পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০১০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আমি কোন শব্দকর নই

সে-ই দিয়ে গেছে ক্বচিৎ স্খলন নাক্ষত্র মুখ যার--- যে দিয়েছিল চকিত চাহনির মত উপহার নেচে যাওয়া দাদরায় বৈশাখী ঢাক যে এনেছিল ঝড়ো বৈশাখ তাকেই বলতে পারি তাপদগ্ধ দুপুরশাড়ির হলুদ শরীর সিক্ত কর বৃষ্টিচুম্বনে ঝরে পড়, ঝরে পড়...... কী এক দিব্যপ্রেরণায় নিশীথা উড়িয়েছিল শঙ্খচিল আকাশ সুরেখায় তীব্র তীরের মত বিঁধে আছো ঈগল উল্কি সহ্যাতীত মখমল প্রেইরীর তারুণ্যে শ্যামচোখ দ্রাবিড় নারীর যত জীবনপ্রতিম ব্যাথা আর আমাদের দ্বৈতকথার বিস্তার তন্নতন্ন করে লুণ্ঠন করে গ্যাছে আমাদেরই আজন্ম অঞ্জলিদান নাহ! আমি কোন শব্দকর নই আমি এখনো সেই মহিমমুখর কুমার আমার আঙ্গিনায় আঁজলা ভরা কুয়াশা নিয়ে কেউ আসে নাই আর আমার কুলালচক্রে জলমৃত্তিকার ঘূর্ণনে আর কোনো গল্পগাঁথা আঁকা ফিঙ্গে পাখির অবয়ব ফোটে নাই নিয়ন নীল নগরের বুকে আমার এখনও বৃক্ষমন আমার চক্ষুময় ইক্ষুর মিষ্টি মদ আঙ্গিনার পুষ্প জাফরিতে ফরাসী ঘ্রাণ মণিপুরি চাদরের মত বর্ণময় দিন বোনে যে যারে আমি দান করি আলোর প্রহর কৃষ্ণতরুণ মেঘ; যার চোখের শার্সিতে হিরাশিশির শ্যাম চোখ মায়ায় যার বাবুমনি ভোর--- শুধু তারই জন্যে এই কুশতৃণ হাতে হিরণমন্দিরমুখী প্রার্থনা - পলাশ স্পর্ধার মত রক্তময় সুক্ষণে ওংকারে...

ক্ষরণ বৃক্ষপাতায় আঁকি

সড়কচিহ্নে যত মৃতমুখ আলপনা করা আছে সমস্ত ক্রন্দন বৃক্ষপাতায় আঁকা বিনিদ্র বৃক্ষের শেকড়ের অক্ষরে মৃত্তিকার ধারন ইতিহাস লেখা আছে, তাই - ফুলের ফুলকি জ্বালিয়ে আর আমাকে ডেকো না সুরের জলসায় বেসুরো যত সুর আর গ্রথিত নোটেশন উপেক্ষা করে লাভা ক্ষোদিত প্রান্তর ঘুরে ফিরে আমি চিনে গেছি গুহাচিত্র যত ফুরফুরে মেঘ উড়ে গেলে আকাশ এসথেটিকস –এ শরতের পাঠ জমে যায় অলীক অনুভবের মত ব্যাখ্যাহীন রশ্মিময় নক্ষত্র দেখে দেখে ঢেউছন্দা সাগরের নীল লোভ ফুঁসে ওঠে আর এই বাধক বর্তমান ধুনি সন্ন্যাসীর মত জ্বালিয়ে রাখে চিতার আগুন বিভঙ্গ মুছে ফেল যমুনা আমার বিনিদ্র বৃক্ষের মত আলোময় প্রভাত প্রতীক্ষা মুছে ফেল লণ্ঠনের আলোর মত মায়াময় রাত্রি জ্বলে উঠলে নম্রনেত্র তুলে ধর, দেখ আমার সমস্ত শরীরময় জালকাঠির প্রতারণা সেইখানে তোমার নামের বিদ্যুত অক্ষর নিমজ্জিত - আপনহারা শিশির আপ্লুত ঘাসের মত আঁজল ভরা সবুজ মাখা মুখ কতোটা জাজ্বল্যমান--- আমার যাচিত যাপন আলোকসংকেত ভোলে নাই তবু কেন ডাক, দংশক ইথারে ইথারে? চিকন ভোরের মত আলো দান কোরো না আর এখন অন্ধকার দ্রাক্ষাবনের সুঘ্রাণ আহ্বান আমাদের যুগল স্নান প্রান্তরময় মিশে মিশে গ্যাছে কবে... এই জন্মেরও আগে হারিয়...

