকে চায়
এই বর্ষা পাওয়া-কান্না
পাওয়া চোখে
ফুটে আছে বুনোফুল এক
রাত্রিরূপা
২০.
আমি শুধু তার সাথে চোখ
মিলিয়ে খুন
যে আমার প্রার্থনা হয়ে
গেছে সে এক নীল মাছরাঙা
কাজল রেখার মত বাঁক
নিয়ে বহুদূরে...
মুছে গেছে স্বপ্নে পাওয়া
নাম
এই পুষ্পপুরী আমার নয়
সাদর অপেক্ষা আমার নয়
ঐ চক্ষুর গীতিরূপ আমার
নয়
শুধু এই রাত্রিপ্রিয়া
আমার
যতসব স্মৃতিলেখা আমার
স্বপ্নতম মায়ার কাছ থেকে দূরে
আমি এক বিস্মৃত সন্ধ্যাকাল
স্বপ্নতম মায়ার কাছ থেকে দূরে
আমি এক বিস্মৃত সন্ধ্যাকাল
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন