পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০১১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অনুবাদঃ পাবলো নেরুদা'র A Song of Despair

রাতের আঁধার থেকে স্মৃতির কুহকে ভেসে যাই নদীর আর্তনাদ মিশে গেছে সমুদ্রের বুকে ভোরের একলা তৃণের মত আমি আর কেউ নেই কিছু নেই মৃত পুষ্পের বরষায় ধ্বংস কূপের গভীরে গভীরে ঢুকে যাই ধ্বংস আর উড্ডয়নে মিশে আছ তুমি তোমার বুকের কিনার থেকে উড়ে উড়ে চলে গেছে গানপাখি দল এই অন্তরালের মত ডুবিয়ে দিয়েছ সব সমুদ্র অথবা সময়ের মত সবকিছু ডুবে গেছে তোমার গভীরে সে এক অন্য প্রহর ছিল রক্তের, চুম্বনের জাদুর প্রহরে যেন জ্বলে ওঠা বাতিঘর তোমাতেই ডুবে গেছে উচ্ছন্নের প্রেম, নাবিকের ভয় শিশিরের শৈশবে আমার আত্মার জাগরণ, তার আলীন উড়াল আহত পাখা – সবকিছু নিমগ্ন করেছ তুমি কষ্ট জড়িয়ে ধরে ইচ্ছে ছুঁয়েছ তুমি বিষণ্নতায় নির্বাক তোমার সুকরুণ বুকে ডুবে গেছে সব যত কামনা আর পৃথিবীর কাজ পিছু ফেলে বানিয়েছি ছায়ার দেয়াল - চলে যাই হায় আমার শরীর, হায় হারানো কিশোরী! শুনে নাও বৃষ্টিপ্রহরের সব গান কাঁচের বয়ামে তুমি অসীম মমতা রেখেছিলে আর অবাক বিস্মরণে চৌচির হয়ে গেছ তুমি সেই মমতার কাঁচ সুদূর দ্বীপের কোন আঁধার নির্জনতায় ডেকে নিয়েছিলে তৃষ্ণা ক্ষুধায় ছিলে ধ্বংসে ব্যথায় ছিলে, তুমি বিস্ময়। কী করে ধারণ করেছিলে বল আত্মার নিগড়ে, আলিঙ্গনে! কতটা অঘোর অথবা ক্ষ...

তার ঘুমহীন চোখে

একদিন পৃথিবীর সমস্ত বেলী ফেব্রুয়ারীর আলোয় ডুবে গিয়েছিল তার মুখে সে দঁড়িয়েছিল শত অশ্বারোহীর হিপোড্রোমের শেষ। তার আঙ্গুলে জড়ানো মোমসিল্ক ছুঁয়ে দিতে শত মাতাল জকির সন্তাপ তাদের ঘুমহীন চোখে নীল কালিতে লেখা রাতভর বৃষ্টির মত দীর্ঘ কবিতা পুষ্পনীল ডোর রেখে চলে গ্যাছে অতশীর দেশ...... ইদানিং তার ঘুমহীন চোখে এরকম লেগে থাকে পদ্যাভ্যাসের প্যারাডিম !

বন্ধুর মুখ

কুয়াশার আলো সুদীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থাকে পাহাড়ের দেশ, আমি সেই শীত। দিনরাত নিমন্ত্রণ উন্মুখ প্রতারণার রোদকে ফিরিয়ে দিয়ে পড়ে রই, স্থির দেখি, সুতীব্র উড়ে যায় আলোর হাউই চোখে কার সাতরঙ কার্নিভ্যাল? কার চোখে যুগ যুগ আড়াআড়ি পড়ে থাকে চোখপাতা কাঁটা? সেইখানে পড়ে থাকে পথভোলা পান্ডার চোখের মত কালো তার শরীর থেকে ঝরে পড়া আদর দেখে সমতল ভুলো না যেন; জেনো তুমি সব নিয়ে আছো মৈত্রীবদ্ধ রাত্রিপ্রতিম মুখ প্রাচীন প্রস্তরে লেখা থাকে সময়ের পীড়া, আমি ও আমরা; মন ঘোরানো মতি অথবা একটা ভ্রূক্ষেপ জমাট হাড়ের কাছে ফিরে আসে নাই - ... এ সময়ে একটা ইন্দ্রপ্রস্থ আমার হোক সেখানে থাকবে সাত অক্ষৌহিণী বন্ধু আর প্রীতি যুবক জিপসিরা সব শুয়ে থাকবে মাতাল সুন্দরবনে তারা দেখবে জঙ্গলের আদিম বাহার সদ্য বোনা কাশ্মীরী পশমী শালের মত রঙ-ঘ্রাণ-ও্মে তুমিও থাকবে সব ভুল জেগে রবে – সব শুদ্ধ। এই শিশুর হাসির মত মৌসুমে, ভোর হয় ভোর হয় এমন সময় নদীর বাতাসে দূর আযানের সুরে নুয়ে পড়ে রাত্রির লোভ সব গান হামিং ঠোঁটের মত চুপ শুধু সুর আনে অলিভ খুশির নদী তার বুকে মীনা-করা চুপচাপ মেঘ জেগে ওঠে মঠবাড়িয়ার মঠের মত উর্ধে তাকিয়ে থাকা নম্রতার সাহস ...বন্ধুর মুখ আহ, সবাই...

খনন

খননের স্বেদে তবু আনন্দ দুলছে ঝিলমিল বুকের পাঁজরে তবু রৌদ্রের সঞ্চয় সুবর্ণ রুমাল, পুষ্পঘ্রাণ --- যদিওবা ওরা সব চলে যাচ্ছে পথভোলা জাগ্রত চোখে পৃথিবী জানে না একটা দমকা বাতাস এখনো মুক্তির বদলে পাঁজর কবরে রয়ে গেছে নক্ষত্রহীন আকাশে আরো দীর্ঘতর অসীমার চোখ; না-লেখা এক কবিতার সমস্ত মুখে একশত একটি বাগানের গন্ধরাজ রাতের আলোতে ডুবে গেছে সেইখানে জেগে আছে তীব্র ঘূর্ণির তুরপুন, যাবতীয় প্রত্ন খোঁজ শেষে বিদ্ধ নিসর্গ বুকে ধরে অতলে নিমজ্জিত আজন্ম আবৃত্তির কোলে ঘুমিয়ে পড়েছে পৃথিবীর লিথোস্ফিয়ার সমস্ত মৌন শিশির আঙ্গুলে জড়িয়ে কবিতায় উঠে আসছে ঢেউবিস্মরণ শৌখিন জাদুগরের হাত থেকে মিলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক সুবর্ণ রুমাল, পুষ্পঘ্রাণ...

আমিও শুনেছি, রাপুঞ্জেল

আমরা দেখেছিলাম মুক্তি, জেনেছিলাম প্রীতি মানে স্পন্দিত সুখ নাহয় করেই ছিলাম সূর্যমুখীর চাষ; সপ্তঘোড়ার কেশরের স্পর্ধা নিয়ে সূর্যে তাকিয়ে ছিলাম স্থির, শুয়ে পড়ে হরিৎ মাটিতে ঘাসের বেড়ে ওঠা শুনেছি, রাপুঞ্জেল ! প্রকৃতিও দিয়েছিলো মিথিলার মায়া - অশ্রু উপশম রাতপ্রহরে একে অন্যকে অতিক্রম করার মুহূর্তটির পর নৌকোরা ভুলে যায় কার চোখ তারায় তারায় আলোনীল জোনাক এস্রাজ থেকে আঙ্গুল সরে গেলে বোঝা যায়, সুর তুমি প্রিয় জানা যায় কোনো কোনো কবি কেন আঁধারদ্রষ্টা তারা বোঝে বৃক্ষমাতার প্রেম - সমূদয় আপেলের দ্যুতিমান হয়ে ওঠা পুর্ব বাতাসে কেন বিষপলাশের খুন, নীলপাখি গান ---- চারিদিকে কেন এত অন্তরগ্রাহ্যতা !

উন্মোচন

রাত্রিবালিকা প্রতীক্ষারত আলো রয়ে গেছে এখনো তাই লুকিয়ে ফেলো না যেন রঙ-তুলি হাত সন্তুর সুরে এখনো সূর্যশ্রবণ আলেয়ারহস্য বুঝে যাই এবেলা - লুকিয়ে ফেলো না তাই অংকনপট চিনে নেবার সুবর্ণ চিহ্ন রোদ যত ভুল পরাগসংকেত জমে থাকে সেমেটারির বিষাদী ঘাসফুলে তার চেয়ে শুদ্ধ ছিলো জেনো কুমকুম অষ্টমী রাত কাঁচরঙ দীপ জ্বেলে অন্ধের নীরাজন আর সব উপাসনাকথা সকল আনন্ত্যবোধ নিয়ে তাই তুমি এঁকে ফেল এই গোধূলি পুরান বহুরৈখিক দিনকথা আমাদের সব নাজানা ভাষার প্রণতিরা মিলিয়ে যাক দেবনাগরী উৎসঅক্ষরে… সন্ধ্যাসরোদে আর শিশিরের জলতরঙ্গে রাতবালিকা এসো এইবার, ঐকতানবাদ্যে তার আঁকা চিত্রপটের ওপরে রাখা রক্তসিল্ক পর্দাটা উঠে যাক তোমার নির্জন হাতে ধীরে…………