সৃষ্টি

বিদ্রূপে সাজানো সব কৃষ্ণমৃত্যু সাঙ্গ হলে জীবনের ক্যানভাসে ঢেউ; সময় বহন করি, করতলে ডালিমের ফুল জীবন যাপন করি, প্রহরিণী খুলে ফেলে অম্বর প্রাসাদ- মরন যাপন করি, শ্রুতিতে আদিম সময়সুর আঁধার মূর্ছে পরে দিপালী দিপালী শ্রাবন পীড়ন থেকে যুগ্মধারায় জাগে অবাক শিশুর চোখ, পড়শি বেদনার মত সনাতন অন্ধকার বুনে বুনে দ্যুতিমান হয়ে ওঠে নিবিড় আঁধার রাত্রি আকাশ জাগে বিজলি বিজলি শ্রাবণ দিনের প্রয়াণ সাঙ্গ হলে অর্চিত দূর্বাঘাস, শেফালী শরীর মারিয়ে শরু হয় মৃগয়া উৎসব। সূর্যশিশির দেখে দেখে হরিণের হিরে চোখ নাচে, নাচে বৃষ্টিবৃক্ষ প্যারাডাইস বার্ড নীলাভ ফড়িং, শ্বেত প্রজাপতি --- নদীরেখা আঁকে জল রূপালি রূপালি তৃষ্ণার ওষ্ঠজ্বালা শান্ত শীতল হলে মহীশুর চন্দন মেখে জেগে ওঠে মুক্তার মত ভোর। যাপনের বিষ নীলকণ্ঠ বেয়ে বেয়ে পরিস্রুত হয় উৎস বীজ বোনা গান শিবরঞ্জনী সুরে সুরে খুলে দেয় জীবনের উদ্বেল আলোপ্রার্থনা ভোরের আকাশ কত সোনালী সোনালী !

মধ্য রাতের ট্রেন

জোনাকগহন পথে ধূপ ধোয়া বাতাসের দিকরেখা ধরে ধরে হেঁটে গেছি; অরণ্যানী আকাশে কি পাতালে মনে নাই মধ্যরাত্রির প্রজ্বলিত তারার হীরকদীপালী দেখে দেখে ধ্বংস ব্যাবিলন হাতের বাঁ দিকে ফেলে ক্ষীপ্র গতিতে পদ্য-সুরা-পুণ্যের জাফরান, দেহ আর আত্মায় পিষে ফেলি - পৃথিবীর ডাক ভুলে যাই সময়ের গ্লেসিয়ারে ঠিকরে ওঠে চোখের আগুন লুমিনাস অরণ্য মায়া... তারপরে ছাই কবরের গাছ থেকে ঘুঘুডাক তীব্রতর হয় খোলা জানালার পর্দায় উড়ে বসে সাগরের নুন অপরিচিতের কোলে শঙ্কিত শিশুর মত কুঁকড়ে যাই আমি পেলিক্যান পাখির সন্তান রাত ভ্রমণের সন্তাপ বুঝি নাই--- রাত একটা কুড়ির ট্রেন থেকে এখনও তীব্র ভেসে আসে পদ্য-সুরা-পুণ্যের হুইস্যাল ! করাত তীক্ষ্ণ সব আড়াআড়ি ছায়া আমি চিনি সব পরিহাসপ্রবণ ষ্ট্রিটল্যাম্প - সার সার রূপান্তরিত ক্রুশ পেরিয়ে ছাড়িয়ে সময়কে খণ্ডবিখণ্ড করে এই বুক চিড়ে ছুটে চলে মধ্য রাতের ট্রেন......

এই আকাশেই হারিয়ে যাবে

অনুতাপের অনুরাগে যুবক শ্রমণ অরণ্যে তার গেরুয়া বসন উড়িয়ে দিল, হায় মায়ামুখ! মুক্তমায়ায় এই আকাশেই হারিয়ে যাবে তোর আকাশের সবটুকু সুখ। অধীর ঘরে ফিরছে যে কার দেখতে চাওয়া বিনতা চোখ; তিতির নাচের বিকেল বেলা, পাতাল প্লাবন বিমূর্ত শোক। এই আকাশেই হারিয়ে যাবে তোর আকাশের চিল ধূসরের তিলার্ধ সুখ - সোনাশস্য পুষ্পনোলক, সুখত্যাগী সব আষাঢ় অসুখ। এই পদ্যের খলনুড়িতে মিশিয়ে দিলাম সূর্যপ্রয়াণ - পানসি বেয়ে চলে যাওয়া দ্বীপবাসী চোখ এই বাতাসেই ঘোর কাটে না এলোমেলো দীপশিখা তোর অন্ধকারের জ্যোৎস্না অসুখ সঙ্গপ্রিয় রাত্রিবেলা আয়না দিঘীর সাততারা মুখ। নামমুদ্রার নাম দেখে নিস, অঙ্গুরীয়ের স্ফটিক হিরেয় তোর দুটি চোখ মেলে ধরিস। নিরভ্র নীল শাড়ির বুটিক আঁচল পাখায় উড়িয়ে দিলে, উড়েই যাবে ধ্রুপদ দোয়েল ভগ্নপয়ার প্রাক্-জীবনের অন্ত দেখেই পুড়বে পাখি জ্বলবে সে বুক এই আকাশেই হারিয়ে যাবে তোর আকাশের চিল ধূসরের তিলার্ধ সুখ।